মাসুদুল ইসলাম মাসুদ, ফটিকছড়ি প্রতিনিধি।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইসমাইল হোসেন। এই নিয়ে এটি তার হ্যাট্রিক জয়। গত ২ তারিখ বুধবার স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিম ও তার মধ্যে তুমুল হাড্ডাহাড্ডির লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই জয়লাভ করে পৌর পিতা নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে তিনি প্রথম বার চশমা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে জয় পেয়েছিলেন।
এই বার তিনি পেয়েছেন ১২ হাজার ৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোবাইল প্রতীক নিয়ে মিনহাজুল ইসলাম জসিম পেয়েছেন ৬ হাজার ৮ শত ৮৯ ভোট।
উক্ত তারিখে সন্ধ্যায় বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা কামরুল আলম। ইসমাইল হোসেন ২০১২ সালে ফটিকছড়ি পৌরসভার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়ে টানা জয় পেয়ে এইবার হ্যাট্রিক করেছেন।
এছাড়া নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ১ নং ওয়ার্ডে রফিকুল আলম, ২ নং ওয়ার্ডে রাকিব উদ্দীন, ৩ নং ওয়ার্ডে হেলাল উদ্দীন, ৪ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, ৫ নং ওয়ার্ডে জহিরুল ইসলাম বাবর, ৬ নং ওয়ার্ডে জসীম উদ্দীন, ৭ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ এহসান, ৮ নং ওয়ার্ডে গোলাপ মাওলা, ৯ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ হাসেম। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিল পদে ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড়ে সেলিনা আকতার, ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে রোকেয়া বেগম, ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে ফিরোজা বেগম নির্বাচিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, বুধবার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রথমবারের মত ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটাররা উৎসব মূখর পরিবেশে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে কোন রকম অপ্রীতিকর বা ঝামেলা ছাড়াই ফটিকছড়ি পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমবারের মত ইভি এম পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি ছিলনা। বয়োবৃদ্ধ থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মের ভোটার পর্যন্ত এতে অংশ নেন
। বেশকটি কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় প্রায় কেন্দ্রে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি। ইভি এম মেশিনে মহিলাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলাতে একটু কষ্ট হয়। যার কারণে প্রতিটি কেন্দ্রে মহিলা বুথের লাইন দীর্ঘ হতে দেখা যায়। এই ব্যাপারে কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ বয়স্ক মহিলাদের হাতের স্কিন সমস্যার কারণে ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলাতে একটু কষ্ট হচ্ছে। পরবর্তীতে তারা হাত ভালো করে পরিষ্কার করে আসার পর দেখা যাচ্ছে দ্রুত মিলে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে নেটওয়ার্ক বা সার্ভারের কারণে ইভিএম একটু ধীরগতিতে কাজ করেছে। এই ছাড়া তেমন কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। প্রতিটা কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে সার্বক্ষণিক ভাবে প্রতিটা কেন্দ্র পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কয়েক স্তরের প্রশাসনিক নিরাপত্তার মধ্যে নির্বাচন হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানী কে সারাদিন খুব ব্যস্ত দেখা যায়।
প্রতিটি কেন্দ্রে তিনি যথেষ্ট পরিমাণ প্রশাসনের লোকবল নিয়ে টহল দিতে দেখা যায় এবং নির্বাচনী এলাকার মধ্যে অনুমতি বিহীন যানচলাচলে তিনি কঠোর নজরদারি করেন। প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে আসে এবং ধৈর্য্য সহকারে লাইনে অপেক্ষা করতে থাকে। তারা প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তার কথা তুলে ধরে বলেন, প্রশাসন আজকে আমাদের একটি সুন্দর অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। জেলা ও উপজেলার অনেক উচ্চ পদস্থ নেতার উপস্থিতি ছিল চোখে পরার মত। এছাড়া দৈনিক বর্তমান কথার চট্টগ্রাম প্রধান গোলাম সরোয়ার সহ চট্টগ্রাম জেলা ভিত্তিক নামকরা সংবাদকর্মী এবং ফটিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার প্রতিনিধিরা নির্বাচন কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন।
সবার মাঝে একটি উৎসব মূখর পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। নির্বাচনে ধীরগতির ভোট গ্রহণ ছাড়া তেমন কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ধীর গতি নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন এটি একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। এটি অটোমেটিক পদ্ধতিতে কাজ করে এতে আমাদের কোনো অবহেলা বা হাত নেই। প্রয়জোনে আমরা দ্রুত গতিতে মেশিন পরিবর্তন করে ভোটাদের চাহিদা পূরণ করেছি। স্থানীয় নির্বাচন বিশ্লেষকেরা এই নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।