• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০১ অপরাহ্ন

ইতালি উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে শতাধিক

অনলাইন ভার্সন
অনলাইন ভার্সন
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

ডেস্ক:

ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় উত্তাল সাগরে পাথরের সঙ্গে সংঘর্ষে নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। রোববার ইতালির উপকূলের স্টেকাটো ডি কুত্রর কাছে এই নৌকাডুবির ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ৫৮ জন অভিবাসীর প্রাণহানির তথ্য জানিয়েছিল দেশটির পুলিশ ও উপকূলরক্ষী বাহিনী।তবে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির দেয়া তথ্যে নৌকাডুবির ঘটনায় ইতালিতে এখন পর্যন্ত ৬২ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ১২ জন শিশু রয়েছে। এছাড়া আরও কয়েক ডজন মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন; যাদের জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ। যে কারণে প্রাণহানির সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।রোববার ইতালির দক্ষিণের ক্রোটোনের কাছে নোঙ্গরের চেষ্টা করার সময় নৌকাটি পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর টুকরো টুকরো হয়ে যায়। নৌকাটি প্রায় ২০০ জন অভিবাসীকে বহন করেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।এই নৌকায় আফগানিস্তান, পাকিস্তান, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইরাক ও ইরানের নাগরিকরা ছিলেন। ইতালির পূর্ব ক্যালাব্রিয়া উপকূলের সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্ট স্টেকাটো ডি কুত্রর কাছ থেকে অভিবাসীদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।দেশটির উপকূলরক্ষী বাহিনী বলেছে, ৮০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নৌকাটি ডুবে যাওয়ায় কয়েকজন অভিবাসী সাঁতরে তীরে পৌঁছান। এছাড়া আরও কয়েক ডজন উত্তাল সাগরে ভেসে গেছেন।ইতালির কাস্টমস পুলিশ বলেছে, অভিবাসীদের পাচারের অভিযোগে নৌকাটির বেঁচে যাওয়া এক যাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।নৌকার যাত্রীদের অনেকেই পাকিস্তানের নাগরিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, ডুবে যাওয়া অভিবাসীদের মধ্যে দুই ডজনেরও বেশি পাকিস্তানি রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তানিদের ব্যাপারে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য কূটনীতিকদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।উদ্ধার করা অভিবাসীদের সহায়তা ও স্থানান্তর কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ভয়াবহ এই নৌকাডুবিতে বেঁচে যাওয়া অনেকেই প্রিয়জনকে হারানোর শোকে কাতর হয়ে পড়েছেন।ইতালির আইসোলা ডি ক্যাপো রিজুটো শহরের একটি অস্থায়ী অভ্যর্থনা কেন্দ্রে অভিবাসীদের অনেকেই কথা না বলে কেবল কান্না করছেন। আবার অনেকে কম্বলে জড়িয়ে হাহাকার করছেন।আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা মেডিসিনস স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্সের (এমএসএফ) কর্মকর্তা সার্জিও দি দেতো বলেছেন, উদ্ধারকৃত অভিবাসীরা প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন। কিছু শিশু তাদের পুরো পরিবারকে হারিয়েছে। আমরা সাধ্যমত তাদের সহায়তা দিচ্ছি।আফগানিস্তানের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর তার ২৮ বছর বয়সী বোনকে হারিয়েছে। নৌকাডুবির ঘটনায় চোখের সামনেই সমুদ্র সৈকতে মারা গেছেন তার বোন। বোনকে হারানোর কথা তার বাবা-মাকে বলার শক্তি পাচ্ছে না সে।কুত্রর মেয়র আন্তোনিও সেরাসো স্কাইটিজি ২৪ টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছিলেন, নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। তিনি বলেন, উত্তাল সমুদ্রে অভিবাসীদের বহনকারী জাহাজটি পাথরের সঙ্গে সংঘর্ষের পর কয়েক টুকরো হয়ে যায়। ধ্বংসাবশেষের কিছু অংশ উপকূলের প্রায় ৩০০ মিটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল।অভিবাসীদের পরিস্থিতি বর্ণনা করার সময় তার কণ্ঠ ধরে আসে। সেরাসো বলেন, তিনি এমন এক দৃশ্য দেখেছেন যা কেউই জীবনে কখনই দেখতে চাইবেন না… একটি বিভীষিকাময় দৃশ্য… যা আপনার সারাজীবন মনে থাকবে।সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকারী অভিবাসীদের জন্য ইতালি অন্যতম প্রধান এক প্রবেশপথ। কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগরীয় এই রুটটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রোজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে মধ্য-ভূমধ্যসাগরে অন্তত ২০ হাজার ৩৩৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

You cannot copy content of this page

You cannot copy content of this page