নজরুল ইমলাম জুলু: আরএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চলতি বছরের প্রথমদিকে বিভিন্ন পর্যায়ের পুলিশ সদস্য ও কর্মকর্তাদের মাদক সংক্রান্ত ডোপ টেস্টের নির্দেশনা আসে।
গত ৩ মার্চ ২০২৩ তারিখ রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্স এর কনষ্টেবলদের ১২ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতাল রাজশাহীতে ডোপ টেস্টের নমুনা প্রদান করে। পরবর্তীতে ০৩/০৪ দিনের মধ্যে তাদের রিপোর্ট পজিটিভ আসলে গত ২৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে তাদের কে চাকরিচ্যুত করেন। তারা হচ্ছেন এএসআই মোঃ মেসবাহুল, কনস্টেবল ২৭৩৪ মোঃ ইমরান, কনস্টেবল ২৪৫০ মোঃ রুহুল, কনস্টেবল ২৬৪৩ মোঃ হাফিজ, কনস্টেবল ২৭৪৬ মোঃ রাকিবুল ইসলাম।
এসব কনস্টেবল চাকরি ফিরে পেতে (আর ও) অমর সরকারের শরণাপন্ন হন। কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অমর চাকরিচ্যুত কনস্টেবলদের কারও কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, আবার কারও থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করেন। কিন্তু কয়েক মাস অতিক্রান্ত হলেও কেউই আর চাকরি ফিরে পাননি। এসব কনস্টেবল টাকা ফেরত পেতে আরএমপির কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের রিজার্ভ অফিসার (আরও) এসআই অমর কুমার সরকার। বিভিন্ন থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের বদলিসহ নানা প্রলোভন দিয়ে অর্থ হাতিয়েছেন, কিন্তু কাজ হয়নি এমন অভিযোগ এনে আরএমপি কমিশনারে কাছে অভিযোগ করেছেন অন্তত শতাধিক পুলিশ সদস্য। এসব অভিযোগের তদন্ত চলছে। অমর কুমার সরকারকে সরিয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে আগেভাগেই ২৬ নভেম্বর ২০২৩ চাকরি থেকে স্বেচ্ছা অবসরের আবেদন করেছেন অমর সরকার তবে তা গ্রহণ করা হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই অমর কুমার সরকার বলেন, ঘুষ বাণিজ্য বা পোস্টিং বাণিজ্য যেটাই বলেন না কেন এটা আমি করি না। আমি সিনিয়র কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করি।
কিছু ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে অনেকের টাকা তিনি ফেরত দিয়ে দিয়েছেন। তিনি চাকরি ছেড়ে দেবেন বলে আবেদনও করেছেন।
আরএমপির সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, এসআই অমর কুমার সরকার দীর্ঘদিন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (পুলিশ লাইন্সে) রিজার্ভ অফিসার পদে কর্মরত। ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হুমায়ুন কবির রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার পদে বদলি হয়ে আসেন। ওই সময় অমর কুমার সরকারকেও খুলনা থেকে আরএমপিতে রিজার্ভ অফিসার হিসেবে বদলি করা হয়। সেই থেকে অমর সরকার পদ অপসারণ হওয়ার আগ পর্যন্ত গত ৫ বছর আরএমপিতে রিজার্ভ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরএমপির উপ-কমিশনার (সদর) সাইফুদ্দিন শাহীন জানান, অমর সরকারের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। আলোচিত রিজার্ভ অফিসার ইতোমধ্যে স্বেচ্ছা অবসরের জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু কমিশনার তা মঞ্জুর করেননি। তদন্তের ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
জ/ন