নজরুল ইসলাম জুলু:
রাজশাহীতে দিন দিন বেড়েই চলেছে মশার উপদ্রব। দিন-রাত বলে কোনো সময় নেই। মশার মাত্রাতিরিক্ত আক্রমণে অতিষ্ঠ নগরীর মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছেন। মশার কয়েল, স্প্রে ও ইলেকট্রিক ব্যাট ছাড়াও মশারি টানিয়েও মশার অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছেন না তারা। এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মশা নিধনের অভিযান ঝিমিয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নগরীর ভুক্তভোগী মানুষ। আর এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী, স্বজন, বৃদ্ধ ও শিশুরাও।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও দিনের বেলায় মশার কামড়ে কাহিল হয়ে পড়ছেন। রাজশাহী মহানগরীর তেরখাদিয়া এলাকার কলেজ শিক্ষক মহিবুল হক জানান, রাজশাহী নগরীতে মশার উপদ্রব মারাত্মকভাবে বেড়েছে। বলার মতো নয়। মশার উপদ্রবে নগরবাসীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। বহুতল ভবনের আট-দশ তলাতেও মশার উপদ্রব দল। আর নিচের তলার অবস্থাটা দিনে-রাতে প্রায় সমান। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিপণি বিতান, মসজিদ-মাদ্রাসাতেও মশার অবাধ বিচরণে জর্জরিত নগরজীবন।
টিকাপাড়া শিক্ষার্থী নাজনীন বলেন, গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মশা। সাগরপাড়া এলাকার শিখা বলেন, দিনের বেলায় মশারি দিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না মশার আক্রমণ। দিনে-রাতের এমন সময় নেই যে মশার উপদ্রব কম আছে।
শুধু মেস বা বাসাবাড়িতেই নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও মশার উপদ্রব চরমভাবে বেড়েছে। রাজশাহী কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আলমগীর সালেহী বলেন, ক্লাসেও মশার কামড় হজম করতে হচ্ছে। রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী নজিবুর রহমান জানান, মশার কামড়ে ক্লাসে বরাবরই মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় মশার কামড়ে অতিষ্ঠ শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন।
মশার কামড়ে অনেক বিপজ্জনক রোগের জন্ম হয়। মশার কামড় ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও চিকুনগুনিয়ার মতো মারাত্মক রোগ ছড়াতে পারে। অ্যানোফিলিস, কিউলেক্স, এডিস, হেমাগোগাস, এই কয়েক প্রজাতির মশা থাকলেও আমাদের দেহে সাধারণত কামড়ায় ‘অ্যানোফিলিস’ প্রজাতির স্ত্রী মশা। ‘কিউলেক্স’ প্রজাতির মশা আকারে বড় হয়।
এদিকে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের রোগী ও স্বজনরাও। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোর নিচতলাতে মশার উপদ্রবে রোগী ও স্বজনরা একবিন্দুও ঘুমাতে পারেন না। রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ সরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, মশা নিধনে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি ক্রাশ প্রোগ্রাম চলছে। নগরী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ চলছে। যেসব স্থানে মশার লার্ভা তৈরি হয়, সেসব স্থান ড্রেন, নর্দমা পরিষ্কার করা হচ্ছে। মশা নিধনের নিয়মিত প্রক্রিয়া স্প্রে অব্যাহত রয়েছে।