• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন

তরুণ শ্রমিকের কর্মস্থলে রহস্যজনক মৃত্যু

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানাধীন কমপ্যাক্ট প্রপার্টিজ লিমিটেডের নির্মাণাধীন ভবন হতে মোঃ রাসেল (১৯)
শ্রমিকের নির্মম রহস্যজনক মৃত্যুতে ভবন মালিকের বিরুদ্ধে শ্রমিকের কর্মস্থল নিরাপত্তাহীনতা,ঝুঁকিপূর্ণ অবহেলাজনিত ও ছিল,
গাফিলতিসহ নানান নীতিবাচক প্রশ্ন অভিযোগ উঠেছে নিহত পরিবার এলাকাবাসীর মুখে মুখে।

২৭জুলাই,সকালে এ মৃত্যু হয়।এর আগে ২৬জুলাই,বুধবার দিবাগত রাত ১১টায়,বায়েজিদ আবাসিক এলাকায় ১নং সড়ক,কমপ্যাক্ট এর নির্মাণাধীন ভবন “কমপ্যাক্ট রায়হান টাওয়ার”এর নির্মাণাধীন ভবনে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নির্মাণাধীন ৯তলা ভবনে থেকে পড়ে ঐ শ্রমিকের রহস্যজনক মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

 

ঘটনার সাথে সাথেই প্রত্যক্ষদর্শী আশপাশের মানুষ,
এলাকা,সোশ্যাল মিডিয়াসহ ঘটনাস্থলকর্মস্থল এলাকা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ গ্রামের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে মুহূর্তের মধ্যেই। যেই শুনে এবং দেখে সবাইকেই অবাক এবং হতভম্ব করে তুলছে।সে-ই সাথে প্রশ্নবিদ্ধ রহৎস্যজনক মৃত্যু বলেও মনে করছে অনেকেই। শ্রমিকের কর্মস্থলে এমন রহস্যজনক মৃত্যু কোন মতেই মেনে নেওয়ার নয়।কোন কারণে কিভাবে নির্মাণাধীন ভবন থেকে কেনই বা পড়ে গেল? না-কি ভিন্ন কোনো কারণ?কেউ জানে না কোন কিছুই? সবারই প্রশ্ন বিল্ডিং থেকে কেন পড়বে?একমাত্র পুত্রের আয়ের উপরে নির্ভরশীল ও আশা ভরসা ছিল তাদের পরিবারের।

এ-দিকে নিহত শ্রমিক মোঃ রাসেল (১৯)একমাত্র সন্তানের মর্মান্তিক আকস্মিক মৃত্যুতে প্রাণাধিক প্রিয় সন্তান হারিয়েছে তাদের পরিবার।একদিকে অভাব ও আর্থিক টানাপোড়েন অন্যাদিগে দিনে এনে দিনে খাওয়া মেহনতি খেটে খাওয়া শ্রমিক পরিবারের একমাত্র সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর মর্মাহত শোকাহত হতাশাগ্রস্ত ও দিশেহারা মা-বাবা,পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশী সকলেই।

নিহত রাসেল’ই ছিল পরিবারের ভরসা একমাত্র পুত্র সন্তান। চার ভাই বোনের মধ্যে সেই ছিল আদরের একমাত্র ছোট ভাই।নিহত রাসেলের দেশের বাড়ী রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ। বাবার নাম মোঃ সিরাজুল ইসলাম,মাতা রাশেদা বেগম। গ্রাম- বশিটোলা পাড়া,১নং ওয়ার্ড বশিটোলা,থানা-গোমস্তাপুর,জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

নিহতের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন,শুনেছি ছেলে কাজ করতে গিয়ে কর্মস্থলে মারা গেছে।আমরা গরিব অসহায় নিরুপায় সাধারণ খেটে খাওয়া,দিনে এনে দিনে খাওয়া মানুষ। গত কোরবানি ঈদের পর ছেলেকে বিবাহ করানো হয়েছে। আমরা গ্রামের অসহায় সাধারণ মূর্খ-সুর্খ মানুষ ক্ষতিপূরণ অভিযোগ আইন আদালত এসব কিছু জানিনা বুঝিনা। আপনারা যা ভালো মনে করেন তাই করেন।

নিহতের বোন-জামাই জাহাঙ্গীর বলেন,দিন কাটে দিন খাই ক্ষতিপূরণ তো দিতেই হবে। দেখি কি হয়? আমার শ্বশুর শাশুড়ি খুবই অসহায় অসুস্থ এবং নিরুপায় তাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিলে তারা কিছুটা হলেও বাচঁবে।

কিভাবে মরছে তো আমরা জানিনা। তবে তার কর্মস্থলে মৃত্যু হয়েছে।আপনারা যা শুনতেছেন যা দেখতেছেন আমিও তাই শুনতেছি। আর আমিতো ঘটনাস্থলেও ছিলাম না। মানুষ তো আর ফেরত পাওয়া যাবে না। আশা করি মালিকপক্ষ তারা খুশি হয়ে আমাদেরকে অবশ্যই আর্থিক সহায়তা করবেন। না হয় বিকল্প কিছু যা-যা করার দরকার সবই করতে হবে।

স্থানীয়রা জানায়,বিল্ডিং থেকে পড়ে যুবককে মুমূর্ষ অবস্থায় রাত ১১টায় প্রথম অবস্থায় নিকটস্থ ক্লিনিকে এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।

কমপ্যাক্ট প্রপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারকে একাধিকবার কল করলেও তারা কোন উত্তর দেয়নি। অথচ,সাংবাদিক নাম পরিচয় ঠিকানা পেয়েও উক্ত বিষয়ে বিশেষভাবে জানতে চাইলেও কোন তথ্য বিবরণ বা মন্তব্য করতে রাজি হয় নাই। ঘটনাস্থল গিয়ে দেখে আসতে বলেন। নাম পরিচয় না দেওয়া সত্ত্বে কর্মকর্তা বলেন,আপনি ঘটনাস্থলে আসেন তারপর কথা বলবো কি হয়েছে।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস জাহান বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহতের মর্মান্তিক ঘটনাটি সত্য।ঘটনাস্থলের খবর পেয়ে পুলিশ সকল প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ ও যাবতীয় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ