১৫ জুন চকরিয়াস্থ হোটেল এরিস্টোডাইন হলরুমে আয়োজিত “সাংগু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন” বিষয়ক কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি উপ-প্রধান বন সংরক্ষক ও প্রকল্প সমন্বয়ক CHTWCA মোঃ মঈনুদ্দিন খান বলেন, এই প্রকল্পের একটি অংশ ‘ওয়াটার শেড কো- ম্যানেজমেন্ট’ যা বন বিভাগের সাথে রিলেটেট। সাংগু মৌজার প্রস্তাবিত ভূমিটি ৬ ধারার আওতায় আনা হয়। এর পর ২০১০ সালে বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। তিঁনি আরো বলেন, জীব বৈচিত্র রক্ষায় ও জীবন জীবীকায়নের বিষয়টি প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। কার্যক্রম গ্রহনের ক্ষেত্রে বাস্তবায়নকারী ও প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারীদের একসাথে এক টেবিলে বসে আলোচনার পর্ব শেষ করেছেন ইউএনডিপি। পানির নিরাপত্তা না থাকলে জীবনের অস্তিত্বও থাকতে পারে না। সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে, তার সাথে মিল রেখে পাহাড়ের তিন জেলার উন্নয়ন করছেন সরকার। প্রকল্পটি বন বিভাগের রিজার্ভ ভূমিতে সেখানে ৩৩টি পাড়ার প্রকৃতি ঠিক রেখে সমন্বিতভাবে ম্যানেজমেন্ট করা হচ্ছে। এটা ব্যবস্থাপনার জন্য ২০১৭ সালে সরকার এবং ওই এরিয়ার মানুষের ঘুর্নিমান আয়ের উৎস তৈরির রুপরেখা তৈরি করেছেন। বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক বন সংরক্ষক বিপুল কৃষ্ণ দাশ বলেন, “সাংগু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য” প্রকল্পটি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প। এটি বাস্তবায়ন হলে কেস মেন্ট এরিয়ার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হবে বেশি। পানিসহ প্রাকৃতিক সম্পদের মজুদ বৃদ্ধি হবে। ইউএনডিপি এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায় থেকে প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারীদের সাথে সমন্বয় সাধনসহ টেকনিকেল সহায়তা করছেন। তিনি বলেন, কেস মেন্ট এরিয়ার বাসিন্দাদের নিয়ে বিগত ২২ জুন/২২ সালে ইউএনডিপিসহ আমরা কর্মশালা করেছিলাম। সাঙ্গু মৌজার স্থানীয়দের মতামতের ভিত্তিতে ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার কাজ এগিয়ে নিয়েছি। কর্মশালায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টিভিটির প্রেজেন্টেশনের উপর ভিত্তি করে, অংশগ্রহণকারীরা উন্মুক্ত আলোচনা করেছেন। “সাংগু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন” বিষয়ক কর্ম শালার সভাপতি আয়োজক লামা বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল হক বেলাল বলেন, সরকারের বন সম্পদ রক্ষা ও বন উন্নয়নে আমরা নির্ধারিত কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করি। বন ও পরিবেশ-প্রতিবেশ এর সূচকে এই অঞ্চল এগিয়ে আছে। স্থানীয়রা সচেতন হলে এখানকার জীব বৈচিত্র্য জীবীকায়নের সফলতা আসবে। ইউএনডিপি প্রতিনিধিরা সাঙ্গু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের (SWS) খসড়া ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। এ সময় প্রকল্পের খসড়া প্রনয়নকারী ইউএনডিপির তারেক আকবর অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন। CHTWCA, SID-CHT, UNDP বান্দরবান জেলা ব্যবস্থাপক খুশি রায় ত্রিপুরা প্রকল্পের ডিজাইন ও টেকনিকাল বিষয় উপস্থাপন করেন। অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য দেন বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ মাহবুবুর রহমান, জেলা পরিষদ বীর কন্যা ফাতেমা পারুল, কক্সবাজার দক্ষিন ডিএফ মো: সারোয়ার আলম, বান্দরবানের ২ ডিএফও, লামা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ জাহেদ উদ্দিন, লামা প্রেসক্লাব সভাপতি প্রিয়দর্শী বড়ুয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিম উল্যাহ চৌধুরী, ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল হোছাইন চৌধুরী প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লামা বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো: গিয়াস উদ্দীন। কর্মশালায় সাংবাদিক, স্থানীয় নৃ-গোষ্ঠীর নেতারা সুশীল সমাজের প্রতিনিধি CHTWCA, SID-CHT, UNDP-এর প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে ২য় পর্বে সিএইচটিডব্লিউসিএ), সাঙ্গু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের সংশোধিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় আপডেট, SWS জীববৈচিত্র্য মূল্যায়নের সুপারিশ করা হয়। স্বল্প-মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির উপর ফোকাস সহ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার লক্ষ্য থাকা উচিত। আর্থ-সামাজিক বেসলাইন মূল্যায়নের প্রধান ফলাফলগুলি সংশোধিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। নিয়মিতভাবে স্রোত/চর সংরক্ষণের বিকল্প থাকা উচিত। ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা সহ বর্তমান রাজনৈতিক গতিশীলতা পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। SWS-এ কাঠ-ভিত্তিক ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। বাঁশ, কাঠ, পাথর, বালি ইত্যাদির মতো বনজ দ্রব্য আহরণে বাইরের অবৈধ ব্যবসায়ীদের সীমাবদ্ধ করার জন্য স্পষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সংশোধিত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় জীববৈচিত্র্য মূল্যায়নের সুপারিশ করা হয়।