• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১০ অপরাহ্ন

ফেনীতে রিসাইক্লিং বিজনেস ইউনিটের উদ্বোধন

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : রবিবার, ৯ জুন, ২০২৪

বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিপিসিএল) ফেনীতে রিসাইক্লিং বিজনেস ইউনিটের উদ্বোধন করেছে।

বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিপিসিএল) আজ ফেনী রিসাইক্লিং বিজনেস ইউনিট (আরবিইউ) এর শুভ উদ্বোধন করেছে, যা সমুদ্রগামী প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক চিহ্নিত হয়েছে। ফেনীর দাগনভূঁইয়াতে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানটি ছিল “বাংলাদেশে রিসাইক্লিং বিজনেস ইউনিট গঠনের মাধ্যমে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ভ্যালু চেইনের আনুষ্ঠানিকীকরণ” প্রকল্পের অংশ, বিস্তৃত প্লাস্টিক ফ্রি রিভারস অ্যান্ড সিস ফর সাউথ এশিয়া (পিএলইএএসই) বা “প্লিজ” প্রকল্পের একটি অংশ।

ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস (ইউএনওপিএস) এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ওবায়দুল ইসলাম, বিপিসিএল-এর সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদেম মাহমুদ ইউসুফ, এবং সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন অ্যান্ড প্র্যাকটিসেস (সিডিআইপি) এর সহকারী মহাব্যবস্থাপক আবু সালেহ নুর মোহাম্মদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্লিজ প্রকল্পটি, দক্ষিণ এশিয়া কো-অপারেটিভ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (সিডিআইপি) ইউএনওপিএস এবং বিশ্বব্যাংক এর সহযোহীতায় বিপিসিএল দ্বারা বাস্তবায়িত হবে । এই উদ্যোগের ফলে ফেনী অঞ্চলের পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবহন, সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে টেকশই সার্কুলার ইকনমি নিশ্চিত হবে। আমাদের সমুদ্রে প্রবেশ করা প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ কমিয়ে, প্রকল্পটি টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অনুশীলন প্রচার করে যা সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র এবং সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

“ফেনী আরবিইউ-এর আজকের উদ্বোধন একটি টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের একটি প্রমাণ। প্লাস্টিক দূষণকে মোকাবেলা করার মাধ্যমে, আমরা কেবল আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করছি না, কাজের সুযোগও তৈরি করছি এবং অনেকের জন্য, বিশেষ করে মহিলাদের জন্য সামাজিক অবস্থার উন্নতি করছি। প্রকল্পটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সবুজ বাংলাদেশ গড়ার প্রতি আমাদের নিষ্ঠার ওপর জোর দেয়,” বলেছেন বিপিসিএলের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাদেম মাহমুদ ইউসুফ।

ফরমালাইজেশন অব প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ভ্যালু চেইন বাই ফরমিং রিসাইক্লিং বিজনেস ইউনিটস ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের প্রাথমিক লক্ষ্য হল সারা বাংলাদেশে সাতটি রিসাইক্লিং বিজনেস ইউনিট (আরবিইউ) প্রতিষ্ঠা করা যেখানে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবহন, সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে রিসাইক্লিং এর জন্য প্রস্তুত করবে।

প্রকল্পটির লক্ষ্য আমাদের সমুদ্রে প্রবাহিত প্লাস্টিক বর্জ্য হ্রাস করা, সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র এবং সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশে বর্তমানে মাত্র ৩০% প্লাস্টিক বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে, ফেনী রিসাইক্লিং হাব এই সমস্যাটি মোকাবেলা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহকে সমর্থন করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ফেনী পৌরসভা প্রতিদিন ৭০-৮০ টন বর্জ্য উৎপন্ন করে, যা প্রায়শই অপরিকল্পিত নগরায়ন এর কারনে সঠিক ব্যবস্থাপনা করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে । ফেনী আরবিইউ’এর লক্ষ্য দৈনিক ৩ টন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ করা, উল্লেখযোগ্যভাবে প্লাস্টিক দূষণ হ্রাস করা এবং এলাকার নারী কর্মীদের এমনভাবে নিযুক্ত করা যেন তাদের সামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়।

সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট ইনোভেশন এন্ড প্ল্যাক্টিসেস (সিদিপ)এর সহযোগিতায়, বিপিসিএল ফেনী আরবিইউতে সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ এবং হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করবে। নারী বর্জ্য কর্মীদের জন্য ডে-কেয়ার সুবিধা এবং পানি স্যানিটেশন সহজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করবে যার ফলে একটি উপযুক্ত কাজের পরিবেশ বজায় থাকবে।

ফেনী আরবিইউ’তে দুটি বেল মেশিন এবং একটি পিইটি বোতল কোল্ড ওয়াশিং সিস্টেম রয়েছে যার ক্ষমতা প্রতি ঘন্টায় ৫০০ কেজি, দক্ষ প্লাস্টিক প্রক্রিয়াকরণ নিশ্চিত করে। প্লিজ প্রকল্পটি একটি পরিষ্কার পরিবেশের জন্য প্রচেষ্টা করে এবং স্থানীয়দের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করে।

আরবিইউ স্থাপনার মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০% প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য হার অর্জনের বাংলাদেশের জাতীয় লক্ষ্যে অবদান রাখে। এটি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে জলবায়ু-স্মার্ট বিনিয়োগের জন্য ১৭২ বিলিয়ন ডলারের সুযোগের সাথে সারিবদ্ধ। ফেনী আরবিইউ ২৫-৩০ জনের জন্য কর্মব্যবস্থা সৃষ্টি করবে এবং এই প্রক্রিয়ায় জন ৫০ বর্জ্য বাছাইকারীকে নিযুক্ত করবে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের ক্ষমতায়ন ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হবে। ফেনী আরবিইউ একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রমাণ।

বিপিসিএল সম্পর্কে:
বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিপিসিএল), দেশের প্রথম পোস্ট-কনজিউমার পিইটি বোতল রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট, ‘বর্জ্য থেকে মূল্য’ তৈরির উদাহরণ। ২০১২ সাল থেকে, বিপিসিএল ব্যবহৃত পিইটি বোতলগুলিকে বছরে ১০,৫০০ মেট্রিক টন পুনর্ব্যবহৃত পিইটি রেজিনে রূপান্তরিত করেছে। এটা একটি সফল “রিকভার এবং রিসাইকেল”’ মডেলএর প্রতিনিধিত্ব করে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ