• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৮ পূর্বাহ্ন

খালেদা জিয়া আমাদের আঘাত দিতে মিথ্যা জন্মদিন পালন করতেন

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : বুধবার, ৯ আগস্ট, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‌১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন না, তারপরও জন্মদিন হিসাবে কেককেটে আনন্দ উল্লাস করতো। যেদিন আমাদের চোখের পানি পড়ে, মিথ্যা জন্মদিন বানিয়ে সেদিন সে উৎসব করতো। শুধুমাত্র আমাদেরকে আঘাত দেওয়ার জন্য এটা করতো।

বুধবার (৯ আগস্ট) সকালে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।

তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট আমি এবং আমার ছোট বোন রেহানা বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে গিয়েছিলাম। ছয় বছর দেশে আসতে পারিনি। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়েছিল। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে ঘোষণা দেয়। বাংলাদেশের আরেক মীরজাফর খুনি মোস্তাককে দিয়েই জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদেরকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি এরশাদও জিয়ার পথ ধরে ক্ষমতা দখল করেছিল।’

সরকারপ্রধান বলেন, যারা ঘর পেয়েছেন তারা ঘরের আশেপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবেন। ঘরগুলোকে যত্ন করতে হবে। এখন ডেঙ্গু দেখা গেছে, কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। মশার প্রজনন কেন্দ্র যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। বিদ্যুৎ ব্যবহারে আপনারা সাশ্রয়ী হবেন। জাতির পিতা এদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। দেশের একটি মানুষও অবহেলিত থাকবে না। সেটাই তার আকাঙ্ক্ষা ছিল। আমরা সেই আকাঙ্ক্ষাই পূরণ করছি।

আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের জন্য কাজ করে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের একটা বিরোধীদল আছে, মানুষ খুন করা, অগ্নিসন্ত্রাস করা, বাসে আগুন দেওয়া, রেলে আগুন দেওয়া, পুলিশকে মারা, মানুষকে হত্যা করা, এ ধরনের কাজই তারা করে যায়। ‘৭৫ এ জাতির পিতা হত্যা করার পর বাংলাদেশের জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রতি রাতে কারফিউ থাকতো, মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না। কোনো কিছু বললেই ধরে নিয়ে গুম করা হতো। লাশও গুম করতো। সেই গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সমমনা দল নিয়ে আমরা দিনের পর দিন আন্দোলন করেছি। মানুষ আজ ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেয়েছে। আওয়ামী লীগে জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত করেছে।

দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক অধিকারকে বিশ্বাস করে। মানুষের ভোটের অধিকার মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দেশে একটা স্থিতিশীল অবস্থা রয়েছে। শত বাধা অতিক্রম করে, একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ, সবগুলো মোকাবিলা করে জনগণের আর্থসমাজিক উন্নয়নের দিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। দারিদ্র্যের হার অর্ধেকের বেশি নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র ২৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। ইনশাল্লাহ এই দেশে আর হতদরিদ্র থাকবে না। আমি শুধু এইটুকু বলব, একটানা সরকারে আছি বলেই আজকে ভূমিহীন মানুষের ঘর করে দেওয়া থেকে শুরু করে, শিক্ষার দীক্ষা, শতভাগ বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, স্কুল-কলেজের উন্নয়ন করে দিচ্ছি।

নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নৌকায় ভোট দিয়েছেন বলে আজকে ভূমিহীন মানুষেরা ঘর পেলেন, জমি পেলেন। শিল্প-কলকারখানা করার জন্য আমরা ১০০টি অঞ্চল করে দিয়েছি, সেখানে মানুষ বিনিয়োগ করবে, অনেক মানুষের চাকরির ব্যবস্থা হবে।

আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এদিন ভূমিহীন ও গৃহহীন আরও ২২ হাজার ১০১টি পরিবারের মধ্যে ভূমিসহ সেমিপাকা ঘর হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আরও ১২টি জেলা গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত হলো।

আরও ২২ হাজার ঘর হস্তান্তর করলেন প্রধানমন্ত্রী : আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন আরও ২২ হাজার ১০১টি পরিবারের মধ্যে ভূমিসহ সেমিপাকা ঘর হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আরও ১২টি জেলা গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত হলাে। এ নিয়ে গৃহ ও ভূমিহীনমুক্ত জেলার সংখ্যা ২১টি।

বুধবার (৯ আগস্ট) সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মধ্যে ভূমিসহ সেমিপাকা ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।

খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারাসত সোনার বাংলা পল্লি আশ্রয়ণ প্রকল্প, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমানউল্লাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে আরও ২২ হাজার ১০১ পরিবারের হাতে জমির দলিল তুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ১২টি জেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ধারাবাহিক কার্যক্রমে মুজিববর্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১ পরিবার পেয়েছে ঘর। বুধবার আরও ২২ হাজার ১০১ পরিবারের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমির দলিল তুলে দেন।

প্রকল্পের তথ্য মতে জানা গেছে, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপের আওতায় এটি দ্বিতীয় পর্যায় এবং ২০২৩ সালের ২২ মার্চ দ্বিতীয় ধাপের অধীনে প্রথম দফায় ৩৯ হাজার ৩৬৫টি বাড়ি বিতরণ করা হয়।

২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রথম পর্যায়ে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, ২০ জুন, ২০২১-এ দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি এবং মুজিববর্ষের সময় তৃতীয় পর্যায়ে দুই ধাপে মোট ৫৯ হাজার ১৩৩টি বাড়ি বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে ২২ হাজার ১০১টি ঘর বিতরণের মধ্য দিয়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে সুবিধাভোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়াল ২,৩৮,৮৫১।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ