লামায় দুই দিনব্যাপী জেলা সাহিত্য মেলা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে লামা টাউন হলে উপজেলার কবি ও সাহিত্যিকদের নিয়ে এ মেলার উদ্বোধন করা হয়। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বাংলা একাডেমি ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র’র ব্যবস্থাপনায় এবং উপজেলা প্রশাসন, লামা, বান্দরবান পার্বত্য জেলা’র সহায়তায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ১ম দিন মেলা উদ্বোধনী শেষে স্থানীয় কবিদের আবৃতি শুনেন সবাই। লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তফা জাবেদ কায়সার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা জামাল। প্রধান অতিথি বলেন, সাহিত্য ধ্বংসে বিগত দিনে রমনা বটমুলে হামলা হয়েছিল। সাহিত্যের আবহমান কাল থেকে যে চর্চা চলে আসছে, সেটাকে স্বচ্ছল রাখার প্রয়াস নিয়েছেন বর্তমান সরকার। এই প্রজন্ম থেকে সাহিত্যিক, কবি জন্মাবেন তবেই গ্রাম বাংলার চিরায়ত সাহিত্যের সে রুপ ফুটে উঠবে। সাহিত্যের রসরুপ ফিরিয়ে আনতে রোবট স্বভাব পরিহার করার জন্য ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান। মেলায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লামা ইসলামিয় ফাজিল মাদরাসার প্রভাষক তমিজ উদ্দিন। তিঁনি সাহিত্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। সাহিত্য ক্রমবিকাশে করণীয় কি, সাহিত্যে প্রযুক্তির ব্যবহার, সাহিত্য স্যস্কৃতি চর্চার আসর করতে হবে মত দেন তিনি। সাহিত্যকে যদি শরীর বোঝানো হয়, তবে বলতে হবে এর সাজানো অনুষঙ্গকে সাহিত্য বলতে হবে। তিনি আরো বলেন, ‘অখন্ড ভাবকে খন্ড খন্ড করে তা নিজের করে সবাইকে দেবো, এটাই সাহিত্য’। কবি মাইকেল মধুসূদন এর সনেট এর গুরুত্ব অনুধ্বান, জীবনান্দ দাশসহ বাংলা সাহিত্যের কয়েকজন প্রাণ পুরষকে সাহিত্যে রস আস্বাদনের প্রেরণা হিসেবে নেয়ার আহ্বান জানান। প্রভাষক তমিজ আরো বলেন, ‘আমাদের সাহিত্য সমাজ কালে কালে বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে। এ থেকে উত্তরণে সরকার কাজ করছে, এগিয়ে আসতে হবে প্রজন্মকে’। আলোচনায় লামা প্রেসক্লাব সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রিয়দর্শী বড়ুয়া হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, নতুন প্রজন্মের হাতে মোবাইল রয়েছে বই নেই। মানুষ দুনিয়ার একটি নির্দিষ্ট সীমারেখায় নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। সাহিত্যের রুপ রঙ এবং সাধ নিতে হলে সারা দুনিয়া বিচরণ করতে হবে। বিশ্ব নাগরিক হয়ে বাঁচতে হবে। বই হচ্ছে পৃথিবী বিচরনের বাহন। বই পড়ার অভ্যাস মানুষকে মননশীল বানায়। সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে জীবন ও সমাজ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেব অন্যান্যদের মাঝ ছিলেন, পৌর মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম, সরকারি মাতামুহুরী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ রুহুল আমিন, প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইন্সটিটিউটের পরিচালক মং নু চিং। মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও লাইব্রেরিয়ানরা বইয়ের স্টল করেন।