মোঃ মহসিন তালুকদার, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
কিস্তির টাকা পরিষদ করতে না পারায় মাদারীপুরের কালকিনিতে তিন সন্তানের এক জননীকে ৮ ঘন্টা আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে গনউন্নয়ন প্রচেষ্টার (এনজিও) ম্যানেজারের বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯এ ফোন দিয়ে থানা পুলিশের সহযোগীতায় ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করেন।
রোববার দিবাগত রাত ১১টার দিকে কালকিনি উপজেলার রাজদী গ্রামে গনউন্নয়ন প্রচেষ্টার অফিস কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আজ সোমবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রশাসন ও ভূক্তভোগী পরিবার।
পুলিশ ও ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের বাঘরিয়া গ্রামের অসহায় ওই গৃহবধু গনউন্নয়ন প্রচেষ্টা (এনজিও) কালকিনি শাখা থেকে সম্প্রতি ৮০ হাজার টাকা ঋন গ্রহন করেন। ওই গৃহবধু ৩২ হাজার টাকার ঋন পরিশোধ করেন। পরে গৃহবধুর স্বামী বিদেশ গিয়ে নিখোঁজ থাকেন। ফলে ওই ঋনের বাকী টাকা পরিশোধ করতে না পারায় রোববার দুপুর তিনটায় গনউন্নয়ন প্রচেষ্টা (এনজিও) কালকিনি শাখা ব্যাবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে অফিস কর্মী সুবেন্দু বৈদ্য ও রুপালী বৈরাগী ওই গৃহবধুকে তার স্বামীর বাড়ি থেকে তাদের অফিস কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ সজিব স্থানীয় লোকজন নিয়ে ৯৯৯এ ফোন দিয়ে থানা পুলিশের সহযোগীতায় রাত ১১ টার দিকে ওই এনজিও কার্যালয় থেকে তিন সন্তানের জননীকে উদ্ধার করেন।
এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হলে ওই এনজিও কর্মীদের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং অভিযুক্তদের বিচার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
অসহায় তিন সন্তানের জননী কান্না জরিত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী নিখোঁজ থাকায় ঋনের কিস্তি পরিশোধ করতে পারি নাই। তাই ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন, অফিস কর্মী সুবেন্দু বৈদ্য ও রুপালী বৈরাগী আমাকে আমার স্বামী বাড়ি থেকে নিয়ে তাদের অফিসে আটকে রাখেন। আমি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোন রকম সংসার চালাই। আমি কি করে এ ঋনের টাকা পরিশোধ করবো বলতে পারিনা। ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ সজিব বলেন, আমার এলাকার ঐ গৃহবধুকে আটকে রাখার অভিযোগ পেয়ে ৯৯৯এ ফোন দিয়ে স্থানীয় লোকজন নিয়ে থানা পুলিশের সহযোগীতায় তাকে উদ্ধার করি। স্থানীয় রফিক ও রাজ্জাকসহ বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গনউন্নয়ন প্রচেষ্টা (এনজিও) এমন কাজ মেনে নেয়া যায় না। আমরা এর বিচার চাই। তবে এর পুর্বেও তারা এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ব্যাবস্থাপক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কিস্তির টাকা পওনা থাকায় ওই গৃহবধুকে অফিসে আনা হয়েছিলো।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ বলেন, ঋনের জন্য এক গৃহবধুকে আটকে রাখার বিষয়টি জেনেছি। এবং পরে থানা পুলিশ ওই গুহবধুকে উদ্ধার করেছে।