“দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন: তামাক কোম্পানি বেপরোয়া” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন করেছেন সরকারের উচ্চ মহল গুলোকে স্মারক লিপি দিয়েছেন লামা এনজেড একতা মহিলা সমিতি। সহযোগিতায় ছিলেন, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। ১৪ অক্টোবর বেলা ১১টায় জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস-২০২৩ উপলক্ষে এনজেড ক্যাম্পাস হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারা বেগম।
সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করতে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। অথচ তামাক কোম্পানিগুলো সরকারের জনস্বাস্থ্য রক্ষার এই মহৎ উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করতে নানা অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ অপচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য, দেশের তরুণ সমাজকে ধূমপানের দিকে আকৃষ্ট করা, তারা আইন ভঙ্গ করে বিজ্ঞাপন করার পাশাপাশি, প্রণোদনা, রেস্টুরেন্টে ধূমপানের স্থান তৈরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে দূত নিয়োগ করছে। প্রজন্মকে ধূমপায়ী বানিয়ে বাণিজ্য করাই তাদের উদ্দেশ্য। দেশে ব্যবসা করা ২টি বিদেশী সিগারেট কোম্পানি এই বেআইনী কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছে। যার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অসংক্রামক রোগের চাপে বিপর্যন্ত। হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার এই তিন অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাকের ব্যবহার।
দেশের তিন কোটির বেশি মানুষ তামাক ব্যবহার করে। আর এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে তামাক ত্যাগ করাতে সরকার নানা উদ্যোগে নিয়েছে।
অপরদিকে কোম্পানিগুলো আইন ভঙ্গ করে নতুন ধূমপায়ী তৈরি এবং দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে বিপর্যন্ত করতে নানা অপকৌশল অবলম্বন করছে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। ১৫ লক্ষাধিক মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত নানা জটিল রোগে ভুগছে। প্রতি বছর ৬১ হাজারের অধিক শিশু পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এইসব অকাল মৃত্যু এবং ক্যান্সারের মত জটিল রোগ ভুক্তভোগী পরিবারকে সম্পূর্ণ এলামেলো করে দেয়। দেশের অর্থনীতিতেও তা ভয়ংকর নেতিবাচক প্রভাব রাখে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় এবং কর্মক্ষমতা হ্রাসের কারণে দেশে প্রতিবছর ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয় (২০২৮ সালের হিসাব)।
জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে ২০০৫ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ প্রণয়ন এবং সংশ্লিষ্ট বিধি জারি করা হয়। এই আইনের অন্যতম লক্ষ্য দেশে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে কমিয়ে আনা এবং নতুনদের তামাক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা-৫ এ তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও পৃষ্ঠপোষকতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি, দেশের তামাক কোম্পানিগুলো আইন ভঙ্গ করে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিক্রেতাদের উৎসাহিত করছে। সম্প্রতি দেশের ৫টি সিটি কর্পোরেশন, ১৬টি জেলা ও ৩২টি পৌরসভায় পরিচালিত জরিপে ২২,৭২৩ টি বিক্রয় কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রায় সাড়ে ২৭ লঙ্ঘন চিহ্নিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মীরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তামাকের বিজ্ঞাপন অপসারণ করেছে।
আপনারা অবহিত যে, তামাক কোম্পানির আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপনের মূল লক্ষ্য হলো কিশোর ও তরুণেরা যারা এখনো ধুমপান করতে শুরু করেনি। এদের কেউ আপনার আমার সন্তান বা নিকটজন। জনগণের সুরক্ষার জন্যই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে তামাকের বিজ্ঞাপন প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তামাক কোম্পানির প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় “বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণার পাশাপাশি বিক্রেতাদেরকে ‘পার্টনার হিসেবে চুক্তিবদ্ধ করে আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে।
এভাবে, বিজ্ঞাপন, প্রচারণা, সিগারেটের কার্টনে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান না করা, সিগারেটের ক্রেতা বিক্রেতাদের উপহার সামগ্রী প্রদান, বিনামূল্যে সিগারেট বিতরণ, শিশু-কিশোরদের কাছে সিগারেট বিক্রি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এসব কাজেও তামাক কোম্পানির সরাসরি সংযোগ রয়েছে। এছাড়া নাটক, সিনেমায় জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পীদের ধূমপান প্রদর্শন বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। তামাক কোম্পানিগুলো এসব নাটক, সিনেমায় পৃষ্ঠপোষকতাও করে থাকে। যা ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে ওটিটি (OTT) প্ল্যাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে নির্মিত ওয়েব সিরিজগুলো তরুণদের মাঝে অধিক জনপ্রিয়। এ সুযোগে ওটিটি (OTT) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে ধূমপানসহ তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহারের দৃশ্য দেখানো হচ্ছে যা তাদের ধূমপানে উৎসাহিত করছে।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তরুণদের সম্পৃক্ত করে ‘ব্যাটল অব মাইন্ড’ ‘এক্সসিড’ ইত্যাদি নামে প্রচারণামূলক কর্মসূচি চালাচ্ছে। সরকারের ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে ব্যাহত করতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে প্রত্যক্ষ প্রচার-প্রচারণা, বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ হওয়ায় তামাক কোম্পানিগুলো এসব কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের নাম ও ব্র্যান্ডকে তরুণদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা এম্বাসেডর নিয়োগ করছে। যা আইন লঙ্ঘন করে সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির আড়ালে ভালো ইমেজ গড়ে তোলার অপচেষ্টা। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে অনুষ্ঠান আয়োজন করে, অজস্র প্রতিযোগির মধ্যে গুটিকয়েককে চাকরি প্রদানের আড়ালে পণ্যের প্রচারণাই তাদের মূখ্য উদ্দেশ্য।
গবেষণায় দেখা যায়, তামাকের নেশায় আসক্তদের অধিকাংশ তরুণ ও কিশোর বয়সে ধূমপান শুরু করে। তাদের মধ্যে বন্ধুবান্ধব ও বিজ্ঞাপনের প্রভাব বেশি লক্ষ্য করা যায়। অস্ট্রেলিয়ায় একটি গবেষণায় অংশগ্রহণকারী এক-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন, তারা বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন দেখে সিগারেট ক্রমে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। এছাড়াও তামাক কোম্পানিগুলো মিথ্যা প্রচারণার মাধ্যমে ই-সিগারেটকে নিরাপদ হিসাবে তুলে ধরে তরুণদেরকে ই- সিগারেটে আসক্ত এবং বিভিন্ন প্রচারণার মাধ্যমে ই-সিগারেটকে আধুনিক ফ্যাশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। ক্ষতিকর বিধায় ভারতসহ বিশ্বের ৪৭টি দেশ ইতিমধ্যেই এটি নিষিদ্ধ করেছে।
আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, তামাক কোম্পানিগুলোর মদদে রেঙ্গুরেন্টগুলো ধূমপানের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে মানুষ রেস্টুরেন্টে যায় মূলত সুন্দর পরিবেশে কিছুটা সুন্দর সময় কাটানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার জন্য। কিন্তু বিদেশী কয়েকটি তামাক কোম্পানির সরাসরি মদদ ও অর্থায়নে দেশে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে অবাধে ধূমপানের স্থান গড়ে উঠছে এবং এতে কিছু কিছু মালিকও সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছেন। যদিও বাংলাদেশ রেস্টুরেন্ট এসোশিয়েশনের অধিকাংশ সদস্য এধরণের ধূমপানের স্থানের বিরোধিতা করে আসছেন।
বাজারে সিগারেট বিক্রয়ের ক্ষেত্রে তামাক কোম্পানিগুলো মূল্য কারসাজি করছে। তারা সিগারেটের প্যাকেটে খুচরা মূল্য লিখছে একধরণের, কিন্তু বিক্রির সময় তা ৫% থেকে ২০% পর্যন্ত বাড়িয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে। খুচরা বিক্রয় মূল্যের ওপর কর পরিশোধের বিধান থাকলেও প্রকৃতপক্ষে প্যাকেটে লেখা মূল্যের ওপর কর পরিশোধ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে, এভাবে তারা বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হচ্ছে। উল্লেখিত বিষয়ে কয়েকটি গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনও এই সত্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। এভাবেও তারা কয়েক মাসে ৫-৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়।
তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমাতে এবং এই খাত থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সামান্য পরিমাণ মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য স্পষ্টভাবে মুদ্রিত থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি ভোক্তা পর্যায়েও মোড়কে উল্লেখিত মূল্যেই সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য: সম্প্রতি গোল্ডলিফ, ক্যামেল, নেভি, শেখসহ বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের সিগারেটের মোড়কে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের (MRP) ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু বাজেট ঘোষণার প্রায় ৪ মাস অতিবাহিত হলেও বাজারে এখনও বিগত অর্থবছরে প্রস্তুতকৃত তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় করতে দেখা যাচ্ছে এবং পূর্বের ন্যায় ক্রেতাদের কাছ থেকে স্থানভেদে তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে মুদ্রিত মূল্যের থেকে ১০-৩৫ টাকা অধিক মূল্য আদায় করা হচ্ছে, যা রাষ্ট্রের আইনের লঙ্ঘন’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক গবেষণা ব্যুরোর একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, উল্লেখিত আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে।
প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ৩৫.৩% (৩ কোটি ৭৮ লক্ষ) মানুষ তামাকজাত দ্রব্য সেবন করে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বাড়িতে ৪ কোটি ১০ লক্ষ এবং গণপরিবহন ও জনসমাগমস্থলে ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ মানুষ ক্ষতির শিকার হয়। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে “জনস্বাস্থ্যের উন্নতি রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্ব” হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ৩ (ক) তে এফসিটিসির বাস্তবায়ন জোরদার করার কথা বলা হয়েছে। সার্বিকভাবে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য বাংলাদেশেকে তামাকমুক্ত করা আবশ্যক। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসডিজি অর্জনকে গুরুত্ব নিয়ে বাংলাদেশের ৭ম ও ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় তামাক নিয়ন্ত্রণকে যুক্ত করা হয়েছে।
তামাকের বহুমাত্রিক ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, জীব-বৈচিত্র্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং দূর্ত তামাক কোম্পানিগুলোর আগ্রাসী প্রচার-প্রচারণা থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে রক্ষায় সরকার দেশে বিদ্যমান আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বিদ্যমান আইনের উল্লেখযোগ্য সংশোধন ও
সংযোজন হচ্ছে- পাবলিক প্লেস, পরিবহনের আওতা বৃদ্ধি ও এ সকল স্থানে সব ধরণের তামাকজাত দ্রব্য সেবন নিষিদ্ধ, জরিমানা বৃদ্ধি এবং এতদস্থানে আলাদাভাবে ‘ধূমপানের স্থান’ না রাখা। তামাক কোম্পানির ‘সিএসআর’ কর্মকান্ড নিষিদ্ধ। বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য দৃষ্টির আড়ালে রাখা। খোলা ও খুচরা এবং ভ্রাম্যমান তামাক বিক্রয় নিষিদ্ধ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্যের দোকান না রাখা। তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ে CM সেন্স গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা। তামাক পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ৯০% করা। ই-সিগারেট বা ভেপিংয়ের আমদানি, উৎপাদন, বিক্রয়, বিপণন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা উল্লেখযোগ্য। বিগত দিনের মতো এবারও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন কার্যক্রমের শুরু থেকেই তামাক কোম্পানি ও তার দোসররা গুরুত্বপূর্ণ এ উদ্যোগটি বিফল ও বিলম্ব করতে তারা নানা মিথাচার এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে চলেছে।
তামাক কোম্পানি কোনভাবেই রাষ্ট্রীয় আইনের ঊর্ধ্বে নয়। জনস্বাস্থ্যকে প্রধান্য দিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ ও তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ’ অর্জন ত্বরান্বিত হবে। এতে আমাদের সন্তান ও প্রিয়জনদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। এজন্য তামাক কোম্পানির সব ধরণের অপতৎপরতা বন্ধ করা জরুরী।
সংবাদ সম্মেলনে ৮ টি সুপারিশ করা হয়। এগুলো হচ্ছে,
দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী চূড়ান্ত করা।
তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে নীতি সুরক্ষায় এফসিটিসি এর অনুচ্ছেদ ৫.৩ অনুসারে ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ গ্রহণ।
‘জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি’ দ্রুত চূড়ান্ত এবং দেশব্যাপী যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করা।
টাস্কফোর্স কমিটিসমূহ সক্রিয় করা, কমিটির ত্রৈমাসিক সভা নিয়মিতকরণ, সভার সিদ্ধান্তসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা।
আইন লঙ্ঘনের দায়ে তামাক কোম্পানি/প্রতিনিধিকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি জেল প্রদান।
আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মনিটরিং কার্যক্রমের সাথে বেসরকারী সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করা ও
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।