১২:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এবার ঈদ যাত্রায় গলার কাঁটা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ‘ডেড সড়ক’

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৯:১০:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / ৩০৯

ছবি: বর্তমান কথা

বিশেষ প্রতিনিধি: মুজাহিদ খাঁন কাওছার

আসন্ন ঈদুল আজহার আগে রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারের বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক হয়ে উঠেছে ‘গলার কাঁটা’। বছরের প্রায় পুরো সময়জুড়ে নাজুক অবস্থায় থাকা এই সড়ক বর্তমানে বেহাল দশায় পৌঁছেছে, যা ঈদযাত্রাকে করে তুলেছে দুঃস্বপ্নের নাম।

সড়কটির সবচেয়ে বড় সমস্যা—নির্বিচারে খননকাজ, অনিয়ন্ত্রিত ড্রেনেজ এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের চলমান নির্মাণ। এসব মিলিয়ে সড়কজুড়ে এখন কাদা, খানাখন্দ, গর্ত আর জমে থাকা পয়ঃবর্জ্যে পূর্ণ পানি। যানবাহন চলে ধীরে, কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটে দ্রুত। সম্প্রতি ট্রাফিক বিভাগ এই পথকে ‘ডেড সড়ক’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

ভোগান্তি বছরের পর বছর

বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। সড়কটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ—টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সংযোগ সড়ক—শিল্পাঞ্চল ও শ্রমজীবী মানুষের প্রাণরেখা। কিন্তু বছরের বেশিরভাগ সময় এটি পানিতে তলিয়ে থাকে। বৃষ্টি হলেই সড়কের শিমুলতলা, জামগড়া চৌরাস্তা, ছয়তলা এলাকা থেকে শুরু করে জিরাবো পর্যন্ত সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। কোমরসমান পানি জমে গর্তে পড়ে প্রায়শই ঘটে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।

শুকনো মৌসুমেও স্বস্তি নেই। আশপাশের কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানি জমে থাকে সড়কের ওপর। যানজট, দুর্গন্ধ, ধুলাবালিতে তখন পথ চলা হয়ে ওঠে দুর্বিষহ।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনা

গত ১৬ এপ্রিল জামগড়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী লেগুনা পানিতে পড়ে গিয়ে দুই পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। স্থানীয়রা বলছেন, এমন মৃত্যুই এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা বলছেন…

সড়কের পাশের দোকানদার ও বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অল্প বৃষ্টিতেই সড়কের পানি দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। ব্যবসায়িক ক্ষতি তো আছেই, তার সঙ্গে রয়েছে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি। পানিতে সৃষ্ট ময়লা, দুর্গন্ধ ও রোগ জীবাণুতে এলাকাটি দিন দিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।

বাইপাইল-আশুলিয়া রুট

বাইপাইল-আশুলিয়া রুটের বাস ও ট্রাকচালকরা জানাচ্ছেন, ‘ঘণ্টার পথ দুই-তিন ঘণ্টা লাগে। গাড়ি গর্তে পড়ে গেলে বারবার ব্রেকডাউন হয়। যাত্রী আর চালকের জন্য এই রুট এখন এক আতঙ্কের নাম।’

ঢাকা জেলা উত্তরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (অ্যাডমিন) গোলাম সারোয়ার বলেন, “আমি নিজে সড়কটি পরিদর্শন করেছি। অবস্থা এতটাই খারাপ যে আমরা এটিকে ‘ডেড সড়ক’ ঘোষণা করেছি। ঈদে এই পথ দিয়ে যাতায়াত করলে যানজট হবে ভয়াবহ।”

তিনি আরও যোগ করেন, ‘শুধু সাধারণ মানুষ নয়, ট্রাফিক পুলিশদের দায়িত্ব পালন করতেও হবে ভয়াবহ কষ্টে।’

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অথচ তার অধীনে চলা পাইলিং কাজই সড়কের অধিকাংশ অংশ সরু ও বিপজ্জনক করে তুলেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

বিজ্ঞাপন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৮২৪৯০৯০১০
বিজ্ঞাপন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৮২৪৯০৯০১০

এবার ঈদ যাত্রায় গলার কাঁটা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ‘ডেড সড়ক’

আপডেট: ০৯:১০:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
বিশেষ প্রতিনিধি: মুজাহিদ খাঁন কাওছার

আসন্ন ঈদুল আজহার আগে রাজধানীর উপকণ্ঠে সাভারের বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক হয়ে উঠেছে ‘গলার কাঁটা’। বছরের প্রায় পুরো সময়জুড়ে নাজুক অবস্থায় থাকা এই সড়ক বর্তমানে বেহাল দশায় পৌঁছেছে, যা ঈদযাত্রাকে করে তুলেছে দুঃস্বপ্নের নাম।

সড়কটির সবচেয়ে বড় সমস্যা—নির্বিচারে খননকাজ, অনিয়ন্ত্রিত ড্রেনেজ এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের চলমান নির্মাণ। এসব মিলিয়ে সড়কজুড়ে এখন কাদা, খানাখন্দ, গর্ত আর জমে থাকা পয়ঃবর্জ্যে পূর্ণ পানি। যানবাহন চলে ধীরে, কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটে দ্রুত। সম্প্রতি ট্রাফিক বিভাগ এই পথকে ‘ডেড সড়ক’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

ভোগান্তি বছরের পর বছর

বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক হয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। সড়কটির গুরুত্বপূর্ণ অংশ—টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সংযোগ সড়ক—শিল্পাঞ্চল ও শ্রমজীবী মানুষের প্রাণরেখা। কিন্তু বছরের বেশিরভাগ সময় এটি পানিতে তলিয়ে থাকে। বৃষ্টি হলেই সড়কের শিমুলতলা, জামগড়া চৌরাস্তা, ছয়তলা এলাকা থেকে শুরু করে জিরাবো পর্যন্ত সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। কোমরসমান পানি জমে গর্তে পড়ে প্রায়শই ঘটে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।

শুকনো মৌসুমেও স্বস্তি নেই। আশপাশের কারখানার বর্জ্য মিশ্রিত পানি জমে থাকে সড়কের ওপর। যানজট, দুর্গন্ধ, ধুলাবালিতে তখন পথ চলা হয়ে ওঠে দুর্বিষহ।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনা

গত ১৬ এপ্রিল জামগড়া এলাকায় একটি যাত্রীবাহী লেগুনা পানিতে পড়ে গিয়ে দুই পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। স্থানীয়রা বলছেন, এমন মৃত্যুই এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা বলছেন…

সড়কের পাশের দোকানদার ও বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অল্প বৃষ্টিতেই সড়কের পানি দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়ে। ব্যবসায়িক ক্ষতি তো আছেই, তার সঙ্গে রয়েছে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি। পানিতে সৃষ্ট ময়লা, দুর্গন্ধ ও রোগ জীবাণুতে এলাকাটি দিন দিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।

বাইপাইল-আশুলিয়া রুট

বাইপাইল-আশুলিয়া রুটের বাস ও ট্রাকচালকরা জানাচ্ছেন, ‘ঘণ্টার পথ দুই-তিন ঘণ্টা লাগে। গাড়ি গর্তে পড়ে গেলে বারবার ব্রেকডাউন হয়। যাত্রী আর চালকের জন্য এই রুট এখন এক আতঙ্কের নাম।’

ঢাকা জেলা উত্তরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (অ্যাডমিন) গোলাম সারোয়ার বলেন, “আমি নিজে সড়কটি পরিদর্শন করেছি। অবস্থা এতটাই খারাপ যে আমরা এটিকে ‘ডেড সড়ক’ ঘোষণা করেছি। ঈদে এই পথ দিয়ে যাতায়াত করলে যানজট হবে ভয়াবহ।”

তিনি আরও যোগ করেন, ‘শুধু সাধারণ মানুষ নয়, ট্রাফিক পুলিশদের দায়িত্ব পালন করতেও হবে ভয়াবহ কষ্টে।’

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। অথচ তার অধীনে চলা পাইলিং কাজই সড়কের অধিকাংশ অংশ সরু ও বিপজ্জনক করে তুলেছে।