ঢাকা বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ৩০, ২০২৫

গাজা খালি করার ট্রাম্পের প্রস্তাবে আরব বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ


বর্তমান কথা ডেস্ক
৫:৪৩ - মঙ্গলবার, জানুয়ারী ২৮, ২০২৫
গাজা খালি করার ট্রাম্পের প্রস্তাবে আরব বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিবাদ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা উপত্যকা খালি করার প্রস্তাব দেওয়ার পর আরব বিশ্বে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। গাজার বাসিন্দাদের মিশর ও জর্ডানে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়ে ট্রাম্প বলেন, গাজা সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এবং এটি পরিষ্কার করার জন্য সেখানকার অধিবাসীদের সরিয়ে দেওয়া উচিত।

আরব দেশগুলোর কঠোর প্রতিক্রিয়া:
জর্ডান ও মিশর ট্রাম্পের প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি বলেন, “ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির প্রতি আমাদের অবস্থান দৃঢ় এবং পরিবর্তন হবে না। ফিলিস্তিন ফিলিস্তিনিদের জন্য।” মিশরও ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবকে স্পষ্টভাবে নাকচ করে বলেছে, “এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে মানবিক সংকট সৃষ্টি করবে।”

ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের নিন্দা:
পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ট্রাম্পের প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালের মতো আরেকটি বিপর্যয় আমরা মেনে নেব না।” তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমি ও পবিত্র স্থান ত্যাগ করবে না এবং যেকোনো বাস্তুচ্যুতির প্রস্তাব তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করবে।

গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতিক্রিয়া:
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলার চেষ্টা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ইসলামিক জিহাদ এক বিবৃতিতে বলেছে, “এই প্রস্তাব ইসরায়েলকে গণহত্যা চালানোর জন্য আরও উৎসাহিত করবে।”

গাজার বর্তমান পরিস্থিতি:
ট্রাম্প বলেছেন, ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে গাজা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি গাজার মানুষদের সরিয়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পুরো এলাকা পরিষ্কার করার পরিকল্পনা করছেন। তবে জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই প্রস্তাবকে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে দেখছে।

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি:
গাজাবাসীরা ট্রাম্পের বক্তব্যকে নাকবা (১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনিদের গণহারে উচ্ছেদ) স্মরণ করিয়ে দেওয়ার মতো বলছেন। তারা তাদের ভূমি ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছেন, এই প্রস্তাব তাদের অস্তিত্বকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা।

জাতিসংঘের উদ্বেগ:
জাতিসংঘ জানিয়েছে, জর্ডান ইতিমধ্যে প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থীর জন্য আশ্রয় দিয়েছে। নতুন করে বাস্তুচ্যুতির প্রস্তাব অঞ্চলটির স্থিতিশীলতাকে চরমভাবে হুমকির মুখে ফেলবে।

ট্রাম্পের এই বিতর্কিত প্রস্তাব বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছে এবং গাজার সংকট সমাধানের বদলে এটি আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।