• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন

লামা রাজবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ কাজ থেমে আছে, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

লামায় ৯ মাসে স্কুল ভবন নির্মান কাজ, কয় বছরে শেষ হবে? এমন প্রশ্ন গুরুপাক খাচ্ছে সবার মনে। ২৫ সেপ্টেম্বর বিষয়টি নিয়ে মাসিক আইন শৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় তুমুল আলোচনা হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী মেয়াদ পুরিয়ে গেছে দেড় বছর আগে। ৭৪ লাখ টাকার কাজে ৫২ লাখ টাকা বিল নিয়ে কাজ করছে না ঠিকাদার। বান্দরবানের লামা উপজেলায় স্কুল ভবন নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। বিগত ২০২১-২২ অর্থ বছরে ইজিবি ওটিএম এর মাধ্যমে টেন্ডারে অংশ নিয়ে মিঃ ইউটিমং নামের এই ঠিকাদারি লাইসেন্সেয়ের অনুুকুলে কার্যাদেশ হয়। প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা মুল্যে লামা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড রাজবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নির্মান চুক্তি হয়। কার্যাদেশমতে ৪ তলা ফাউন্ডেশন দু’তলা দু’রুম করে চাররুমের একটি ভবন নির্মান হওয়ার কথা। রাজবাড়ি গ্রামের স্কুল গামী শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি এই প্রতিনিধি সরেজমিন অনুসন্ধান করেন। দেখা যায়, কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর, আনুমানিক ১২ লাখ টাকা ব্যয় করে ভবনের বেইস ও কয়েকটি পিলার করে কাজ বন্ধ রেখেছে পরিচালক চন্দন দাশ। জানাযায়, এই টুকু কাজ করে ৫২ লাখ টাকা বিল ছাড় করে নেয় চন্দন দাশ। দু’বছর সময়ের মধ্যেও প্রাপ্ত বিলের এক তৃতীয়াংশ কাজ না করেও কিভাবে দাপটে বেড়াচ্ছে প্রশাসনের সামনে এই চন্দন দাশ। এসব কথাসহ নানান মন্তব্যে এমন প্রশ্নের নিরব সম্মুখীন উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। মিঃ ইউটিমং এর নামে প্রাপ্ত কাজের পরিচালক চন্দন দাশের সাথে আলাপকালে সে জানায়, “শুধু আমার কাজের দিকে সবাই নজর রাখছে, কারন আমি হিন্দু। উপজেলায় আরো তিনটি বিদ্যালয়ের বিল পরিশোধ হওয়ার পরও ঠিকাদর কাজ করে নাই, সেগুলো কেউ দেখে না”। এগুলোর মধ্যে শীলেরতুয়া ও ডুইল্যাছড়িপাড়া বিদ্যালয় ভবন নির্মানেও বিলম্বের দাবি তোলেন চন্দন দাশ। চন্দন দাশ আরো বলেন “রাজবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভরাট কাজে নদী থেকে বালু উত্তোলন করার কারণে প্রশাসন কর্তৃক আমাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করার কারনে আমি কাজ বন্ধ রেখেছি”। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আবু হানিফ এর সাথে কথা হয়। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের কাজ বিলম্বের হেতু জানতে চেয়ে দরপত্র গ্রহনকারীকে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। বিষয়টি নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসারও জ্ঞাত আছেন। সর্ব শেষ ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলা প্রকৌশলী আবু হানিফ জানান, দু’চার দিনের মধ্যে কাজ পুনরায় আরম্ভ করবে বলে কথা দিয়েছে। তিনি বলেন, “লামা প্রকৌশল শাখার পক্ষ থেকে কাজ আদায়ে তাগাদা দেয়া হলেও ঠিকাদার কর্ণপাত করছে না। উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে কাজটি করিয়ে নেয়া যায়”। এ ব্যপারে জানতে নির্বাহী প্রকৌশলী বান্দরবানকে মোবাইলে কলকরা হয়, কিন্তু তিনি রেসপন্স করেননি। অপর দিকে চন্দন দাশের তত্বাবধানে নির্মাণাধীন আরো ১টি বিদ্যালয়; দরদরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ করেছে বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। জানাযায়, কাজের মান নিয়ে, প্রধান প্রকৌশলী বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। এসব বিষয়ে আলাপ হয় লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার এর সাথে। তিনি জানান, “ব্যাপারটি জানার জন্য চন্দন দাশকে জিজ্ঞাসা করতেই সে নানান ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করে। সে বলতে থাকে ” আমি হিন্দু বলে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আমাকে অফিসে ঢুকতে দেয়না”। তবে সে সহসায় কাজ করে দিবে বলে অঙ্গীকার দিয়েছে। কাজের মান ও অগ্রগামি করার জন্য প্রকৌশল বিভাগকে বলা হয়েছে। এই একটি স্কুল ভবন নির্মান কাজেই প্রমান করে এলজিইডি ঠিকাদারদের উপর কাজ আদায়ে কতটুকু কর্তৃত্ববান। কাজটি কেন থেমে আছে; কোনো মহল থেকে এর সঠিক উত্তর মিলছেনা। এদিকে পুরাতন ভবনে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয় নিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর মাসিক আইন শৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় তুমুল আলোচনা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ