নিজস্ব প্রতিবেদক,
হাঁটি হাঁটি পায়ে গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) এক বছর পূর্ণ করল পরীমণির ছেলে শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য। জন্মদিনের জমকালো সেই আয়োজনে কোনো কমতি রাখেননি পরীমণি। পদ্মফুলের থিমে সাজানো সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন শোবিজ অঙ্গনের তারকারা এবং পরীর আত্মীয়স্বজনরা।
প্রথম জন্মদিনে ছেলেকে নিয়ে এক আবেগঘন চিঠি লিখলেন পরীমণি। যেহেতু রাজ্য এখনো বেশ ছোট, পড়ার বয়স হয়নি। তাই ছেলেকে চিঠিটি নিজেই পড়ে শোনালেন পরী। ছেলের সঙ্গে কাটানো বিভিন্ন মুহূর্তের স্থিরচিত্রগুলোকে একত্র করে একটি স্লাইডশো ভিডিও বানিয়ে গতরাতে ফেসবুকে খোলা চিঠি প্রকাশ করেন নায়িকা।
যেখানে ছেলেকে উদ্দেশ করে পরীকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বাজান, বড় হয়ে যখন তুমি এটা দেখবে তখন বুঝবে গলায় আটকে থাকা কান্না গিলে গিলে মা তোমাকে বলেছিল, এই সেই আনন্দের দিন যেদিন তুমি আমার বুকে এলে ছোট্ট দুটো হাত ধরে। কী মনে হচ্ছিল জানো? পরি সত্যিকারের দুটি ডানা পেল। কী আনন্দ! কী আনন্দ! বড় হয়ে লালপরি, নীলপরি হাজার পরির ভিড়ে শুধু জানবে তুমি এই মা পরির দুই ডানা হয়ে জন্মেছো। আমি তোমার বুকে কান পেতে শুনি মা! গায়ে গা ঘেঁষে, বুকে মিশে থেকে, ঘুমের ঘোরে বা জেগে থেকে তোমার চোখের দৃষ্টিজুড়ে যেন শুধু আমি মা আর মা।
ছেলের প্রতি মায়ের আবদার, “তোমার জগতজুড়ে যেন একটাই শব্দ ‘মা’ আর এই মা-টা আমিই। ভাবতে ভাবতে দেখো কখন যে আমাদের এক বছর পেরিয়ে গেল। তোমার গায়ের ঘ্রাণে বেঁচে আছি আমি। তোমার কান্নায়, হাসিতে, খেলায় কী দারুণ বেঁচে আছি আমি। দুঃখ আমাকে আর ছুঁতেই পারে না। তোমার সঙ্গে রূপকথার রাজ্যের পৃথিবী আমার। টগবগ করে রাঙা ঘোড়ায় আমার পালকির পাশে পাশে চলবে। পথে পথে যত দস্যুই আসুক তুমি বলবে, আমি আছি ভয় নেই মা। আমার সত্যিকারের বীরপুরুষ হবে তুমি। আমার সকল শূন্যতার পাশে তুমি এক হয়ে জুড়ে গেছো। তাই তো আমাদের এই সংখ্যা দশ। মনে রেখো, এই তারিখটা কিন্তু তোমার, এই দিনটা তোমার বিশেষ দিন। এই আজ যেমন আমি-আমরা সবাই মিলে তোমার জন্মদিনটা উদযাপন করছি, তুমিও কিন্তু কোরো। মা যখন থাকবে না বেঁচে তখনো করবে, ঠিক আছে? শত পূণ্যে আমি তোমায় পেয়েছি।”
চিঠির শেষ দিকে বিরহের সুর বেজে উঠল পরীর কণ্ঠে, ‘এই দেখো, আমরা তোমার প্রথম মাসের দশ তারিখটা সেলিব্রেট করছি। কত ছোট্ট তুমি! শুধু একটু কান্না করতে পারো তখন। তারপর দুই মাস, তিন, চার, পাঁচ, ছয় দেখো কেমন মাস চলে যায়। কাছের মানুষও ছেড়ে চলে যায়। সম্পর্কও কেমন বদলে যায়। শুধু বদলে যায়নি তোমার এই সুন্দর বিশেষ দিনে আয়োজন করে ঘর সাজানো, কেক কাটা। এই যে তোমার মা আছে তো আনন্দের কমতি কী করে হয় বলো? শোনো পদ্মফুল, এই দিনে তুমি কখনোই মন খারাপ করবে না, এই দিন তোমার জন্য অনেক আনন্দের দিন, খুশির দিন। ঠিক আজকের মতো তুমি এই দিনটাকে তোমার ভালোবাসার সবাইকে নিয়ে হইহুল্লোড়ে ভরিয়ে রেখো, কেমন? আমার পূণ্য, তুমি আমার পূণ্য। তুমি এই পৃথিবীর জন্য আলোর বাহক হও। মা তোমাকে অনেক ভালোবাসে, হ্যাপি বার্থডে বাবা।’
প্রসঙ্গত, জন্মদিনের আয়োজনে স্ত্রী পরীমণি এবং ছেলে রাজ্যর পাশে দেখা যায়নি শরিফুল রাজকে। গত বুধবার (৯ আগস্ট) রাতে ছেলেকে দেখতে পরীর বাসায় ছুটে যান রাজ। ছেলের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কাটিয়ে ফিরে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে দেখা করেননি পরীমণি।
মাস দুয়েক ধরে আলাদা থাকছেন পরীমণি ও শরিফুল রাজ। গত ২০ মে পরীমণিকে রেখে নিজের সব জিনিসপত্র নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসেন রাজ। এরপর ২৯ মে দিবাগত রাতে রাজের ফেসবুক আইডি থেকে রাজ ও তিন অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত কিছু ছবি ও ভিডিও ফাঁস হয়। তারপর থেকে দুজনের সম্পর্কে আরও অবনতি ঘটে।