রাজধানীর মিরপুরে রাজউক অনুমোদিত নকশা লঙ্ঘন করে অনিরাপদ ভবন নির্মাণের অভিযোগ,,,
- আপডেট: ১২:২৬:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
- / ১০৯
নার্গিস রুবি: মিরপুর সেকশন-১২-তে ইমারত নির্মাণ আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘন করে অনিরাপদভাবে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ও সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভবনটির নির্মাণে নিরাপত্তা বিধি এবং রাজউক অনুমোদিত নকশা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে।প্লট # ৮,৯, এভিনিউ-১, ব্লক-বি, সেকশন-১২, মিরপুরের এই ভবনটি মর্জিনা রহমান গং-এর মালিকানাধীন। রাজউকের নির্মাণ অনুমোদন স্মারক নং ২৫.২৯.০০০০.০৯৮.৩৩.১৪৯৪.২১ মূলে ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে নকশা অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। ৩১৩.৫৫ বর্গমিটার আয়তনের জমিতে সেমি-বেসমেন্ট+গ্রাউন্ড+৯ তলা বিশিষ্ট ভবনের নির্মাণ কাজ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে শুরু হয়, যা ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে শেষ হওয়ার কথা।
গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ:
সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন ভবনটিতে সেটব্যাক আইন মানা হয়নি। প্রতিটি ফ্লোরে অনুমোদিত নকশার বাইরে অতিরিক্ত বারান্দা ও ছাদ তৈরি করা হয়েছে, যা ভবনের লোড-বিয়ারিং কাঠামোর ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি করছে।আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, নির্মাণ স্থানে শ্রমিকদের জন্য কোনো সেফটি নেট, সেফটি গার্ড বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম নেই। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী এটি সুস্পষ্ট আইন লঙ্ঘন। এসব অনিয়মের বিষয়ে ওই এলাকার ইমারত পরিদর্শক মো: আখতারুজ্জামান ফয়েজ বলেন,ভবন পরিদর্শন করে
ব্যবস্থা নিবো।
বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা:
নগর পরিকল্পনাবিদরা সতর্ক করে বলছেন, এই ধরনের অনিয়ম ঢাকার মতো ভূমিকম্পপ্রবণ শহরে মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। একজন বিশেষজ্ঞ জানান, রাজউকের দুর্বল নজরদারি এবং অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির কারণে ঢাকার পরিকল্পিত নগরায়ন হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের মতে, যেকোনো সময় ভবন ধসে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবিস্থানীয় বাসিন্দারা অবিলম্বে এই নির্মাণ কাজ বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। তারা একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট রাজউক কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি তুলেছেন।
স্থানীয়দের মতে, এটি শুধু একটি ভবনের অনিয়ম নয়, বরং ঢাকার নগর ব্যবস্থাপনায় প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির একটি বড় উদাহরণ।
রাজউকের প্রতিক্রিয়াএ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের অথরাইজড অফিসার এবং ইমারত পরিদর্শক জানান, অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হবে এবং সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে ভবনটির মালিক বা তার পক্ষে দায়িত্বশীল কারও কাছ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।ভবনটির স্থপতি সামিউর রহমান তুষার (IAB ও RAJUK রেজিস্ট্রেশন নং: T-024) এবং প্রকৌশলী মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম সোহাগ (Rajuk Reg. No-DMINB/CE-0418)।বিশেষজ্ঞ এবং নগরবাসীর মতে, যথাযথ আইন প্রয়োগ এবং দায়ীদের বিচার নিশ্চিত করা না হলে ঢাকার নিরাপত্তা ও পরিকল্পিত নগরায়ন রক্ষা করা সম্ভব হবে না।










