আগামী (২০২৪-২৫) অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতির অভিঘাত থেকে বেরোনোর জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান। একইসঙ্গে অর্থনীতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত কী হতে পারে, এবারের বাজেট উপস্থাপনের সময় এ সংক্রান্ত একটি বিশ্লেষণ থাকবে বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য অভিঘাত কী হতে পারে, তা আগের বাজেটগুলোতে ছিল না। এবার বাজেট উপস্থাপনের সময় সেই সংক্রান্ত একটি বিশ্লেষণ দেওয়া হবে। প্রতিবছর যেভাবে জেন্ডার বাজেটের একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়, ৪৪টি মন্ত্রণালয় এ প্রতিবেদন তৈরি করে। এবার প্রথমবার আইবাস থেকে দেখতে পাবে বরাদ্দগুলো সংশ্লিষ্ট খাতে যাচ্ছে কিনা।
পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে ট্যাক্স সুবিধা দেওয়া হবে। অর্থাৎ আপনি যদি এত টাকা ট্যাক্স দেন, তাহলে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবেন। এবার ট্যাক্সের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটা তো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছ থেকে জানতে হবে। রাজস্ব আহরণের বিষয়টি তাদের এখতিয়ার। আমিও শুনেছি, এটিতে গতবারের মতোই এবারও কিছুটা ছাড়ের ব্যবস্থা আছে। তবে রেটটা আমি এখন বলতে পারছি না।
মূল্যস্ফীতি শুরুই তো হলো করোনা মহামারি পরবর্তী রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় জানিয়ে তিনি বলেন, তখন জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। এরপর থেকে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি চলমান আছে। অনেক দেশে ষাট শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি আছে। মানুষকে মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত অভিঘাত থেকে কীভাবে বের করে নিয়ে আসবো, সেজন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম প্রস্তাবিত বাজেটে বাড়ানো হয়েছে। এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতির বিষয়টি যেমন গুরুত্ব পাচ্ছে, তেমনই সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের সম্প্রসারণ হচ্ছে। নিম্ন ও স্বল্প-আয়ের মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ অব্যাহত থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফ্যামিলি কার্ড থেকে শুরু করে খাদ্যসহায়তা চলমান আছে। এগুলো যাতে ঠিকভাবে করা হয়, সেই ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। বাজেট ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে রেখে সামগ্রিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে মুদ্রানীতি সফলভাবে বাস্তবায়নে সপোর্টিভ ফিসক্যাল স্ট্যান্ড গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানিসহ খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসার একটা বিষয় আছে। খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আমরা ঋণনির্ভর উন্নয়নের দিকে যাচ্ছি কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ঋণ নির্ভর উন্নয়নের দিকে যাচ্ছি না। আমাদের ডেট-জিডিপি রেশিও অনেক কম। বিভিন্ন দেশের তুলনায় আমাদের অনেক কম। আমাদের ঋণ নেওয়ার সক্ষমতা অনেক আছে। আমাদের পেমেন্ট রেকর্ডও ভালো। বাংলাদেশ কখনো কোনো পেমেন্টে ডিফল্ট করেনি। আমি আশা করবো, ঋণনির্ভর উন্নয়ন কথাটি বলা ঠিক না।