ঢাকা শুক্রবার, জানুয়ারী ৩১, ২০২৫

স্থানীয় নির্বাচনে থাকছে না এমপিদের খবরদারি


বর্তমান কথা ডেস্ক
৮:৪৮ - বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ৩০, ২০২৫
স্থানীয় নির্বাচনে থাকছে না এমপিদের খবরদারি

বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের (এমপি) ভূমিকা নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। দলীয় প্রতীকের কারণে এমপিদের প্রভাব বিস্তার বেড়েছে, যা স্থানীয় রাজনীতিতে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এমপিরা মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এমপিদের খবরদারি নিয়ে অভিযোগ

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাংসদদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততার ফলে দলীয় প্রার্থীরা অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর বাড়তি চাপ প্রয়োগ করছেন। এতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন স্বচ্ছ ও প্রতিযোগিতামূলক হওয়ার পরিবর্তে এমপিদের নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়ছে। এর ফলে তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা, কিন্তু এমপিদের অতি-সংযুক্তির কারণে এটি কেন্দ্রীয় রাজনীতির ছায়ায় ঢাকা পড়ছে।”

আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত ও অভ্যন্তরীণ সংকট
এমপিদের ভূমিকা নির্ধারণে আওয়ামী লীগ একাধিকবার বিশেষ বৈঠক করেছে। বর্ধিত সভায় দলীয় প্রধান স্পষ্ট করেছেন যে, সাংসদদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখা উচিত। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক এমপি দলের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে সক্রিয়ভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং বিদ্রোহী প্রার্থীদের চাপে রাখছেন।

দলীয় এক নেতা জানান, “কিছু জায়গায় এমপিরা সরাসরি প্রভাব বিস্তার করছেন, যা অনেক ক্ষেত্রে দলের ভেতরে বিভাজন তৈরি করছে।”

 নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে দলীয় প্রভাবমুক্ত করতে নীতিগত সংস্কারের কথা ভাবছে। তবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞদের মতে, “নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হলে এমপিদের খবরদারি কমিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।”

স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেশের গণতন্ত্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে এমপিদের অতিরিক্ত খবরদারি এই নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। স্থানীয় সরকারের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

ড. মজুমদার জানিয়েছেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের কাজ শেষ করতে চায় এবং এই সময়ের মধ্যে তারা বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব গ্রহণ করবেন।

ড. মজুমদার আরও জানান, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরাও নির্বাচন নির্দলীয় করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। তাদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, স্থানীয় নির্বাচন শেষ করে জাতীয় নির্বাচন করা উচিত এবং অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। তারা স্থানীয় সরকারকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন এবং সব নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে করার আহ্বান জানিয়েছেন।