নিজস্ব প্রতিবেদক
ডিম ও মুরগির বাজার অস্থিরতার জন্য একমাত্র প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার। তিনি বলেন, সরকার শুধু কর্পোরেটদের নিয়ে মিটিং করে ডিমের উৎপাদন খরচ সাড়ে ১০ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু প্রান্তিক খামারিদের ডিম উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ৭৯ পয়সা।
তিনি বলেন, ভোক্তাপর্যায়ে এক পিস ডিম ১৩ টাকা বিক্রি করলে সঠিক একটা মূল্য থাকবে। এটা করলে সাপ্লাই চেইনে এক টাকা ২০ পয়সা খরচ করে বাকিটা আমাদের লাভ হিসেবে থাকবে। কিন্তু সরকার ১২ টাকা খুচরা মূল্য দিয়েছে। আমরা ১২ টাকাতেই বিক্রি করব কিন্তু সেই ক্ষেত্রে সরকারকে উৎপাদন খরচ কীভাবে কমানো যায় সেখানে কাজ করতে হবে। ভোক্তা অধিদপ্তর চাইলে যেভাবে ডিমের দাম কমে যায়, ঠিক তারা চাইলেও পোল্ট্রি ফিডের দামও কমে যাবে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. সুমন হাওলাদার বলেন, মন্ত্রী মহোদয়কে বোধ হুট করে প্রশ্ন করা হয়েছে। এতে তিনি বলেছেন সাড়ে ১০ দশ টাকা উৎপাদন খরচ, ১২ টাকার বেশি লাভ করা উচিত না। ১২ টাকায় বিক্রি করলে খামারিদের ভালো লাভ হবে।। কিন্তু তিনি হয়তো সাপ্লাই চেইনের কথাটা ভাবেননি।
তিনি বলেন, আমরা কত টাকায় বিক্রি করব, কত পারসেন্ট লাভ করব এটা সরকারের বের করে দেওয়া উচিত। আমাদের ডিম উৎপাদন খরচ ৮ টাকায় নামিয়ে আনা সম্ভব, যদি পোল্ট্রি ফিডের দাম কমানো যায়। কিন্তু পোল্ট্রি ফিডের উৎপাদন খরচ আমাদের জানানো হয় না।
ডিম ও মুরগির বাজার অস্থিরতার জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর দায়ী জানিয়ে সুমন হাওলাদার বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে মনে হচ্ছে কর্পোরেটদের কর্পোরেট অফিস। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের জন্য কর্পোরেটরা সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। একদিকে বাচ্চা আমদানি আইনকে বন্ধ করেছে, অন্যদিকে চুক্তিপত্রের খামারিতে ঝুঁকছে তারা। এরপরে তারা আর প্রান্তিক খামারিদের কাছে মুরগির বাচ্চা বিক্রি করবেন না। কন্টাক্ট ফার্মিয়ের মাধ্যমে তারা শুধু উৎপাদন করবে। এতে করে বাজারে ডিমও মুরগির সংকট দেখা দেবে।
সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও ডিম সমিতির সভাপতি মো. আমান উল্লাহ বলেন, তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজার ডিম ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে সকলকে বলছি তেজগাঁও ডিম সমিতি ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে না। খামারি যে দাম নির্ধারণ করেন, আমরা সেই দামে ক্রয় করে বাজারজাত করে থাকি। তেজগাঁও বাজারের নামে সারা দেশে মাসিক টাকা দিয়ে যারা এসএমএস সার্ভিস নিচ্ছেন, তারা প্রতারিত হচ্ছেন। এবং যারা এসএমএস করেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কর্পোরেট গ্রুপ প্রায়ই বলে বেড়ান যে মধ্যস্বত্তভোগীরা বাজার অস্থিরতা তৈরি করে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। খামারে যদি দাম বাড়ে তবে বাজারে দাম বাড়বে। খামারে যদি দাম কমে, তাহলে বাজারে দাম কমবে এটাই স্বাভাবিক। এতে আমাদের কোনো হাত নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি বাপ্পি কুমার দে, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মেজবাউল হক, নোয়াখালী জেলার জাকির হোসেন, গাজীপুর জেলার অনিক সরকার, সাতক্ষীরা জেলার তসলিম আলম, কাপ্তান বাজার সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম প্রমুখ।