নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারের টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে গড়ে তোলা হয়েছিল অস্ত্রের কারখানা ও ডাকাত দলের আস্তানা। সেখান থেকে পরিচালনা করা হতো নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম। গতকাল শুক্রবার (১৮ আগস্ট) টেকনাফের রঙ্গীখালী পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র তৈরির কারখানা থেকে ফয়সাল বাহিনীর প্রধান ফয়সাল ও তার পাঁচ সহযোগীকে আটক করেছে র্যাব।
এ সময় দুটি একনলা বড় বন্দুক, চারটি এলজি, একটি অর্ধনির্মিত এলজি, ৭ রাউন্ড শর্টগানের কার্তুজ, ১০ রাউন্ড রাইফেলের কার্তুজ, একটি ড্রিল মেশিন, একটি আগুন জ্বালানো মেশিন, দুটি লেদ মেশিন, দুটি বাটাল, একটি শান দেওয়ার রেত, দুটি লোহার পাইপ, দুটি প্লাস, একটি কুপি বাতি এবং তিনটি স্মার্ট মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আটকরা হলেন- ফয়সাল (৪০), মো. বদি আলম (৩৫), কবির আহাম্মদ (৪৩), সৈয়দ হোসেন (৩২), দেলোয়ার হোসন (৩৫) ও মিজানুর রহমান (২৬)।
শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১৫ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক।
তিনি জানান, সম্প্রতি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়ার পর সেখানে নজরদারি বাড়ানো হয়। অবশেষে র্যাবের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এই কারখানায় যে অস্ত্র তৈরি হতো সেগুলো তারা যেমন ব্যবহার করতো, তেমনি তারা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছেও বিক্রি করতো।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রটি টেকনাফের দুর্গম পাহাড়ে অবস্থান করে ফয়সাল উদ্দিন ওরফে ফয়সাল ডাকাতের সরাসরি নেতৃত্বে ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়, ধর্ষণ, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসা এবং হত্যাসহ নানা অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় সেখানে গড়ে তোলে অস্ত্র তৈরির কারখানা। আটককৃত ফয়সাল বিভিন্ন সময়ে তার সহযোগীদের মাধ্যমে অন্যান্য সন্ত্রাসী চক্রের কাছে অস্ত্র সরবরাহসহ নিজেদের তৈরিকৃত আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করত। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম শেষে তারা পুনরায় গহীন পাহাড়ে তৈরিকৃত আস্তানায় আত্মগোপনে চলে যেত। ডাকাত চক্রটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরে সশস্ত্র হামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক জানান, আটককৃত ফয়সাল উদ্দিন অস্ত্রধারী ডাকাত দলের মূলহোতা। তিনি ফয়সাল বাহিনী নামে একটি ডাকাত দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তার নেতৃত্বে টেকনাফের রঙ্গীখালী এলাকার দুর্গম পাহাড় গড়ে ওঠে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারখানা ও ডাকাত দলের আস্তানা। দলের সহযোগীদের নিয়ে সেখান থেকে টেকনাফ ও উখিয়া এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন ফয়সাল। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ ও অন্যান্য অপরাধে কক্সবাজারের টেকনাফ থানায় তিনটির অধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই র্যাব কর্মকর্তা