গত (১০ নভেম্বর) শুক্রবার টিকাপাড়া খুলিপাড়া এলাকার মনা ইসলাম নামক এক যুবক কে টিকাপাড়া ঈদগাহ সংলগ্ন অটো গ্যারেজ হতে কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার পথে রাত্রি আনু: ১০ঘটিকার সময় টিকাপাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার সামনে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে পূর্ব শত্রুতার জেরে কুখ্যাত আজিজ বাহিনী সদস্যরা অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। এ সময় আসামিরা মনা ইসলাম কে জোরপূর্বক অপহরণ করে টিকাপাড়া কবরস্থানে জনশূন্য জায়গায় তুলে নিয়ে যায়। আসামিরা এ সময় মনাকে আসামিদের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়। এতে মনা রাজি না হওয়ায় আসামিরা মনা কে রড,হাতুড়ি, বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে গলায় ছুরি ধরে জোরপূর্বক তিনটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে নেয় বলে জানান মনা ইসলাম ।
মামালার অভিযোগ থেকে জানাযায় আসামিরা মনা’র কাছে মামলার খরচ বাবদ ৩লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিলে পরিবারের যে কোনো সদস্য কে হত্যার হুমকি দেয়।
এ সময় আসামিরা মনার কাছে থাকা গ্যারেজের ৩হাজার ২০০ টাকা কেড়ে নেয়। মনা’র চিতকার ও আর্তনাদে চারিদিকে শোরগোল পরে গেলে কয়েকজন ব্যক্তি এগিয়ে গেলে আসামিরা মনা কে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মনা’র বড় ভাই রনি ইসলাম বাদি হয়ে বোয়ালিয়া থানায় রবিন, হিটলার, সুইট,বাদল ইয়াসিন,নাইম, আমিন, আক্কাস ওরফে আকাই, জুলু, অনিক,সহ অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের আসামি করে ১টি মামলা করে।
বর্তমানে আজিজ রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। কারাগারে বসেই তার পরিকল্পনা অনুযায়ী এই চোরাগুপ্তা হামলা চালাচ্ছেন তার বাহিনী। উল্লেখ্য যে, বিগত রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর দিন ২২শে জুন খুলিপাড়া এলাকার কুখ্যাত আজিজ বাহিনীর আজিজ এর নেতৃত্বে মজিদ, রানা, হিটলার,রবিন, সজিব, পরশ, আক্কাস, সুইট,বাদল,ইয়াসিন, নাঈম,জুলুসহ প্রমুখ সন্ত্রাসীরা দলবদ্ধ হয়ে রামদা, চায়নিজ কুড়াল, জি আই পাইপ, রড, হাসুয়া ইত্যাদি দেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে অত্র এলাকার মুকুল হোসেন, মনা ইসলাম ও আলতাব এর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। উক্ত হামলায় মুকুল ও মনা মারাত্মকভাবে আহত হলে তাদের দ্রুত রামেকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। তারা এখনো চিকিৎসক এর পরামর্শে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে আজিজ বাহিনীর হামলায় আরেক ভিক্টিম আলতাবের এক হাতের কয়েকটি আঙুল ও অন্য হাতের কব্জি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় রামেক এ ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে তার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া কব্জি জোড়া লাগানো সম্ভব হয় নি। আলতাব এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনার পর আহত আলতাবের ছেলে মো:সাকিব বাদি হয়ে আজিজ বাহিনীর হোতা আজিজ কে ১ নং আসামি করে অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় ১টি মামলা দায়ের করে। উক্ত মামলায় আসামিরা জামিনে মুক্ত হওয়ার পর গত ৯জুলাই মামলার ভিক্টিম মনা কে আসামিরা মারধর করে ও মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় মনা ইসলাম বোয়ালিয়া থানায় ১০ই জুলাই ১টি জিডি দায়ের করে বলে জানা গেছে। আজিজ বাহিনীর সদস্যরা আহত আলতাব কেও মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানান ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এর ফলে আলতাব ৫ আগষ্ট বোয়ালিয়া থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১টি জিডি দায়ের করে। এছাড়াও আজিজ বাহিনীর নাশকতার খবর সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের জন্য তারা স্থানীয় নাজমুল হক নামক একজন সাংবাদিক কে মারধর করে। এ ঘটনায় সাংবাদিক নাজমুল বাদি হয়ে রাজপাড়া থানায় ১টি মামলা করে।
বোয়ালিয়া থানা সূত্রে জানা যায় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে গতরাতে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু আসামিদের গ্রেপ্তার করা যায় নি। তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে বোয়ালিয়া থানা কর্তৃপক্ষ জানান। এ
বিষয়ে বোয়ালিয়ার মডেল থানা ওসি সোহরাওয়ার্দী বলেন, ঘটনা ঘটার পরপরই তিনটি টিম দিয়ে অভিযান করে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়েছি। তবে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, মামলা রেকর্ডের প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় রয়েছে, আসামিদের গ্রেফতারের জন্য যা যা করা দরকার আমি তা পদক্ষেপ নেব।
জ/ন