• শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন

রোহিত-দিলশান হচ্ছেন বাংলাদেশের মিরাজ?

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেহেদী হাসান মিরাজকে কি তবে ওপেনার বিবেচনা করা যায়? প্রশ্নটা কিছুটা অবান্তর শোনালেও অবাক করার মত নয়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পর লোয়ার মিডল অর্ডারে নির্ভরযোগ্য কাউকে দরকার। সেই জায়গায় নিজেকে ধীরে ধীরে পোক্ত করছেন মিরাজ। ভারতের বিপক্ষে শেষ উইকেট জুটিতে মুস্তাফিজকে নিয়ে ম্যাচ জেতানো কিংবা সেঞ্চুরি করে ফেলা মিরাজকে শেষের দিকেই দেখতে অভ্যস্ত সবাই।।

কিন্তু ওপেনার মিরাজও যে দারুণ কার্যকর, সেটাও অস্বীকার করার মত অবস্থায় নেই। তার পরিসংখ্যানে চোখ রাখলেই ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে যায়। লোয়ার অর্ডারের তুলনায় ওপেনার মিরাজই যে অসাধারণ সেটা বেশ পরিষ্কার।
জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ওপেনার হিসেবে খেলেছেন মেহেদী মিরাজ। ওয়ানডেতে ৫১ ইনিংসে খেলেছেন ৫টি আলাদা আলাদা পজিশনে। ৬ নাম্বারে একবারই নেমেছেন তিনি। সেবার ৩৫ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৫ রান।

পজিশন ম্যাচ সংখ্যা রান সর্বোচ্চ স্কোর গড় স্ট্রাইক রেট
ওপেনার ২ ১৪৪ ১১২* ৭২.০০ ৮০.৯০
৬ নাম্বার ১ ৫ ৫ ৫ ৩৫.৭১
৭ নাম্বার ১১ ১৩০ ৩৭ ১১.৮২ ৭৬.৯২
৮ নাম্বার ৩০ ৫৯০ ১০০* ২৩.৬০ ৭৭.০২
৯ নাম্বার ৭ ১২০ ৪২ ৩০ ৯৯.১৭
৭ নাম্বারে ১১ ইনিংসে করেছেন মোটে ৩৭ রান। ডাকও মেরেছেন। গড় বা স্ট্রাইক রেট কোনটাই জুতসই না। ৯ এ নেমে ৭ ইনিংসে করেছেন ১২০ রান। এই পজিশনে মিরাজের স্ট্রাইক রেট সবচেয়ে ভাল। প্রায় ১০০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট চালিয়েছেন তিনি। তবে, এখানে পজিশন একেবারেই লোয়ার অর্ডারে।

৮ নাম্বারে মিরাজ খেলেছেন সবচেয়ে বেশি ৩০ ইনিংস। তাতে শতক আছে একটি। গড় ২৩ এর কিছুটা বেশি। তবে একমাত্র সেই সেঞ্চুরি সরিয়ে নিলে গড় স্কোর নেমে আসে ১৭ এর নিচে। আর ওপেনিং পজিশনে মিরাজ দুই ম্যাচের দুটিতেই আলো কেড়েছেন। আছে সেঞ্চুরিও।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও চিত্রটা প্রায় একই। ৫ থেকে ৯ সব পজিশনেই ব্যাট করেছেন। তবে কোনভাবেই গড় ১৫ এর বেশি না। তবে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে ওপেনার হিসেবে মিরাজের গড় ২২ এর বেশি। স্ট্রাইক রেটও বেশ চোখে পড়ার মত (১১৯.৩৫)। ৮ নাম্বারে স্ট্রাইক রেট ১৫০ পার করলেও গড় ১৫ এর নিচে।

মিরাজকে ওপেনার হিসেবে হয়ত চেষ্টা তাই করতেই পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে এক্ষেত্রে দরকার সাহস। যে সাহসটা গত ম্যাচে সাকিব আল হাসান দেখিয়েছেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অণুপ্রেরণা হতে পারেন রোহিত শর্মা কিংবা তিলকারাত্নে দিলশান।

রোহিত শর্মার আন্তর্জাতিক অভিষেকের পর ওয়ানডে ফরম্যাটে ছেলেছেন মূলত মিডল অর্ডার ব্যাটার হিসেবে। ২০০৭ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত রোহিত মিডল অর্ডারেরই ব্যাটার ছিলেন। রোহিতের ওই পজিশনে সেঞ্চুরি আসার কথা নয়। আসেওনি। তবে হাফ সেঞ্চুরি ছিল ১২টি। ৬৩ ইনিংস খেলে করেছেন ১৭৭৭ রান।

বীরেন্দর শেবাগ, শচীন টেন্ডুলকারের বিদায়ের পর রোহিত এলেন ওপেনার হিসেবে। আর তখনই বদলে গেল হিসাব। ২০১৩ থেকে ১০ বছরে ওপেনার রোহিত রান করেছেন ৮ হাজার। আছে ২৮টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ১৫৭ ইনিংসে রান ৮ হাজার। গড় হিসেবে ৬০ এর কাছাকছি। এমনকি ২০০ এর স্কোরও আছে ৩ বার।

প্রায় একই অবস্থা দিলশানের ক্যারিয়ারে। ১৯৯৯ সালে অভিষেকের পর থেকে দিলশান লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেছেন ১০৭ ইনিংস। সেঞ্চুরি না থাকলেও ছিল ১০ হাফ সেঞ্চুরি। রান করেছেন ২ হাজার ৩৩৪। আর ওপেনার হিসেবে ৭ বছরে দিলশান করেছেন সাড়ে ৭ হাজার রান। যেখানে আছে ৩৪ অর্ধশতক এবং ২১ শতক।

এছাড়া স্টিভেন স্মিথ, শোয়েব মালিক কিংবা বিরাট কোহলিরও নজির আছে উপরে উঠে এসে ভালো কিছু করার। মিরাজও করেছেন। অন্তত পরিসংখ্যান তার পক্ষেই কথা বলে। শেষ পর্যন্ত মিরাজকে ওপেনার হিসেবে দেখা যায় কিনা, সেটা সময়ই বলে দেবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ