নিজস্ব প্রতিবেদক
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশে ফের বর্তমান সরকার জয়লাভ করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি ভু ভান থুওং। একইসঙ্গে বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ। এ সময় এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি।
হ্যানয়ের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে স্বাগত জানিয়ে দেশটিতে দীর্ঘ ছয় বছর সফলভাবে কূটনৈতিক মিশন শেষ করার জন্য অভিনন্দন জানান এবং তার কাজ এবং অবদানক স্মরণ করেন। রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশংসা করেন।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রদূত নাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ অভিবাদন জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত রাষ্ট্রপতিকে অভিবাদন জানিয়ে বলেন, রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এ প্রথমবার সাক্ষাৎ করে সম্মানিতবোধ করছেন। রাষ্ট্রদূত ভিয়েতনামের আর্থ-সামাজিক ও অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে উন্নয়নে অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন।
রাষ্ট্রদূত ভিয়েতনামকে আসিয়ানের সদস্য হিসেবে এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশটির নেতৃত্ব স্থানীয় এবং অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ভূমিকার প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফরগুলো সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এবং রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও অর্থনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ, পর্যটন, বিশেষ করে যেহেতু বাংলাদেশে অনেক বৌদ্ধ নিদর্শন রয়েছে। সেহেতু বৌদ্ধ পর্যটন প্রভৃতি খাতে উন্নয়ন হবে।
ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অল্প কয়েকটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি দেশ যে, ভিয়েতনামকে প্রথম দিকে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। যা সে সময়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ভিয়েতনাম মূল্যায়ন করে।
রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের ঐতিহাসিক এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অনেক মিল রয়েছে। উভয় দেশ মানবসম্পদে সমৃদ্ধ এবং এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে পারে।
গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের সর্বক্ষেত্রে বিশেষ করে, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অসাধারণ অর্জন ও অগ্রগতির বিশেষ প্রশংসা করেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শক্তিশালী হয়েছে। বিগত ১০ বছরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রদূতের সফল ছয় বছরের কর্মকালে এ পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। এখন উভয় দেশ এ বাণিজ্যের পরিমাণ দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রায় কাজ করে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে আনন্দিত এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার জন্য প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ভিয়েতনামের মহান নেতা প্রেসিডেন্ট হো চি মিনকে স্মরণ করে বলেন, উভয় নেতাই দেশ ও জাতির জন্য তাদের সারাজীবন উৎসর্গ করেছেন। জাতি গঠন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ভিয়েতনামের সাফল্য ও অর্জনকে বাংলাদেশ একটি সাফল্যজনক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, কেবল তার কাজেই নয়, হৃদয়ে ভিয়েতনামের প্রতি উষ্ণ ধারণা বহন করবেন এবং তিনি যেখানেই কাজ করবেন সেখানেই বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম সম্পর্কন্নোয়নে সচেষ্ট থাকবেন।