পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ
পাকিস্তানের শিল্পনগরী ফয়সালাবাদের জারানওয়ালা শহরে খিস্টানদের ওপর হামলা ও তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের এই ঘটনা ঘটেছে
পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি শহরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে দেশটির একদল উন্মত্ত জনতা। এ সময় খ্রিস্টানদের বেশ কিছু বাড়িঘরও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সেখানকার পুলিশ ও খিস্ট্রান নেতারা জানিয়েছেন।
বুধবার পাকিস্তানের শিল্পনগরী ফয়সালাবাদের জারানওয়ালা শহরে খ্রিস্টানদের ওপর হামলা ও তাদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের এই ঘটনা ঘটেছে। ফয়সালাবাদ পুলিশের মুখপাত্র নাভিদ আহমদ বলেছেন, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দুই ব্যক্তি পবিত্র কোরআনের অবমাননা করেছেন বলে অভিযোগ ওঠার পর বিক্ষুব্ধ জনতা ওই সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন ডটকমকে বলেছেন, ব্লাসফেমির অভিযোগে জারানওয়ালা তহসিলের বেশ কয়েকটি গির্জা ভাঙচুর করেছে উত্তেজিত জনতা।
জারানওয়ালা তহসিলের যাজক ইমরান ভাট্টি বলেন, ইসা নাগরী এলাকায় অবস্থিত স্যালভেশন আর্মি গির্জা, ইউনাইটেড প্রেসবিটারিয়ান গির্জা, অ্যালাইড ফাউন্ডেশন গির্জা এবং শেহরুনওয়ালা গির্জা লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ব্লাসফেমির দায়ে অভিযুক্ত এক খ্রিস্টান পরিচ্ছন্নতা কর্মীর বাড়িও গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ খ্রিস্টানদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী ওই এলাকার একটি মহাসড়ক অবরোধ করেছে।
পুলিশের মুখপাত্র আহমদ সহিংসতার বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানাননি। এছাড়া কোনও গির্জা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কি না সেটিও নিশ্চিত করেননি তিনি।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অনেক পোস্টে বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনার পাশাপাশি কয়েকটি গির্জায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। পাঞ্জাবের পুলিশ প্রধান উসমান আনোয়ার বলেছেন, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সাথে আলোচনা করছে এবং এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে।
পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। যদিও এই অভিযোগে দেশটিতে এখন পর্যন্ত কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। তবে দেশটিতে বিচারের আগেই অনেক অভিযুক্তকে বিক্ষুব্ধ জনতার পিটিয়ে হত্যার রেকর্ড রয়েছে।