ময়মনসিংহে সিরিজ বোমা হামলা মামলার আসামি আজিজুল হক গোলাপকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৪। দীর্ঘ ১৮ বছর আত্মগোপনে থাকা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবির ওই সদস্যকে ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার (৯ মে) বেলা ১১টায় নগরীর আকুয়া বাইপাস এলাকায় র্যাব-১৪ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১৪'র অধিনায়ক, অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান।
তিনি জানান, ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার পর থেকে দীর্ঘ ১৮ বছর যাবৎ পরিচয় গোপন করে দেশের বিভিন্নস্থানে পালিয়ে ছিল গোলাপ। গ্রেপ্তার এড়াতে মোবাইল ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলতো না সে। বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিল সে।
র্যাব জানায়, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট, জেলা আদালত, বিমানবন্দর, মার্কিন দূতাবাস, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেসক্লাব ও সরকারি-আধা সরকারি স্থাপনায় সিরিজ বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। ঘটনার দিন বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে দেশের ৬৩ জেলার প্রেসক্লাব, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় প্রায় ৫০০ বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। এ হামলায় নিহত হন দুইজন এবং আহত হয় দুই শতাধিকের বেশি মানুষ।
সারা দেশের মতো সেদিন ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া মোড়, গাঙ্গিনারপাড় সিটি প্রেস ক্লাবের নিচে, পাটগুদাম চায়না ব্রিজের মোড়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কোর্ট ভবন বার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
ময়মনসিংহে এই বোমা হামলার ঘটনায় সদীপ (৩৫), রফিকুল ইসলাম টুটুল (১৭) ও হাফিজুর রহমান (২৫) গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করে। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০০৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হওয়া আজিজুল হক গোলাপসহ আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১৪ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে জঙ্গি মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি আজিজুল হক গোলাপকে সোমবার রাতে ভালুকা বাজার থেকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে তাকে পাঠানো হয়েছে। গোলাপ ময়মনসিংহের গৌরীপুরের তাতিপায়া গ্রামের মৃত রুস্তম আলী মাস্টারের ছেলে।