• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

পবিত্র কোরআন হাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

সারাবিশ্ব ডেস্ক

পবিত্র কোরআন হাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এসময় সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি দেশে মুসলিমদের পবিত্র এই ধর্মগ্রন্থ অবমাননার নিন্দা জানান তিনি।

প্রেসিডেন্ট রাইসি বলেন, বিশ্ব ব্যবস্থা বদলে যাচ্ছে এবং পশ্চিমা আধিপত্যের যুগ শেষ হয়ে এসেছে। বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে অংশ নিয়ে ভাষণ দেন ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি হাতে পবিত্র কোরআনের একটি কপি ধরে রেখেছিলেন।

সাধারণ পরিষদে দেওয়া বক্তৃতায় রাইসি মূলত যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের আক্রমণ করতে বিশ্ব নেতাদের বার্ষিক প্রধান এই সম্মেলনের প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, একটি নতুন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার উত্থানের মধ্যে ‘বিশ্ব পরিবর্তন হচ্ছে’ এবং ‘পথটি অপরিবর্তনীয়’।

এই বছরের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ১৪০ টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। সেখানে রাইসি বলেন, আধিপত্য বিস্তারের পশ্চিমা নীতি এখন আর ‘বিশ্বের জন্য কার্যকরী নয়’ এবং শাসক অভিজাত ও পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষা করে আসা পুরোনো উদারনৈতিক ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে।

তিনি দাবি করেন, ‘বিশ্বকে আমেরিকানাইজ করার প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর ‘প্রতিরোধ এবং সচেতনতা’ আগের চেয়ে আরও বেড়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেলকে কটাক্ষ করে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, পশ্চিমারা পরিচয় সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। কারণ তারা বিশ্বকে ‘জঙ্গল’ এবং নিজেদেরকে ‘বাগান হিসেবে’ দেখে থাকে।

তিনি আরও বলেন, পশ্চিমা গণতন্ত্র ‘তার যাত্রার শেষ প্রান্তে পৌঁছেছে’ এবং পশ্চিম এশিয়ার জনগণ পশ্চিমা গণতন্ত্রের ‘সত্যিকারের অর্থ’ জানে। আর তা হলো – ‘অভ্যুত্থান, দখলদারিত্ব এবং যুদ্ধ।’

রাইসি জোর দিয়ে বলেন, তার দেশ ‘অঞ্চল এবং বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অভিন্নতার’ নীতির পক্ষে এবং ‘ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে বিশ্বের সাথে মিথস্ক্রিয়া করতে’ আগ্রহী। পশ্চিমা গণতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে স্কুলটি বিশ্বের জন্য একটি মডেল হতে চেয়েছিল তা পাঠ (শিক্ষা) হয়ে উঠেছে এবং এটি তার যাত্রার শেষের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।’

সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়ার সময় পবিত্র কোরআনের একটি অনুলিপি হাতে ধরে প্রেসিডেন্ট রাইসি ইউরোপের কয়েকটি দেশে মুসলিমদের পবিত্র এই গ্রন্থের অবমাননার সাম্প্রতিক ঘটনার নিন্দা করেন। তিনি বলেন, কোরআনের শিক্ষা ‘কখনও আগুনে জ্বলবে না।’

তিনি সুইডেনে কোরআন পোড়ানো এবং হিজাব পরিহিত মেয়েদের ফ্রান্সে স্কুলে যেতে বাধা দেওয়ার মতো ইসলামবিদ্বেষী কাজের নিন্দা করেন। রাইসি উল্লেখ করেন, পবিত্র কোরআন মানুষকে আধ্যাত্মিকতা, সত্য এবং নৈতিকতার শিক্ষা দেয়।

মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা ঠেকাতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাইসি বলেন, ‘বিশ্ব অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সম্মুখীন হচ্ছে। মানুষের মূল্যবোধকে দৃঢ় করতে পারে সৃষ্টিকর্তার এমন বাণীর চেয়ে ভালো আর কি হতে পারে?’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি- ঐশ্বরিক ধর্মের প্রতি সম্মান আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে ঐশ্বরিক ধর্মের প্রতি সম্মানের নিশ্চয়তা দেওয়া উচিত।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ