প্রবীণ রাজনীতিবিদ চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক সফল মন্ত্রী ডাঃ আফসারুল আমীনের মৃত্যুতে চট্টগ্রাম ১০ আসন শূন্য হওয়ায় দলের ভেতরে বাইরে শুরু হয়ে গেছে আলোচনার ঝর।
আওয়ামী লীগের নেতারা অনেকেই বলছেন, মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে এ আসনে নৌকার হাল ধরতে আওয়ামীলীগ নেতা মো.মহিউদ্দিন বাচ্চু মাঠে কাজ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে।
চট্টগ্রাম ১০ আসনে উপনির্বাচন আসন শূন্য ঘোষণার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে।
সে অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) নির্বাচন কার্যালয়ে নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে তফসিল ঘোষণা করা হয় ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগ্রহী প্রার্থীরা ৪ জুলাই পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। মনোনয়ন বাছাই হবে ৬ জুলাই। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১২ জুলাই পর্যন্ত। পরদিন হবে প্রতীক বরাদ্দ।
সবশেষে ৩০ জুলাই ভোট।
দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই নির্বাচনী আলোচনা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধ্যা নামলেই জমে ওঠে চায়ের টেবিল। আলোচনা হয় প্রার্থী নিয়ে, নির্বাচন নিয়ে। তিন মাসের জন্য চট্টগ্রাম-১০ আসনে উপনির্বাচন করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাবেকমন্ত্রী আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া চট্টগ্রাম-১০ আসনটিতে মনোনয়নের দৌড়ে জ্যেষ্ঠদের পাশাপাশি বেশীরভাগ নবীন নেতারা লবিং শুরু করেছেন। তাদের মাঝে নগর যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু অন্যতম। তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ওই আসনে আফসারুল আমীনের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। চট্টগ্রাম মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ এই চট্টগ্রাম ১০ আসন নির্বাচনী এলাকার দলীয় নেতাকর্মীদের চাওয়া এই আসনটি দলের জন্য ত্যাগী রাজনীতিবিদ
মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর হাতেই থাকুক। দলের অনেক দুঃসময়ের পরীক্ষিত এই ত্যাগী নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চুর হাতেই তুলে দেওয়া হোক নৌকার টিকিট। আফসারুল আমীনের আসনটি তার মতো একজন পরীক্ষিত ও ত্যাগী রাজনীতিক হাল ধরুক এমনটাই চান তৃনমূল নেতাকর্মীরা। মহিউদ্দিন বাচ্চু গত বছর যুবলীগের রাজনীতি ছেড়ে নগর আওয়ামী লীগের সদস্যপদ নিয়েছেন। নগর আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনে পদপ্রত্যাশী। এই নেতা আগে থেকেই চট্টগ্রাম-১০ আসনে সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করে আসছেন।
এদিকে উপনির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আরো নাম শোনা যাচ্ছে, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ১৪ দলের চট্টগ্রাম মহানগরের সমন্বয়ক নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজনের নাম। আবার নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নামও শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া আফসারুল আমীনের ভাই এরশাদুল আমীন, সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা এমদাদুল ইসলামের নামও বিভিন্ন মহলে আলোচনায় রয়েছে।
জানতে চাইলে খোরশেদ আলম সুজন বলেন, দল যাকে নির্বাচন করতে বলবে তিনি নির্বাচন করবেন। এ এলাকার মানুষের সাথে তার সম্পর্ক অনেক পুরানো। বিষয়টি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর।
এ ব্যাপারে মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, সূখে দুঃখে বিভিন্ন সময়ে এলাকায় ছিলাম,আছি এবং আগামীতেও থাকবো। নির্বাচনে মনোনয়ন চাইব। সিদ্ধান্তটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করছে। তিনি যদি আমাকে মনোনয়ন ও নির্দেশ দেন তাহলে আমি নির্বাচনে অংশ নেবো। প্রধানমন্ত্রী যদি না চান তাহলে অংশ নেবো না। কারণ প্রধানমন্ত্রী আমাদের অভিভাবক। তার নির্দেশের বাইরে আমি কিছু করবো না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। আফসারুল আমীন এই আসনে পর পর ৩ বার নির্বাচিত সাংসদ ছিলেন। সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য আফসারুল আমীন গত ২ জুন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ক্যানসারে ভুগছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি নগরের ওই আসনে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।