স্টাফ রিপোর্টার:
হাসপাতালের সেবা অনুযায়ী ক্যাটাগরি এবং রোগনির্ণয় পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসেছিলাম। তাদের বলেছি সেবার মানে উন্নয়ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা ক্যাটাগরি করে দেবো। সেবার মানকে উন্নত করে এ, বি ও সি ক্যাটাগরি করে দেবো। সার্বিক ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। জাহিদ মালেক বলেন, যে ক্যাটাগরিতে যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার উপযোগী সেই প্রতিষ্ঠান তার বাইরে সেবা দিতে পারবে না। অনেকে অপারেশন করেন, সিজার করেন। কিন্তু সিজার করার ব্যবস্থা হয়তো সেই ক্লিনিক বা হাসপাতালে নেই, তাদের অপারেশন বা সিজার করতে দেওয়া যাবে না। মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন হাসপাতালে যে রোগনির্ণয় পরীক্ষার ফি আছে সেটিকে আমরা নির্ধারণ করে দেওয়ার চেষ্টা করছি। কোনো কোনো জায়গায় দেখা যায় একটি বিশেষ পরীক্ষার জন্য ১০ হাজার টাকা অন্য জায়গায় আবার ৫০ হাজার টাকা। এই বিরাট বৈষম্য আমরা দূর করতে চাই। এটি হতে দেওয়া যাবে না। দরিদ্র জনগণ যাতে সঠিক চিকিৎসা পায়, তারা যেন কষ্ট না পায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। তাদের যাতে বাড়তি মূল্য না দিতে হয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যসেবার মানো উন্নয়নের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়া কমে আসবে। এখনও অনেকে বিদেশে চিকিৎসা নেয় এবং আমাদের কষ্টার্জিত যে বৈদেশিক মুদ্রা চলে যায় সেটি হয়তো কমবে। চিকিৎসার জন্য অনেক বৈদেশিক মুদ্রা বাইরে চলে যায়।
আমাদের দেশে চিকিৎসা ভালো থাকলে মানুষ বাইরে যাবে না। তাহলে সেই টাকা দেশেই থাকবে। কবে নাগাদ হাসপাতালের ক্যাটাগরি ও পরীক্ষার-নিরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে এটি আমরা করতে পারবো। সব হাসাপাতাল তো একই মানের নয়। সুতরাং একরকম তো হবে না। সেই অনুযায়ী চার্জ নির্ধারণ হবে। করোনার জন্য অনেক কিছু করতে পারিনি, গোটা বিশ্বই এগোতে পারেনি। আগামীতে যাতে দ্রæত করতে পারি সেদিকে নজর রাখছি। এ বছরই এটি (হাসপাতালের ক্যাটাগরি) হবে। আমরা প্রাথমিক তালিকা করে রেখেছি। সবকিছুর ধারণা রেখেছি, আশা করি দ্রæতই এটি হয়ে যাবে। এদিকে দেশের প্রাইমারি হেলথকেয়ারগুলোতে (প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র) যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, করোনায় প্রায় তিন বছর কাটিয়েছি, এ সময় করোনা মোকাবিলায় কাজ করতে হয়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো করেছি। এখন পর্যন্ত ৩১ কোটি ভ্যাকসিন আমরা দিয়েছি। সোয়া কোটি ভ্যাকসিন গত চারদিনে দিয়েছি। আগামী তিনদিনে দেড় কোটি দিতে পারবো।
আশা করি কোনো ভ্যাকসিন মেয়াদোত্তীর্ণ হবে না। তিনি বলেন, সেবার মানোন্নয়নে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রাইমারি হেলথকেয়ার ভালো করছে, স্বাস্থ্যসেবা আরও ভালো হবে। যত্রতত্র প্রাইমারি হেলথকেয়ারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না। প্রাইমারি যে মেডিসিন লাগে, সেগুলো নির্ধারণ করে দিচ্ছি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক গ্রাম্য ডাক্তার আছেন, তাদের সার্টিফিকেট নেই। তারা অ্যান্টিবায়োটিকসহ অনেক ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। অনেক ডায়াগনস্টিক হয়েছে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে, সে বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। গ্রামে যারা চিকিৎসা দেয় তাদের সেই লেখাপড়া না থাকলে তাদের কোনোভাবেই চিকিৎসা দিতে দেবো না।