১২:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সংস্কার প্রকল্পে দেরি-স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির পথে অন্তরায়,,,,,দৈনিক বর্তমান কথা

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট: ০১:৪১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ২০

দুই মাস আগে একনেক সভায় বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় অনুমোদিত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রকল্প আজও শুরু হয়নি। শাসনব্যবস্থা, রাজস্ব আহরণ, সরকারি বিনিয়োগ, ক্রয় ও পরিসংখ্যান খাতে আধুনিকায়ন আনার লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলো অনুমোদিত হলেও সরকারি আদেশ জারি না হওয়ায় সেগুলো এখনো ফাইলবন্দি। সংস্কারের এই উদ্যোগ ছিল বিশ্বব্যাংকের সহায়তা পাওয়ার শর্তসাপেক্ষ। প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার অর্ধেক বাজেট সমর্থন এবং বাকি অংশ প্রকল্প ঋণ আকারে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। ঋণের শর্তও তুলনামূলক সহজ, কিন্তু বিশ্বব্যাংক স্পষ্ট করেছে-কেবল প্রযুক্তি কেনা বা পরামর্শক নিয়োগই যথেষ্ট নয়; বরং দীর্ঘমেয়াদি সক্ষমতা তৈরি ও স্বয়ংসম্পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা থাকতে হবে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থা আধুনিকায়ন, রাজস্ব আহরণ শক্তিশালীকরণ, সরকারি ক্রয় শতভাগ অনলাইনভিত্তিক করা, অডিট কার্যক্রম ডিজিটাল রূপান্তর এবং সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন। বাস্তবায়িত হলে এই উদ্যোগগুলো বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দক্ষতা বাড়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আস্থাও জোরদার হবে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়-অনুমোদনের পরও কেন এত বিলম্ব? প্রকল্পের খসড়ায় ত্রুটি বা সমন্বয় ঘাটতি থাকলেও তা সংশোধনের জন্য সরকারি মহলে যে গতি থাকা দরকার, তা অনুপস্থিত। জুলাই-পরবর্তী পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংস্কারের বার্তা জোরালো হওয়ার কথা ছিল, অথচ বাস্তবে দৃশ্যপট ভিন্ন। সংস্কার প্রকল্পগুলো যত দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু হবে, তত দ্রুত দেশ উপকৃত হবে। সময়ক্ষেপণ শুধু প্রশাসনিক অদক্ষতাই বাড়ায় না, বরং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের আস্থাকেও ক্ষুণ্ণ করে। সংস্কারের সুযোগ হারালে কেবল উন্নয়ন প্রকল্প নয়, সামগ্রিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই এখন জরুরি হলো-সরকারি আদেশ জারি করে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন শুরু করা, চলমান অটোমেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঠিক সমন্বয় নিশ্চিত করা এবং দক্ষ জনবল গড়ে তুলে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা কার্যকর করা। সংস্কারের পথ রুদ্ধ হলে দেশ কেবল বিনিয়োগ হারাবে না, বরং প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অবিশ্বাসের দুষ্টচক্রেই আটকে থাকবে।

Please Share This Post in Your Social Media

বিজ্ঞাপন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৮২৪৯০৯০১০
বিজ্ঞাপন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৮২৪৯০৯০১০

সংস্কার প্রকল্পে দেরি-স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির পথে অন্তরায়,,,,,দৈনিক বর্তমান কথা

আপডেট: ০১:৪১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দুই মাস আগে একনেক সভায় বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় অনুমোদিত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রকল্প আজও শুরু হয়নি। শাসনব্যবস্থা, রাজস্ব আহরণ, সরকারি বিনিয়োগ, ক্রয় ও পরিসংখ্যান খাতে আধুনিকায়ন আনার লক্ষ্যে এই প্রকল্পগুলো অনুমোদিত হলেও সরকারি আদেশ জারি না হওয়ায় সেগুলো এখনো ফাইলবন্দি। সংস্কারের এই উদ্যোগ ছিল বিশ্বব্যাংকের সহায়তা পাওয়ার শর্তসাপেক্ষ। প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার অর্ধেক বাজেট সমর্থন এবং বাকি অংশ প্রকল্প ঋণ আকারে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। ঋণের শর্তও তুলনামূলক সহজ, কিন্তু বিশ্বব্যাংক স্পষ্ট করেছে-কেবল প্রযুক্তি কেনা বা পরামর্শক নিয়োগই যথেষ্ট নয়; বরং দীর্ঘমেয়াদি সক্ষমতা তৈরি ও স্বয়ংসম্পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা থাকতে হবে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থা আধুনিকায়ন, রাজস্ব আহরণ শক্তিশালীকরণ, সরকারি ক্রয় শতভাগ অনলাইনভিত্তিক করা, অডিট কার্যক্রম ডিজিটাল রূপান্তর এবং সরকারি বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন। বাস্তবায়িত হলে এই উদ্যোগগুলো বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দক্ষতা বাড়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আস্থাও জোরদার হবে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়-অনুমোদনের পরও কেন এত বিলম্ব? প্রকল্পের খসড়ায় ত্রুটি বা সমন্বয় ঘাটতি থাকলেও তা সংশোধনের জন্য সরকারি মহলে যে গতি থাকা দরকার, তা অনুপস্থিত। জুলাই-পরবর্তী পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংস্কারের বার্তা জোরালো হওয়ার কথা ছিল, অথচ বাস্তবে দৃশ্যপট ভিন্ন। সংস্কার প্রকল্পগুলো যত দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু হবে, তত দ্রুত দেশ উপকৃত হবে। সময়ক্ষেপণ শুধু প্রশাসনিক অদক্ষতাই বাড়ায় না, বরং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের আস্থাকেও ক্ষুণ্ণ করে। সংস্কারের সুযোগ হারালে কেবল উন্নয়ন প্রকল্প নয়, সামগ্রিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই এখন জরুরি হলো-সরকারি আদেশ জারি করে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন শুরু করা, চলমান অটোমেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঠিক সমন্বয় নিশ্চিত করা এবং দক্ষ জনবল গড়ে তুলে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা কার্যকর করা। সংস্কারের পথ রুদ্ধ হলে দেশ কেবল বিনিয়োগ হারাবে না, বরং প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অবিশ্বাসের দুষ্টচক্রেই আটকে থাকবে।