নাইক্ষ্যংছড়িতে মৌসুমি ফল আমের মুকুল, শুভা চড়াচ্ছে গ সারি সারি গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। আর সেই মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের ডালপালা।
- বাতাসে মিশে আসে মুকুলের
ম ম ঘ্রাণ। যে ঘ্রাণ মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধু মাসের আগমনী বার্তা জানাচ্ছে আমের মুকুল। আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন পার্বত্য বান্দরবান জেলা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাগান মালিকরা। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলোতে। তবে বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের ম ম গন্ধে বাগান মালিকদের চোখে ভাসছে সফলতার স্বপ্ন।
দেশি আমের পাশাপাশি আম্রুপালি, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি জাতের আম রংগুয়াই অন্যতম। ইতোমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। এছাড়া নাইক্ষ্যংছড়িতে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, আম গাছে শোভা পাচ্ছে কেবলই মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মহামিলন। মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের প্রতিটি ডালপালা। চারদিকে ছড়াচ্ছে সেই মুকুলের সুবাসিত পাগল করা ঘ্রাণ।
এদিকে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলো। তবে উপজেলার গ্রামাঞ্চলগুলো ঘুরে দেখা যায়, বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল ফুটেছে। সেই মুকুলের ম ম গন্ধ ছাড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় যেদিকে চোখ যায় গাছে গাছে এখন শুধু দৃশ্যমান সোনালী মুকুলের আভা। মুকুলের ভারে নুয়ে পড়ার উপক্রম প্রতিটি গাছ। মৌমাছিরাও আসতে শুরু করেছে মধু আহরণে। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই সুমধুর কুহুতানে মাতাল করতে আবারও ফিরে আসছে বাংলার বুক মাতাল করতে ঋতুরাজ বসন্ত। আমের মুকুলে ভরপুর আর ঘ্রাণে নাইক্ষ্যংছড়ি সর্বত্র জানান দিচ্ছে বসন্তের বার্তা। শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বাগানগুলো প্রায় ৭০ শতাংশ গাছেই এসেছে মুকুল। বাগান মালিক, কৃষি কর্মকর্তা ও আম চাষিরা আশা করছেন, বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে।
ইতোমধ্যেই আমের মুকুলে বাতাসে ম ম গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে চারিদিক। বর্তমানে আম চাষি ও বাগান মালিকরা বাগান পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। অবশ্য গাছে মুকুল আশার আগে থেকেই গাছের পরিচর্চা করে আসছেন তারা। যাতে করে গাছে মুকুল বা গুটি বাঁধার সময় কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। এ উপজেলায় খিড়সা, মোহনা, রাজভোগ, বারি-৪, গোপালভোগসহ অন্যান্য জাতের আম চাষের উপযুক্ত হওয়ায় চাষীরা নিজ উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করে আমের বাগান করেছেন। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমের চাষ হয় সোনাইছড়ি,ঘুমধুম দোছড়ি, নাইক্ষ্যংছড়ি র সদর ইউনিয়নের চাকঢালা,।
বাইশারী ইউনিয়নের বাসিন্দা আমচাষী এডভোকেট রাসেদ নেওয়াজ বলেন, পুরাপুরিভাবে এখনো সবগাছে মুকুল আসেনি। আর সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই সব গাছেই মুকুল আসবে। ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ কম থাকায় এবার কাঙ্ক্ষিত ফলনের আশা করছেন চাষিরা। আর ধীরে ধীরে উপজেলাজুড়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে আমের বাগান। উৎপাদিত আম মানসম্মত হওয়ায় চাহিদাও বাড়বে অনেক। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলার বিরাজমান আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমের উৎপাদন বিগত বছরের তুলনায় অনেক বেশি পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে। আবহওয়া অনুকূলে থাকায় এবার গাছে খুব একটা কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন নেই। তবে ছাত্রাকজনিত রোগেও আমের মুকুল-ফুলগুটি আক্রান্ত হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, এবার আগাম মুকুল ফুটেছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে মুকুলগুলো নষ্ট হবার সম্ভাবনা নেই। আমের মুকুলের পরিচর্যায় উকুন নাশক এভোমেট্রিন ও ছত্রাকনাশক মেনকোজেভ বালাইনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত মৌসুমে আমের বাজার ভালো থাকায় লাভবান হয়েছিলেন চাষিরা। গত বছরের চেয়ে এ বছর আম বাগান আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার বিরাজমান আবহাওয়া ও মাটি আম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। তবে বাণিজ্যিকভাবে এখনো আম চাষ শুরু হয়নি এ উপজেলায় । আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আমের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি হবে বলে ধারণা করছেন তিনি।
সংবাদ প্রেরক
মোহাম্মদ ইউনুছ
মোবাইল নম্বর ০১৮১৫৩৩৫০১৩