• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৬ অপরাহ্ন

সেন্টমার্টিনের সব হোটেল-মোটেল-রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : শুক্রবার, ১২ মে, ২০২৩

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় মোখা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত মোখা শক্তিশালী হয়ে কক্সবাজারের দিকে এগিয়ে আসছে। এ অবস্থায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।  একইসঙ্গে সেন্টমার্টিন থেকে বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা ও পর্যটকদের ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যারা স্থানীয় দ্বীপবাসী তাদেরকে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান।

আবু সুফিয়ান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা যেহেতু কক্সবাজারমুখী, সেহেতু কক্সবাজারসহ সেন্টমার্টিন দ্বীপ ঝুঁকিতে রয়েছে। এ জন্যই সেন্টমার্টিনের সব হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি সেন্টমার্টিন থেকে বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা ও পর্যটকদের ইতোমধ্যে সরিয়ে এনেছি আমরা।

ঘূর্ণিঝড় মোখার সংকেত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলার উপকূলীয় এলাকায় মাইকিং করা হবে জানিয়ে আবু সুফিয়ান বলেন, সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে ৭ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তত রাখা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৯টি মেডিক্যাল টিম। দেড়শ মেট্রিক টন চাল, ৬.৯ মেট্রিক টন শুকনো খাবার, ২০ হাজার প্যাকেট খাওয়ার স্যালাইন, ৪০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ১৯ হাজার নগদ টাকা মজুত রাখা হয়েছে। একইসঙ্গে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জেলার উপকূলীয় এলাকা বিশেষ করে কুতুবদিয়া ধলঘাটা মাতারবাড়ী দ্বীপে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ রয়েছে। এ অঞ্চলের বাসিন্দারা সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাদের সরিয়ে আনার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে আনা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। লবণ উৎপাদন হওয়া এলাকার মাঠ থেকে লবণ সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে চাষিদের।

ট্যুরিস্ট পুলিশ জানায়, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের সতর্কতার সঙ্গে গোসল করতে বলা হয়েছে।  সৈকতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফ গার্ডের কর্মীদের সার্বক্ষণিক নজরদারি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার শেহরিন আলম জানিয়েছেন, সৈকতে আগত পর্যটকদের পানিতে নামতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ দৌজা নয়ন জানিয়েছেন, উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ক্যাম্পগুলোতে প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। আজ সকালে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তুতি সভা করেছি আমরা। সবাইকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবদুর রহমান জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে আগামী এক সপ্তাহ সাগর উত্তাল থাকবে। গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

এদিকে, মোখা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল মোখা। এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এ অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page