আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) রায়ের প্রতিক্রিয়ায় নতুন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। ভিডিওটিতে তিন নারী জিম্মিকে কথা বলতে দেখা গেছে।
শুক্রবার প্রকাশিত সেই ভিডিওর দৈর্ঘ্য ৫ মিনিট। এতে দেখা যায়, তিন নারীই বয়সে তরুণী এবং তাদের মধ্যে দু’জন সেনা সদস্য। অন্যজন বেসামরিক। তরুণীরা জানিয়েছেন, গত ১০৭ দিন ধরে বন্দি রয়েছেন তারা।
ভিডিও ফুটেজে ওই তিন তরুণীর কেউই নিজেদের নাম-ঠিকানা বলেননি। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে সংবাদসংস্থা এএফপি তাদের নাম-পরিচয় জেনেছে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে এই বার্তা সংস্থাটিও তা প্রকাশ করেনি।
শুক্রবারের রায়ে বিশ্ব আদালত গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার পাশাপাশি উপত্যকায় ত্রাণ সরবরাহ বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন। রায় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভিডিওটি প্রকাশ করে হামাস। ধারণা করা হচ্ছে, গত রবিবার ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
তবে কবে নাগাদ এই জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত ভিডিওতে পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অভ্যন্তরে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এ সময় হামাস যোদ্ধারা সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও আড়াই শতাধিক ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। এরপর ২৮ অক্টোবর থেকে গাজায় স্থল অভিযানও শুরু করে ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনী।
ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গত প্রায় সাড়ে চার মাসে গাজায় নিহত হয়েছে ২৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এর ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬৪ হাজার মানুষ।
এছাড়াও ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে ধসে যাওয়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংস্তূপের নীচে চাপা পড়ে আছে আরও কয়েক হাজার মানুষ।
গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘোষিত এক মানবিক যুদ্ধবিরতির সাত দিনে মোট ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বাকি ১৩২ জন এখনও তাদের হাতে আটক রয়েছে। এই ১৩২ জন জিম্মির মধ্যে ভিডিওর তিন নারীও রয়েছে।