সারাবিশ্ব ডেস্ক
বিশ্বের পঞ্চম দেশ হিসেবে চাঁদে নভোযান পাঠিয়েছে জাপান। দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জাক্সা) সার্বিক তত্ত্বাবধানে বৃহস্পতিবার ভোরবেলায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ তানেগাশিমার লঞ্চপ্যাড থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে নভোযানটি।
জাপানের আগে চাঁদে নভোযান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন। গত জুলাই মাসে নিজেদের তৈরি নভোযান চন্দ্রযান ৩ পাঠিয়ে এই তালিকায় প্রবেশ করেছে ভারতও। আজ বৃহস্পতিবারের পঞ্চম দেশ হিসেবে সংক্ষিপ্ত এ তালিকায় নিজের নাম লেখাল জাপান।
জাক্সা নিজেদের প্রথম এই চন্দ্রাভিযানের নাম রেখেছে ‘মুন স্নাইপার মিশন’। বৃহস্পতিবার অনলাইনে নভোযানটির উৎক্ষেপণ দৃশ্য দেখেছেন ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।
জাপানি এই নভোযানটির ৩টি অংশ রয়েছে- একটি এইচ-২এ রকেট, তার সঙ্গে সংযুক্ত একটি ল্যান্ডার ‘স্মার্ট ল্যান্ডার ফর ইনভেস্টিগেটিং মুন’ (স্লিম) এবং অত্যাধুনিক এক্স-রে ইমেজিং স্পেকট্রোস্কপি মিশন (এক্সরিজম) প্রযুক্তির একটি স্যাটেলাইট।
রকেটটি প্রস্তুত করেছ জাপানি বহুজাতিক কোম্পানি মিৎসুবিশি, এক্সরিজম প্রযুক্তির স্যাটেলাইটটি নাসা ও ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে প্রস্তুত করেছে জাক্সা এবং স্লিম ল্যান্ডারটি জাক্সার নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি।
এই ল্যান্ডার স্লিমের আরেক নাম ‘মুন স্নাইপার’ রেখেছে জাক্সা। চন্দ্রাভিযানের নামকরণও করা হয়েছে ল্যান্ডারের নাম অনুসারে।
এই স্লিম বা মুন স্নাইপারের আকার-আয়তন একটি সাধারণ টেনিস বলের চেয়ে একটু বড়। জাক্সা জানিয়েছে, এ পর্যন্ত চাঁদে অবতরণ করা সব ল্যান্ডারের চেয়ে এই ল্যান্ডারটি আকারে ছোটো, উঁচু-নিচু ভূমিতে চলাচলের জন্য অনেক দক্ষ এবং নির্দিষ্ট স্থানে অবতরণে পারঙ্গম।
চাঁদের অভিকর্ষবল পৃথিবী থেকে ভিন্ন হওয়ার কারণে এ পর্যন্ত কোনো ল্যান্ডার পূর্বনির্ধারিত সুনির্দিষ্ট স্থানে অবতরণ করতে পারেনি, বেশ কয়েক কিলোমিটার এদিক-সেদিকে নেমেছে। বৃহস্পতিবার নভোযান উৎক্ষেপণের আগে জাক্সার কর্মকর্তারা এএফপিকে জানান, তাদের ল্যান্ডার মুন স্নাইপারের ক্ষেত্রে এই তারতম্য কমিয়ে আনা হয়েছে মাত্র ১০০ মিটারে। অর্থাৎ চাঁদের যে এলাকা অবতরণের পরিকল্পনা রয়েছে এই ল্যান্ডারটির, তার বড়জোর ১০০ মিটার ডানে-বামে বা সামনে-পেছনে নামবে মুন স্নাইপার।
জাক্সার এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত চাঁদে যতগুলো মিশন পরিচালিত হয়েছে, প্রতিটি মিশনে ল্যান্ডারের জন্য চাঁদের সুবিধাজনক স্থান খোঁজা হয়েছে। কিন্তু মুন স্নাইপারের ক্ষেত্রে তার কোনো প্রয়োজন নেই। ল্যান্ডারটির নকশা ও প্রযুক্তি এমন যে এটি চাঁদের যে কোনো জায়গায় অবতরণ করতে সক্ষম।’
‘স্লিম বা মুন স্নাইপার নতুন প্রজন্মের ল্যান্ডার। আমাদের আশা, এই অভিযান সফল হলে চন্দ্রাভিযান নতুন এক যুগে প্রবেশ করবে।’