• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন

ইসলামী ব্যাংকে অনিয়ম, স্যুটের কাপড় ও ছাতা কেনার টাকাও গায়েব

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : শনিবার, ৯ নভেম্বর, ২০২৪

  • সাড়ে ১৩ হাজার কর্মীকে স্যুট দিতে বরাদ্দ করা হয় ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
  • প্রবাসী আয়ের সুবিধাভোগীদের এক লাখ ছাতা উপহার দিতে বরাদ্দ করা হয় সাড়ে ৫ কোটি টাকা।
  • স্যুট কেনার অর্থের যাত্রাপথ গোপন করতে চট্টগ্রামের পটিয়ার এক ব্যবসায়ীর হিসাব এক দিনের জন্য ব্যবহার করা হয়।

নানা অনিয়মের খবর প্রকাশ্যে আসার পর ২০২৩ সালে টাকার সংকটে পড়ে বেসরকারি খাতে পরিচালিত ইসলামী ব্যাংক। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যাংকটি আমানত সংগ্রহে কর্মকর্তাদের লক্ষ্য বেঁধে দেয়। পরে সফল সাড়ে ১৩ হাজার কর্মকর্তাকে পুরস্কার হিসেবে স্যুট বানানোর কাপড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। তবে কোনো কর্মকর্তা স্যুটের কাপড় পাননি, তবে ঠিকই খরচ হয়েছে ব্যাংকটির সাড়ে ছয় কোটি টাকা।

একই বছরে ডলার–সংকট মেটাতে প্রবাসী আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় ইসলামী ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে প্রবাসী আয়ের সুবিধাভোগীদের জন্য উপহার হিসেবে এক লাখ ছাতা কেনার সিদ্ধান্ত নেয় ব্যাংকটি। সেই ছাতা কেউ ব্যাংকে সরবরাহ করেনি। তবে ছাতা কেনার নামে ব্যাংকটি থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা।

কাল্পনিক দুই পণ্য ক্রয়ে কাগজে–কলমে ব্যাংকের ১২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গত বছরের আগস্ট–অক্টোবর সময়ে এই অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে বলে ইসলামী ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নথিপত্র পর্যালোচনায় করে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এই টাকার প্রকৃত সুবিধাভোগী কারা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। স্যুট কেনার অর্থের যাত্রাপথ গোপন করতে চট্টগ্রামের পটিয়ার এক ব্যবসায়ীর হিসাব এক দিনের জন্য ব্যবহার করা হয়। ওই টাকা এক দিনে তিনটি হিসাব ঘুরিয়ে নগদ তুলে নেওয়া হয়। নিজেদের আড়ালে রাখতে এই কৌশল নেয় সুবিধাভোগীরা।

স্যুটের টাকা গেল কোথায়

নিয়মিত ১৩ হাজার ৫২২ কর্মকর্তাকে স্যুটের কাপড় পুরস্কার হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদের ৩২৮তম সভায়। কার্যাদেশ পায় ব্যাংকটির রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড শাখার গ্রাহক বেলমন্ট ফেব্রিক্স। গত বছরের ২৯ আগস্ট এই পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠানের নামে কাপড় সরবরাহের চালান ও বিল জমা পড়ে। পণ্য সরবরাহ হয়নি জেনেও একই দিন অর্থ ছাড়ের অনুমতি চান ব্যাংকটির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন, তাতে অনুমতি দেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা।

নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখা গেছে, পরের দিন ৩০ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটির হিসাবে ৬ কোটি ৩৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা ছাড় করে ইসলামী ব্যাংক। একই দিন বেলমন্টের এক চেকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা এবং আরেক চেকের মাধ্যমে ৩ কোটি টাকা নগদ উত্তোলন করা হয়।

ওই শাখায় বেলমন্টের প্রায় ৫০ কোটি টাকা ঋণ রয়েছে। ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে বেলমন্ট শাখায় স্বাক্ষর করা চেক জমা দিয়েছে। ঋণ অনাদায়ি হয়ে পড়লে সাধারণত এই চেক ব্যবহার করে ব্যাংক মামলা করে থাকে। বেলমন্টের দুই নিরাপত্তা চেক ব্যবহার করে ওই টাকা তোলা হয়েছে বলে শাখার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ