সড়ক সংস্কার-কার্পেটিং নীতিমালার নির্লিপ্ততায় সাধারণ মানুষ আর কত বছর ভোগান্তি পোহাবে(!)। লামা রুপসিপাড়া সড়কে লামা খালের উপর গার্ডার সেতুর দু'দিকের সাড়ে ৬ শ্ মিটার ইটের সড়কের বেহাল অবস্থা। সড়কের এই অংশটি বিগত ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কার্পেটিং করার জন্য এলজিইডি'র প্রধান প্রকৌশলী নিকট ডিও লেটার দেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। চারটি অর্থ বছর গত হয়ে গেল, কিন্তু সড়ক কার্পেটিং বরাদ্দ হয়নি। পার্বত্য মন্ত্রীর অনুরোধে এর আগে ২০১২-১৩ অর্থ বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে এলজিইডি লামা খালের উপর একটি গার্ডার সেতু করেন। লামা পৌর শহর থেকে রুপসিপাড়া পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার কার্পেটিং সড়ক, আরো কয়েক কিলোমিটার (মঞ্চপ্রুপাড়া) পর্যন্ত এইচবিবি রাস্তা, ধারক দেয়ালসহ কয়েকটি ব্রিজ-কালভার্ট করেন। লামা খালের উপর রুপসিপাড়া বাজার পয়েন্টে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আরেকটি গার্ডার সেতু করেন। এর ফলে রুপসিপাড়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি গ্রামগুলো আলীকদম উপজেলা সীমানার দু'দিকে সোনাইছড়ি ও থানচি সড়কের ২৬ কি: পয়েন্ট পর্যন্ত যোগাযোগে আধুনিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এত চমৎকার যোগাযোগ সড়কের মধ্যবর্তী স্থানে ইব্রাহীম লিডার ও অংহ্লাপাড়ার অংশে সাড়ে ৬ শ্ মিটার ইটের রাস্তাটি নির্মানের কিছুদিন পরই ভাঙ্গা শুরু হয়। বর্তমানে ভঙ্গুর অংশটি বিপদজনক হয়ে পড়েছে। চলাচলকারী যানবাহনগুলো প্রায়শই সেখানে দুর্ঘটার শিকার হন। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তার সামান্য অংশে জীবন ধুঁকি নিয়ে চলছে। রুপসিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাছিংপ্রু মার্মা জানান, "আমি বিগত ২০২০-২১ অর্থ বছরে সড়কের এই অংশটি কার্পেটিং এর জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বরাবর আবেদন করি। এ প্রেক্ষিতে তিঁনি এলজিইডি'র প্রধান প্রকৌশলীর কাছে ডিও লেটার দেন"। সড়কের ভঙ্গুর অংশটি কার্পেটিংয়ের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের আবেদনের পর বিগত ১৭-১১-২০২০ তারিখে প্রধান প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে পার্বত্য মন্ত্রী একটি ডিও লেটার দেন যে, "লামা উপজেলার পশ্চাৎপদ ০৬ নং রূপসীপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তার স্বব্যাখ্যাত আবেদনপত্রের মাধ্যমে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের অংহ্লাপাড়া লামা খালের উপর ব্রীজের উভয় পার্শের সংযোগ কার্পেটিংয়ের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে অনুরোধ জানিয়েছেন। উক্ত ব্রীজটি রূপসীপাড়া ইউনিয়নের সঙ্গে একমাত্র সংযোগ ব্রিজ হলেও তার দু'দিকে ইটের রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সাধারণ জনগণের ভোগান্তির অন্ত নেই। বর্ণিত অবস্থায়, যোগাযোগ ক্ষেত্রে অনগ্রসর পার্বত্য লামা উপজেলার ০৬ নং রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২০২০- ২০২১ অর্থ বছরে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের অংহ্লাপাড়া লামা খালের উপর ব্রীজের উভয় পার্শ্বের সংযোগ রাস্তা কার্পেটিংয়ের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আপনার নিকট অনুরোধ। জানাচ্ছি"। কিন্তু চার বছরেও মন্ত্রীর অনুরোধ বাস্তবায়ন করে নাই এলজিইডি'র সংশ্লিষ্টরা। এ ব্যপারে এলজিইডি লামা উপজেলা প্রকৌশল অফিস জানান, বিগত ২০২০-২১ অর্থ বছরে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশমতে কার্পেটিংয়ের ডিজাইন স্টেমেট দিয়েছি। এর পর থেকে প্রতি অর্থ বছরেই বরাদ্দের তালিকা প্রেরণ করে আসছি। এলজিইডির নীতিমালানুযায়ী সড়কের ওই অংশ মেইনটেনেন্স করার সময় হয়নি। কার্পেটিংয়ের ক্ষেত্রে নূন্যতম এক কিলোমিটারের নীচে প্রকল্প বরাদ্দ না নেয়ারও নীতিমালা রয়েছে। তার পরও চলতি অর্থ বছরে আশাকরি সংস্কার বা কার্পেটিং, কিছু একটা বরাদ্দ হতে পারে"। সূত্রে আরো জানাযায়, ২০১২-১৩ সালে সেতুটির মূল নকশা পরিবর্তন হওয়ায় দু'পাড়ের প্রায় সাড়ে ৬ শ্ মিটার সড়কে এইচবিবি করা হয়েছিল। নির্মাণের পর দু'পাড়ে ওই অংশটি মাটি ভরাট করে নতুন এপ্রোচ সড়ক তৎসময় কার্পেটিং উপযোগী ছিলোনা। নীতিমালার নির্লিপ্ততায় সাধারণ মানুষ আর কত বছর ভোগান্তি পোহাবে(!)। সড়কের ভাঙ্গা অংশটি কার্পেটিং নতুবা মেরামত করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় পাহাড়ি বাঙ্গালী জনগোষ্টির মানুষ।