মেজর সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল, ৬ জনের যাবজ্জীবনও বহাল
- আপডেট: ০১:১৯:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
- / ১৩২
নিজস্ব প্রতিবেদন
বহুল আলোচিত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ এবং বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ৬ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রাখা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে গত ৩০ মে (বৃহস্পতিবার) মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এই দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তার সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জসিম সরকার, মো. আসাদ উদ্দিন, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গিয়াসউদ্দিন গাজি, লাবনি আক্তার, তানভীর প্রধান, সুমাইয়া বিনতে আজিজ ও আসাদুল্লাহ আল গালিব।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। তিনি একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরির কাজে সেখানে অবস্থান করছিলেন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেন এবং আরও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। সাতজন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
আইনের নিয়ম অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের দণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আপিল করেন। সব শুনানি শেষে হাইকোর্ট আগের রায় বহাল রাখে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা:
-
প্রদীপ কুমার দাশ, সাবেক ওসি, টেকনাফ থানা
-
লিয়াকত আলী, সাবেক ইনচার্জ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা:
-
নন্দ দুলাল রক্ষিত, বরখাস্ত এসআই
-
সাগর দেব, পুলিশ সদস্য
-
রুবেল শর্মা, পুলিশ সদস্য
-
নুরুল আমিন, পুলিশের মামলার সাক্ষী
-
মো. নেজামুদ্দিন, সাক্ষী
-
আয়াজ উদ্দিন, সাক্ষী
হাইকোর্টের রায়ে প্রত্যেক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশও বহাল রাখা হয়েছে।
এই রায়ের মাধ্যমে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের বিচারিক প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ সম্পন্ন হলো। তবে দণ্ডপ্রাপ্তদের সামনে এখন আপিল বিভাগের দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে।