খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি-
দীঘিনালা উপজেলার বোয়ালখালী নতুন বাজারে পার্বত্য ডেন্টাল কেয়ার খুলে পারভেজ নামে এক ভুয়া ডাক্তার প্রতারণা করে আসছে এক যুগ ধরে। ভুয়া দাঁতের ডাক্তার সেজে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে কামিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এতে দাঁতের চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রতারনা ও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ। কোন ধরনের ডেন্টাল সাটিফিকেট, টেকনোলজিষ্ট কোর্স না থাকলেও সাধারণ মানুষের কাছে তিনি দাতেঁর ডাক্তার পারভেজ নামেই পরিচিত। তার পোষাক বেশভূষা দেখলে সাধারন মানুষ এমনিতেই তাকে বিশ্বাস করবেন ডাক্তার হিসেবে। তবে তার নেই কোন লাইন্সেস, চিকিৎসা দেওয়ার অুমতিপত্র বা একাডেমিক সার্টিফিকেট অথবা টেকনোলজিষ্ট কোর্স । চিকিৎসা সম্পর্কে কোন সার্টিফিকেট বা অনুমতি আছে কি না এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান চট্টগ্রাম থেকে ছয় মাসের কোর্স করে এসে চেম্বার খুলে বসেছেন এবং চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সার্টিফিকেট এবং চিকিৎসা পত্রের অনুমতি ও লাইসেন্স ছাড়া কেউ এই পেশায় যুক্ত হতে পারবেন না বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ছাবের । তিনি আরো জানান একাডেমিক সার্টিফিকেট বা ডেন্টাল কোর্স ছাড়া এধরণের চিকিৎসা দেওয়া বে-আইনি, আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বিধিমত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলবো। তবে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হওয়ার একদিন পর রাতারাতি তাহিদুল ইসলাম নামে একজন ডেন্টাল টেকনোলজিষ্ট এর সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। এই তাহিদুল ইসলামের নামেও আছে গাজা ও ইয়াবা সেবনের অভিযোগ, সেই সাইনবোর্ড নামিয়ে আরেকজন ডেন্টাল টেকনোলজিষ্ট সাজ্জাদ হোসেন মারুফ নামে সাইনবোর্ড জুলিয়ে দেন যিনি মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মরত আছেন। কিন্তু চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি নিজেই । প্রশাসন যখনই এসব ভুয়া ডাক্তার ও লাইসেন্স বিহীন অবৈধ প্যাথলজি, ক্লিনিক বন্ধের জন্য মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন তখনই ভুয়া ডাক্তার পারভেজ ডেন্টাল কেয়ারটি বন্ধ করে চলে যান।বিগত ২৯,০৫,২০২২ সালে ভুয়া ডাক্তার ও অবৈধ প্যাথলজী, ক্লিনিকের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন মোবাইল কোর্ট অভিযান চালালে টের পেয়ে পার্বত্য ডেন্টাল কেয়ারটি বন্ধ করে সটকে পরেন প্রতারক পারভেজ। প্রায় একমাস বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু করে আবারও প্রতারনা শুরু করেন। ভুয়া দাঁতের ডাক্তার পারভেজের অপচিকিৎসা ক্ষতিগ্রস্থ একই বাজারের ব্যবসায়ী মোং আব্দুল মোমিন জানান দাঁতের চিকিৎসার জন্য পার্বত্য ডেন্টাল কেয়ারের ডা: পারভেজ এর কাছে তিনি চিকিৎসা নেওয়ার পর সমস্যা কমার চেয়ে আরো বেড়ে যায়। এখন তিনি কানেই শোনেন না বলে এই প্রতিবেদক কে জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি জানান তার অপচিকিৎসায় তারাও বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছেন। আর এই প্রতারনা চালিয়ে যাচ্ছেন উপজেলার দুই এক জন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে। ভুয়া ডাক্তার পারভেজ এর প্রতারনার বিষয়ে বিচার চেয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে ইতিপূর্বে রায়হান ও আরফাত নামে ২ জন ব্যক্তি জেলা সিভিল সার্জন ও জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ভুয়া ডাক্তার পারভেজ জানান এই বিষয়ে থানায় আমাকে ডেকেছিল তবে তা মিমাংসা হয়েছে। কি মিমাংসা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এর আগে রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলায় ও ভুয়া দাঁতের ডাক্তার পারভেজ চেম্বার খুলে প্রতারণা করেছেন। পরে প্রশাসনের অভিযানের মুখে সেখান থেকে চেম্বার গুটিয়ে বোয়ালখালী বাজারে এসে পার্বত্য ডেন্টাল কেয়ার নামে প্রতিষ্ঠান খুলে আবারও নতুন করে প্রতারনা শুরু করেন। ইতিপূর্বে মেরুং বাজারেও আরেকটি চেম্বার খুলেছে বলেও জানা যায়। কোন ধরনের একাডেমি সার্টিফিকেট বা ডেন্টাল টেকনোলজিষ্ট কোর্স ছাড়াই দাঁতের জটিল চিকিৎসা রুটক্যানেল, ক্যাপ বসানো, দাঁত তোলাসহ সকল কাজ করে আসছেন প্রশাসনের নাকের ডগায়। তবে কোন ধরনের একাডেমিক সার্টিফিকেট ও চিকিৎসা অনুমতিপত্র ছাড়া এই ধরনের জটিল দাঁতের চিকিৎসা আপনি দিতে পারেন কি না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এরিয়ে যান ও এই প্রতিবেদক কে ম্যানেজ করার চেষ্ঠা করেন। প্রতারক পারভেজ ধর্মীয় লেবাজের আড়ালে ডাক্তার সেজে চিকিৎসার নামে প্রতারনা করলেও কোন ধরনের ডকুমেন্টস দেখাতে পারননি এই প্রতিবেদককে।