জুলাই সনদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে নাহিদের পোস্ট
নাহিদ ইসলাম
নতুন সংবিধান প্রণয়ন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, স্থানীয় সরকার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি—এই চারটি মূল ইস্যুকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া একাধিক স্ট্যাটাসে এসব দাবির ইঙ্গিত দিয়েছেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি মুক্তিযুদ্ধ, আর এনসিপি এই আদর্শকে কেন্দ্র করেই রাজনীতিতে পথচলা শুরু করেছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র কাঠামোর স্বপ্নই এনসিপির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির মূলে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলার হিন্দু-মুসলমান-দলিতের উপনিবেশবিরোধী এবং ব্রাহ্মণ্যবাদবিরোধী সংগ্রামের ধারাবাহিকতাকেও রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করি।”
এনসিপি কোনো ধর্মতান্ত্রিক বা সেকুলারিস্ট মতবাদে বিশ্বাস করে না, বরং ধর্মীয় সহাবস্থান, সম্প্রীতি ও নাগরিক মর্যাদার উপর জোর দেয়। ইসলামসহ অন্যান্য ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণে এনসিপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্ম ইসলাম—তার নৈতিকতা ও মানবিকতাকে আমরা সম্মান করি। একইসাথে সংখ্যালঘু ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অধিকার রক্ষাও আমাদের নীতির অংশ।”
এনসিপি নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পারিবারিক আইনের আওতায় নারীর সম্পত্তিতে ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করবে বলে জানিয়েছে। নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়ন এনসিপির অন্যতম মূলনীতি।
এনসিপি মনে করে, ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ বাংলাদেশের জন্য একটি সাংস্কৃতিক ও ভূরাজনৈতিক হুমকি। নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশের উচিত ন্যায্যতা, মর্যাদা ও জাতীয় স্বার্থকে ভিত্তি করে কৌশলগত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “দূর্নীতিমুক্ত, ইনসাফভিত্তিক ও বৈষম্যহীন একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে এনসিপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জলবায়ু, শ্রম অধিকার ও কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবে দলটি। বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে একটি নতুন অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার ভিশনও রয়েছে।
নাহিদ ইসলাম জোর দিয়ে বলেন, “ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়নই হচ্ছে এনসিপির প্রধান রাজনৈতিক কর্তব্য। রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মৌলিক সংস্কার ছাড়া প্রকৃত গণতন্ত্র সম্ভব নয়।”