• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন

কোরআনে মশা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০২৩

ধর্ম ডেস্ক

ছোট একটি কীট মশা। বর্তমানে এর কারণেই মৃত্যু হচ্ছে অনেকে। মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর এখন অনেকটা মহামারি আকার ধারণ করেছে। মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে আল্লাহ তায়ালা মশা নিয়ে আলোচনা করেছেন।পবিত্র কোরআনে বর্ণিত মশা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য এখানে তুলে ধরা হলো-

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ নিঃসন্দেহে মশা বা তদূর্ধ্ব বস্তু দ্বারা উপমা পেশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। বস্তুত যারা মুমিন তারা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করে যে, তাদের পালনকর্তা কর্তৃক উপস্থাপিত এ উপমা সম্পূর্ণ নির্ভুল ও সঠিক। আর যারা অবিশ্বাসী তারা বলে, এরূপ উপমা উপস্থাপনে আল্লাহর মতলবই বা কী ছিল? এ দ্বারা আল্লাহ তাআলা অনেককে বিপথগামী করেন, আবার অনেককে সঠিক পথও প্রদর্শন করেন। তিনি অনুরূপ উপমা দ্বারা অসৎ ব্যক্তিবর্গ ছাড়া কাউকেও বিপথগামী করেন না।’ (সুরা বাকারা: ২৬)

মশার কথা আল্লাহ কেন কোরআনে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তার কিছু অন্তর্নিহিত কারণ বুঝতে আধুনিক বিজ্ঞান আমাদেরকে সহায়তা করেছে। তথ্যগুলো সত্যিই সচেতন যে কাউকে ভাবনায় ফেলে দেবে। তন্মধ্যে অন্যতম হলো ১. প্রায় দুই হাজার ৭০০ প্রজাতির মশা রয়েছে; ২. মশার এক শ’র ও বেশি চোখ রয়েছে; ৩. মশার মুখে ৪৮টা দাঁত রয়েছে; ৪. একটি মশার তিনটি পূর্ণ হার্ট (হৃদযন্ত্র) রয়েছে; ৫. মশার নাকে ছয়টি পৃথক ছুরি রয়েছে এবং প্রত্যেকটি ছুরির পৃথক ব্যবহার তারা করে থাকে; ৬. মশার শরীরে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন আছে, যা রাতের আঁধারে মানুষের চামড়াকে শনাক্ত করার কাজে লাগায়; ০৭. প্রত্যেক মশার নিজস্বভাবে এনেস্থেশিয়া দেয়ার জন্য এক ধরনের ভ্যাকসিন আছে, যা মানুষের শরীরে তাদের হুল ফোটানোর মাধ্যমে রক্ত নেয়ার সময় ব্যবহার করে সেই জায়গাটাকে অবশ করে নেয় যাতে রক্ত নিলেও কোনো ব্যথা পাই না আমরা, ৮. রক্ত পরীক্ষা করার বিশেষ ব্যবস্থা এদের আছে। কারণ, এরা সব ধরনের রক্ত পছন্দ করে না; ৯. পূর্ণিমার সময়ে মশা প্রায় ৫০০ গুণ বেশি কামড়ায়; ১০. মশা উড়ার সময় সেকেন্ডে প্রায় ৫০০ বার তাদের পাখা নাড়ায়; ১১. বিশ্বব্যাপী মানুষের মৃত্যুর জন্য সকল প্রাণীর মধ্যে মশাই বেশি দায়ী, (১২) ১৮ ফুট দূর থেকে তাদের টার্গেট ঠিক করতে পারে, ১৩. পুরুষের চেয়ে নারী মশারা বেশি দিন বাঁচে এবং (১৪) মশার মতো আরো একটি ক্ষুদ্র পতঙ্গ আছে, যা মশা থেকেই রক্ত সংগ্রহ করে।

এছাড়াও আমরা জানি, পৃথিবীর অহংকারী ক্ষমতাধর নমরুদ হেরে গিয়েছিল মশার ক্ষমতার কাছে। মুসলিম জাতির পিতা ইবরাহিম (আ.)-এর সময়ের রাজার নাম ছিল নমরুদ। সে নিজেকে এতটাই উচ্চতায় ভাবত যে, সৃষ্টিকর্তা হিসেবেও দাবি করেছিল। জন্ম, মৃত্যু, খাদ্যের জোগান সব কিছু তার ক্ষমতার মধ্যে বলেও দাবি করেছিল। তার সঙ্গে নবী ইবরাহিম (আ.)-এর একটি কথোপকথন আল্লাহ তাআলা কোরআনে উল্লেখ করেছেন। (দেখুন সুরা বাকারা: ২৫৮)।

এই নমরুদের সেনাবাহিনীকে শেষ করে দেওয়া হয়েছিল অসংখ্য মশা দ্বারা। আর ছোট্ট এই মশা প্রবেশ করেছিল নমরুদের নাকের মধ্যে। শেষপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছিল সৃষ্টিকর্তা দাবি করা এই পাপিষ্ঠের একটি মশার কারণে। কোরআনের এ উদ্ধৃতিটি আমাদেরকে স্মরণ করে দেয় মশার ক্ষমতা এবং এর ব্যবহারের উদ্দেশ্য। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে যেমন আমাদেরকে পরীক্ষা করার নিমিত্তে হতে পারে, তেমনি আমাদের পাপের শাস্তিও হতে পারে। নমরুদের বেলায়ও তাই হয়েছিল।

উপরে উল্লেখিত কোরআনের আয়াতে সাতটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যেমন ১. মশা সৃষ্টির মধ্যেও মানুষের জন্য আল্লাহর নিদর্শন রয়েছে; ২. মশার চেয়েও ক্ষুদ্র সৃষ্টি রয়েছে; ৩. বিশ্বাসীরাই কোরআনে বর্ণিত বিষয়সমূহে সত্য সঠিক হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করে; ৪. অবিশ্বাসীরা কোনো কিছুতেই আল্লাহর নিদর্শন বুঝতে পারে না; ৫. এ রকম নিদর্শনও মানুষের জন্য সঠিক পথের দিশা হতে পারে; ৬. আবার অনেককে বিপথগামী করতে পারে এবং ৭. অসৎ ব্যক্তিদেরকে আল্লাহ কখনও সঠিক পথে নেন না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ