জুলাই আন্দোলনে শহীদ রিফাত হত্যা মামলার আসামি চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকারের ‘খুঁটির জোর’ কোথায়?
- আপডেট: ১১:১৪:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
- / ৮
জুলাই আন্দোলনে শহীদ রিফাত হত্যা মামলার আসামি চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকারের ‘খুঁটির জোর’ কোথায়?
স্টাফ রিপোর্টার | দাউদকান্দি, কুমিল্লা
জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শহীদ রিফাত হত্যা মামলার আসামি পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকারের রাজনৈতিক তৎপরতা ও প্রভাব নিয়ে দাউদকান্দি উপজেলায় নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের মধ্যে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু—কোথায় তাঁর ‘খুঁটির জোর’?
অভিযোগ রয়েছে, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও দাউদকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা মনির হোসেন সরকার জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা এবং শহীদ রিফাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। তিনি দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বর্তমানে কারাগারে থাকা মেজর মোহাম্মদ আলীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকার গোপনে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠককে ঘিরে পদুয়া ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগকে পুনরায় সুসংগঠিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র আরও দাবি করেছে, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনে অর্থায়নসহ ভবিষ্যতে সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে নাশকতা, সহিংসতা এমনকি গোপন হত্যাকাণ্ড সংঘটনের পরিকল্পনার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রতি মাসে চিকিৎসার কথা বলে ভারত সফর করে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করছেন।
পদুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মনির হোসেন সরকারের সঙ্গে দলের একাধিক শীর্ষ নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় তিনি কাউকে তোয়াক্কা করতেন না। সে সময় প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বাজার ও সড়কে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, টাকা ছিনতাই এবং নিকটস্থ শ্রীরায়ের চর বাজারে চাঁদাবাজি ছিল তার নিত্যদিনের কর্মকাণ্ড—এমন অভিযোগও এলাকাবাসীর।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, আওয়ামী লীগ বর্তমানে ক্ষমতায় না থাকলেও চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকার গোপনে রাজনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং নিষিদ্ধ সংগঠনটিকে আবার মাঠে সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন।
এদিকে এলাকায় কানাঘুষা ও তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে—গুরুতর মামলার আসামি হয়েও কীভাবে এমন একজন ব্যক্তি আদালত থেকে জামিন পাচ্ছেন। স্থানীয়দের প্রশ্ন, আর কতজন নিরীহ মানুষ ও শিক্ষার্থী শহীদ হলে প্রশাসনের টনক নড়বে?
পদুয়া ইউনিয়নের সাধারণ জনগণের জোর দাবি, অবিলম্বে চেয়ারম্যান মনির হোসেন সরকারের পাসপোর্ট জব্দ করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

















