লামা(বান্দরবান): ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হসপিটাল "বাহিরে ফিটফাট ভিতরে সদর ঘাট"। সেবার নামে চলছে প্রহসন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেয়ালে ঝুলে আছে ময়লার স্তুপ। দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসে রোগির ওয়ার্ডে। জানালার ভাঙ্গা কাঁচে ও দেয়ালের কোণায় করা মাকড়সার জালে কবুতর ডিম দিতে পারবে। হসপিটাল প্রশাসনের করিৎকর্মাদের দায়িত্ব অবহেলা নিয়ে মাসিক আইন শৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় আলোচনার পরেও সমস্যা যেন আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয়, অনিয়ম-দুর্নীতির ময়লার চাদরে ঢেকে আছে লামা উপজেলার একমাত্র পঞ্চাশ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। হাসপাতালের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ না করেই অর্থ লোপাটের অভিযোগ। বিভিন্ন খাত থেকে প্রতি বছর লোপাট হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এসব অর্থ নামে বেনামে ঠিকাদারের নাম দিয়ে আত্মসাৎ করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। এমন অভিযোগ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। জানাগেছে, ডা: মোহাম্মদ মঈনুদ্দীন মোর্শেদ এর মনগড়া কর্মকান্ডে সময় মতন মাসিক বেতন পাচ্ছেন না নার্সয়েরা। জানাযায়, এর আগেও করোনা করোনা কালীন সময়ে প্রণোদনার টাকার ব্যাপারে তাদের সই নিলেও কোন রকম সরকারি বরাদ্দের অর্থ দেওয়া হয়নি স্টাফদেরকে। লামা উপজেলার প্রায় ২ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় একমাত্র ভরসার স্থল ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, ইউএইচএফও ডা: মুঈনুদ্দীন মোর্শেদ এর কাছে অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত সকল প্রকার ফাইল ও কাজের হিসাব রক্ষিত থাকে। প্রতি অর্থ বছরে শত জোড়ারও বেশি সেন্ডেল, দু' শতাধিক শলার ঝাড়ু, অর্ধ হাজার হারপিপিকের বোতল ও দেড় শ্ কেজিরও বেশি জেট পাউডার ক্রয় বিল ভাউচার দেখিয়ে টাকা নেয়। পরিচ্ছন্নতা সরঞ্জাম ক্রয় দেখিয়ে বিল তৈরি করলেও বাস্তবতা হরি লোট। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ইনডোর আউটডোর ঘুরে দেখলে মনে হবে পুরো হাসপাতালটি যেন ময়লার ভাগাড়। জানাযায়, ওষুধ ক্রয় প্রকল্পে গত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এখাতে কোন কাজ না করে ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে নিজের ব্যাংক একাউন্টে টাকা নিয়ে আত্মাতের চেষ্টা করেন। তবে হিসাব রক্ষণ (অডিট শাখার) বিধিমালা অনুযায়ী ব্যক্তিগত একাউন্টে টাকা নিতে পারেননি। বহু চেষ্টায় ভুয়াবিল ভাউচার জমা করেও যখন টাকাগুলো নিজে আত্মসাত করতে পারেনি, তখন ৩০ জুনের মধ্যে ওই বরাদ্দ কোষাগারে জমা পড়ে যায় বলে জানাগেছে। এর ফলে রোগীদের মাঝে ওষুধ সরবরাহের স্বাভাবিকতা ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করেছেন স্থানীয়রা। এতদ বিষয়ে জানতে চাইলে, বর্তমান ইউএইচএফও ডা: মুঈনুদ্দীন মোর্শেদ বলেন, প্রতিদিন হসপিটালের ইনডোর আউটডোরে ৫ রোগী থাকে। এর সাথে বাড়তি আরো ৩/৪ শ্ মানুষ আসে। তাদের প্রত্যেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টয়লেট ব্যবহার করেন। এ ছাড়া এতগুলো মানুষের ছুঁড়ে ফেলা ও পায়ের ময়লা আবর্জনা সবইতো হসপিটাল ক্যাম্পাসকে দূষিত করে তোলে। সরঞ্জাম ও জনবল সংকট, এই অবস্থার জন্য দায়ি। ওষুধ ক্রয়ের টাকা ফেরত যাওয়ার বিষয়ে ডা: মুঈনুদ্দীন বলেন, একাউন্টস অফিসের চাহিত দেড় লাখ টাকা দিতে না পারায়; সকল ডকুমেন্ট সাবমিট করেও বিলটি পাওয়া যায়নি। অপরদিকে উপজেলা একাউন্টস অফিসার কাঞ্চন দে জানান, "ডা: মুঈনুদ্দীন যে সব ঠিকাদারদের কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, আমরা সেই অনুযায়ী ব্যাংককে অর্থ ছাড় দেয়ার জন্য পত্র দিয়েছি"।অডিট এডভাইজ নং-৫৩৭৮ পত্রে ম্যানেজার সোনালী ব্যাংক লামা বরাবর টোকেন নাম্বার ০০০২১৯৩৪ পেমেন্ট অর্ডার পিই-০০২৭১১৮, দু'লাখ ছিয়াশি হাজার তিন শ্ চৌদ্দ টাকা, অভি এন্টারপ্রাইজ এর অনুকুলে। টোকেন নং-০০০২১৯৩০, পেমেন্ট অর্ডার পিই-০০২৭১১৯ আশি হাজার নয় শ্ টাকা আলমগীর এন্ড ব্রাদার্স এর অনুকুলে। টোকেন নং-০০২১৯২৯, পিই-০০২৭১২০, একত্রিশ হাজার চার শ্ ছচল্লিশ টাকা অরোয়া কর্পোরেশন এর অনুকুলে ছাড় দিয়েছি। চলবে....