• বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন

ব্যক্তি-তদন্ত নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য না দিতে সরকার-পুলিশকে আইনি নোটিশ

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪

তদন্তনাধীন মামলায় অভিযোগ ওঠা ব্যক্তি ও তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, এমন বক্তব্য না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সরকার ও পুলিশ প্রধানকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বুধবার রেজিস্ট্রি ডাকে এই নোটিশ পাঠান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজি) পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনারকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

ঝিনাইদাহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে নোটিশে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ হালনাগাদ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করছে।

গণমাধ্যমে ছোটো-খাট অনেক বিষয় উঠে আসছে। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যম পছন্দ অনুযায়ী শিরোনাম করছে। আবার ফ্রিল্যান্সাররা ইউটিউব, ফেইসবুক, টিকটকমহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক কিছু খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন করছে। ফলে এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।

বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ড, ফেনীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত ও উপজেলা চেয়ারম্যান ইকরাম হত্যাকাণ্ডসহ চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড নিয়ে এমনটা হয়েছিল বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

যে কারণে ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট দেওয়া হাইকোর্টের রায়ের অভিমত ও নির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে নোটিশে। মামলাটি ছিল বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি সংক্রান্ত। ওই রায়ে হাইকোর্ট বলেছিলেন, প্রায়ই লক্ষ্য করা যাচ্ছে, আলোচিত অপরাধের তদন্ত চলার সময় পুলিশ-র‌্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আদালতে হাজির করার আগেই বিভিন্নভাবে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করছে, যা মানবাধিকারের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অমর্যাদাকর ও অনুমোদনযোগ্য।

এ ছাড়া বিভিন্ন মামলার তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে অতি উৎসাহী হয়ে গণমাধ্যমের সামনে ব্রিফি করা হয়ে থাকে। আমাদের মনে রাখতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত একজন অভিযুক্ত বিচার প্রক্রিয়ায় সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ওই ব্যক্তিকে অপরাধী বলা যাবে না। গ্রেপ্তার ব্যক্তির মর্যাদা ও সম্মানহানি ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তাকে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন করা সংগত নয়। আর তদন্ত চলার সময় বা পুলিশ প্রতিবেদন দাখিলের আগে গ্রেপ্তার ব্যক্তি বা তদন্ত নিয়ে ণমাধ্যমে এমন কোনো বক্তব্য দেওয়া সমীচীন নয়, যা তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে বিতর্ক বা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়।
রায়ে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে গণমাধ্যমের সামনে উপস্থাপন এবং তদন্তাধীন বিষয়ে গণমাধ্যমে তথ্য প্রচার-প্রকাশ নিয়ে দ্রুত একটি নীতিমালা প্রণয়ন এবং তা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিভাগের সচিব এবং পুলিশের মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
নোটিশে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্টের রায় মানার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। যে কারণে হাইকোর্টের এই রায়টিও সবার জন্য অবশ্য পালনীয়। আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডসহ সব তদন্তনাধীন মামলার ক্ষেত্রে হাইকোর্টের এ নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ