ইসরাইলি হামলায় উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য, বাতিল হলো ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক আলোচনা
- আপডেট: ১০:৩১:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
- / ৪৯
আন্তর্জাতিক ডেস্ক // বর্তমান কথা
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে। ইসরাইলের নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ষষ্ঠ দফার পরমাণু আলোচনা বাতিল করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে মধ্যস্থতাকারী দেশ ওমান।
শনিবার (১৫ জুন) এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক বিবৃতিতে ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আল-বুসাইদি জানান, রোববারের জন্য নির্ধারিত পরবর্তী দফার আলোচনা আর হচ্ছে না।
তিনি বলেন, “দীর্ঘস্থায়ী শান্তির একমাত্র পথ কূটনীতি ও সংলাপ।” তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এখনো আলোচনায় আগ্রহী এবং ইরানের ফিরে আসার প্রত্যাশা করছে।
শুক্রবার (১৪ জুন) গভীর রাতে ইসরাইল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে বড় ধরনের আক্রমণ চালায়। এ হামলায় ইরানের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা, বিপ্লবী গার্ড সদস্য ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা নিহত হন। ইরানের দাবি, হামলায় ৭৮ জন নিহত ও ৩২০ জনের বেশি আহত হন।
ইসরাইল জানায়, তারা ৪০০টির বেশি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ৪০টির বেশি লক্ষ্য ছিল রাজধানী তেহরান।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেন, “তেহরান জ্বলবে যদি ইসরাইলের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত থাকে।”
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এখনো আমাদের প্রতিক্রিয়ার আসল রূপ ইরান বোঝেনি, সামনে আরও বড় পরিণতি অপেক্ষা করছে।”
ইসরাইলের হামলার জবাবে ইরান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়ে জবাব দেয়, যার ফলে জেরুজালেম ও তেল আবিবে রাতভর আকাশে বিস্ফোরণ ঘটে।
ইসরাইলের মতে, পাল্টা হামলায় ৩ জন নিহত ও ১৭৪ জন আহত হয়েছে।
একজন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র তাদের গ্রাউন্ড-বেইজড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে ইসরাইলকে সহায়তা করেছে।
ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তু ছিল নাতানজ পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ কেন্দ্র ও ইসফাহানের গবেষণা স্থাপনা।
স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, নাতানজে বহু ভবন ধ্বংস হয়েছে। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) নিশ্চিত করেছে, ইসফাহানে চারটি গুরুত্বপূর্ণ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
একজন ইসরাইলি সামরিক মুখপাত্র বলেন, “এই ক্ষতি মেরামত করতে ইরানের কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে।
”ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, “ইসরাইলি আগ্রাসনের পর আলোচনায় অংশ নেওয়া অন্যায্য।”
তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কাল্লাসের সঙ্গে ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে হামলাকে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ তোলেন। ইরান মনে করে, ইসরাইলের এই হামলা ওয়াশিংটনের প্রশ্রয়ে ঘটেছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে তারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত নয়।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: “চুক্তি করো, নইলে কিছুই থাকবে না”
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুশিয়ারি দিয়ে বলেন,
“ইরানকে এখনই চুক্তি করতে হবে, নইলে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।”
এই বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে, যদিও বাইডেন প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার পথে রয়েছে।