নজরুল ইসলাম জুলু: রাজশাহী জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক টিকাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো: রনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টার সময় খরখরি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন গেটের সামনে একটি ট্রাক রনির মোটরসাইকেলে চাপা দিয়ে চলে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এর ফলে ঘটনাস্থলেই রনি মারা যান। রনির ব্যবহৃত মোটর সাইকেল টি মাহবুর নামে এক ঠিকাদারের বলে জানা গেছে। রনির সাথে আরো কয়েকটি মোটরসাইকেল ছিলো বলে যায়। তারা কেউ ঘটনাস্থলে থামেনি বলে জানা গেছে। তবে,
পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। পরিবার সূত্র জানা যায় খুলিপাড়া এলাকার আজিজ বাহিনীর আজিজ, মজিদ, রবিন, হিটলার, সজীব, ইয়াসীন, বাদল প্রমুখের সাথে রনি ও তার পরিবারের দীর্ঘদিন ধরর বিরোধ হয়ে আসছিল। এই বিরোধের জেরে গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরদিন ২২শে জুন রনির ছোট ভাই মনা, চাচাতো ভাই মুকুল ও তার চাচা আলতাবের উপর আজিজ বাহিনী আকস্মিক হত্যার উদ্দেশ্যে প্রকাশ্যে দিবালোকে হামলা চালায়। এর ফলে রনি’র ভাই মনা ও মুকুল
মারাত্মক আঘাত পায় এবং আলতাবের এক হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাটি সারা দেশে আলোড়ন তৈরি করেছিল। উক্ত ঘটনায় আহত আলতাবের ছেলে সাকিব বাদি হয়ে বোয়ালিয়া থানায় আজিজ বাহিনীর ১৫জন কে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। যাহার নং ১৫ তারিখ ২৩ শে জুন। মামলা দায়ের করার পর থেকেই আজিজ বাহিনী মামলা তুলে নেওয়ার জন্য রনির ভাই মনা, আলতাব ও তার ছেলেকে ক্রমাগত হুমকি প্রদর্শন করে আসছে। ক্রমাগত হুমকির কারণে রনির ছোট ভাই মনা ও চাচা আলতাব বোয়ালিয়া থানায় পৃথকভাবে ২টি জিডি দায়ের করেন যাহার জিডি নং ৫৫২ ও ৯৩০। বারংবার
প্রাননাশের৷ হুমকি ও বোয়ালিয়া থানা কর্তৃক যথাযথ সহযোগিতা না পাওয়ায় রনির পরিবার রাজশাহী পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রনি’র পরিবার মারফত জানা যায় অনেকদিন থেকেই আজিজ বাহিনীর রোষানলে ছিল রনি। আজিজ বাহিনী একাধিকবার রনি ও তার পরবারকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। রনির বাবা আনসার আলী জানান গতকাল ( শুক্রবার) বেলা আনু: ১১:৩০টার দিকে সন্ত্রাসী আজিজের ভাই হিটলার ও আজিজ বাহিনীর আরেক সদস্য রবিন রনি কে গালিগালাজ করে ও হুমকি দেয়। রনির পরিবার বর্তমান কথাকেকে জানায় এই ঘটনাটিকে তারা নিছক দূর্ঘটনা বলে মানতে পারছেন না। গত প্রায় ২ সপ্তাহ থেকেই রনি আজিজ বাহিনীর কাছ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়ে আসছিল।তারা আরও বলেন, এমন ভয়াবহ দূর্ঘটনা যেখানে ঘটেছে অর্থাৎ দুর্ঘটনাস্থলে সামান্য পরিমাণে রক্ত পরেছিল। অথচ নিহত রনির
দেহ থেকে অতিরিক্ত রক্তঝরার ফলে সারা দেহ রক্তশুণ্য হয়ে ফ্যাকাসে হয়ে ছিল। রনির মৃতদেহের পাশেই পরে থাকা হেলমেট টিও অক্ষত ছিল। রনির ছোট ভাই মনা জানায় দূর্ঘটনার সময় রনির সাথে ২টি মোবাইল ফোন ছিল যা সম্পূর্ণভাবে অক্ষত ছিল। এত বড় সড়ক দূর্ঘটনার পরও ফোন দু’টিতে স্ক্রাচ পরেনি বা ভেঙ্গে যায় নি।দূর্ঘটনার সময় রনির সাথে কে বা কারা ছিল। তারা কেন ঘটনাস্থলে ছিলনা এই বিষয়গুলো পরবারের মধ্যে সন্দেহের দানা বেধেছে। রনির পরিবার ধারণা করছেন তাকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে সড়ক দূর্ঘটনার নাটক সাজানো হয়েছে। এই বিষয়ে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বর্তমান কথাকে জানান, উক্ত ঘটনায় সড়ক দূর্ঘটনা আইনে ১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগকে আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। সে বিষয়ে তদন্ত করা হবে। তবে এটি নিছক সড়ক দূর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে স্পষ্ট হয়ে যাবে। নিহত রনি কে হত্যা করা হয়েছে এমন তথ্য ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পাওয়া গেলে মামলাটির ধারা পরিবর্তন করে তা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।সেক্ষেত্রে বাদীর দেয়া আসামিদের নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ” এ বিষয়ে চন্দ্রিমা থানার তদন্ত কর্মকর্তা আসলাম বলেন, ” আমরা যথাযথ তদন্ত করছি। সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পাওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না।”