জেলা প্রতিনিধি,
মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার আড়পাড়ায় অবস্থিত সুপ্রিয়া ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। যেখানে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছে শিশু, কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক রোগীরা। আগত রোগীদের ফাঁদে ফেলে দেওয়া হচ্ছে হরেক রকমের টেষ্ট ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা। আর এই কাজটি করছেন পল্লী চিকিৎসক সুভাষ। এমবিবিএস ডাক্তার না হয়েও তিনি নিজেই রোগী দেখছেন। বিভিন্ন টেস্ট ও পরীক্ষার নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, মাধ্যমিক পাশ না করেও এক্ম-রে এর দায়িত্বে আছেন হাসান শিকদার নামের এক ব্যক্তি। তার নেই কোন প্রশিক্ষণ, নেই কোন সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের সনদ। অথচ তিনি নিয়মিত এক্সরে করে আসছেন। দেখা মেলে গৌতম দে নামের একজন প্যাথলজিস্টের। তিনি নাকি ডিপ্লোমা পাশ অথচ দেখাতে পারেনি স্বীকৃত কোন প্রতিষ্ঠানের সনদ।
ল্যাবের মূল দায়িত্বে থাকা মনজিত মন্ডল, যার নেই কোন প্রশিক্ষণ সনদ, নেই কোন অভিজ্ঞতা। অথচ দিনের পর দিন রোগীদের টেষ্ট বাণিজ্যের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। গ্রামের সহজ সরল রোগীরা হচ্ছেন প্রতারণার শিকার।
সুপ্রিয়া ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়মিত রুগী দেখছেন ৪২ তম বিসিএস এর ডাঃ হরষিত বিশ্বাস। তিনি আবার শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্মের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে অফিস টাইম ফাঁকি দিয়ে সুপ্রিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ সাপেক্ষে অনুসন্ধানী টিম সরেজমিনে দেখতে পান ডাঃ হরষিত বেলা ১:৩০ এ সুপ্রিয়া ডায়গনস্টিক সেন্টারে উপস্থিত ছিলেন তার চেম্বারে। অফিস টাইমে উক্ত স্থানে উপস্থিত থাকার বিষয়টি হাতেনাতে ধরার পর ডাঃ হরষিত সাংবাদিকদের ক্যামেরা দেখে ক্ষেপে যান এবং সাংবাদিকদের উপর প্রচন্ডভাবে চড়াও হন। এমনকি গায়ে হাত তুলতে উদ্যত হন। একপর্যায়ে সাংবাদিকদের জেরার মুখে তিনি অফিস টাইমে রোগী দেখার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর সুপ্রিয়া ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক সুভাষ চন্দ্র ডাক্তার হরষিত বিশ্বাসকে দিয়ে সাংবাদিকদের হেয় করার জন্য শালিখা থানায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে সাংবাদিকরা ডাঃ হরষিত বিশ্বাস কে ভুয়া ডাক্তার বলে সাব্যস্ত করেছেন। অথচ অভিযোগের বিপরীতে সাংবাদিকদের দাবি সরকারি অফিস না করে ডাঃ হরষিত নিয়মিত সুপ্রিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখতেন। তাকে ভুয়া ডাক্তার বলে কোন মন্তব্য করা হয়নি। বরং এই বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি উল্টো সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের মালিক মুঠো ফোনে জানান, আমার প্রতিষ্ঠানের সব কাগজপত্র ঠিক আছে। নিয়মিত রোগীরা ভর্তি হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গুর মতো মারাত্মক রূগীদেরকে ও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ সকল অভিযোগের ব্যাপারে মাগুরা জেলা সিভিল সার্জন জানান, সুপ্রিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিষয়টি শুনেছি এবং সে বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।