সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন সফল করার জন্য মহানগরে দলের সাংগঠনিক শক্তিকে গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। আরো বড় আন্দোলনে যাওয়ার আগে ১৩ সাংগঠনিক মহানগরের দলীয় সক্ষমতা পরীক্ষা করছে দলটি। এর অংশ হিসাবে ঢাকাসহ দেশে অন্য মহানগরগুলোর থানায় থানায় শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) একযোগে পালন করা হবে পদযাত্রা। কর্মসূচিতে বড় শোডাউনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রধান করে গঠন করা হয়েছে সমন্বয় টিম। তবে সাংগঠনিক থানা না থাকায় ৩ মহানগরে বিভিন্ন ওয়ার্ড নিয়ে পদযাত্রা করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। এ পদযাত্রা থেকে সাধারণ জনগণের দাবিকে সামনে রেখে ১১ মার্চ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, বিকাল ৩টা থেকে একযোগে ঢাকা মহানগরের ৪৯ থানা এবং ৮ স্থানে পদযাত্রা করা হবে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরে ২৬ থানায়, দক্ষিণে ২৪, নারায়ণগঞ্জে ৩, গাজীপুরে ৮, চট্টগ্রামে ১৫, রাজশাহীতে ৪, খুলনায় ৫, বরিশালে ৩, রংপুরে ৬ ও সিলেট মহানগরের ৫ থানায় পালন করা হবে এ কর্মসূচি। এছাড়া ৩ মহানগরে থানা না থাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ড মিলে ৮ স্থানে এ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহে ৩৩ ওয়ার্ডে মিলে ৫ স্থানে, ফরিদপুরে ২৭ ওয়ার্ড মিলে ১ স্থানে ও কুমিল্লা মহানগরের ২৭ ওয়ার্ড মিলে দুই স্থানে পদযাত্রা বের করবেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। ‘গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, দমন-নিপীড়ন বন্ধ, খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবিতে’ হবে এই পদযাত্রা। এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশব্যাপী সব মহানগরের অন্তর্গত থানায় পদযাত্রা সফল করতে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।দলটির একাধিক নীতিনির্ধারক জানান, মহানগরের থানায় থানায় সফল পদযাত্রা করা অনেক চ্যালেঞ্জ। তবে সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নানামুখী কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন ও জেলার মতোই শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি পালন করা হবে। বিএনপির পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকেও সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহানগরের নেতারা কর্মসূচি সফলে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সভা করে নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।অন্যদিকে, ঢাকা মহানগরের প্রতিটি থানায় আজ শান্তি সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগ। শনিবার এসব সমাবেশে মহানগরের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতারা যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া। শুক্রবার (৩ মার্চ) দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বাপ্পি ও দক্ষিণের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিটি থানায় সমাবেশের এ কর্মসূচির কথা জানানো হয়।উত্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিটি থানায় শান্তি সমাবেশের অংশ হিসেবে মিরপুর-১ নং গোল চক্কর বাস স্টপেজের খলিল ভবনের সামনে বিকেল তিনটায় শান্তি সমাবেশ হবে। এতে থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনের সমাবেশে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উত্তরা আজমপুরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মধ্যবাড্ডা ইউলুপের সামনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম উপস্থিত থাকবেন।অপরদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, শাহজাহানপুর এলাকায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক ও কার্যনিবাহী সদস্য মো. সাঈদ খোকন; ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর এলাকায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম অংশ নেবেন। অপরদিকে লালবাগ, চকবাজার, কোতয়ালি, বংশালে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন; যাত্রাবাড়ী-ডেমরায় বন পরিবেশ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন; মুগদা, সবুজবাগ, খিলগাঁওয়ে দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু; কলাবাগান, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট ও ধানমণ্ডিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস এবং শ্যামপুর ও কদমতলি এলাকায় কেন্দ্রীয় সদস্য সানজিদা খানম উপস্থিত থাকবেন।