স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুর রশিদের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, তিনি এখন প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তার নিয়োগ-বাণিজ্য, বদলি-বাণিজ্য এবং ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতির সাম্রাজ্য গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে। এ ধরনের কর্মকর্তার পদোন্নতি হলে এলজিইডির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মো. আবদুর রশিদ এলজিইডিতে তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঠিকাদারি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করেন এবং প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে বড় অংশ হাতিয়ে নেন। তিনি প্রকল্প পরিচালক, নির্বাহী প্রকৌশলী এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বদলি-বাণিজ্য ও নিয়োগ-বাণিজ্যের মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কিত হয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, নিজের প্রভাব খাটিয়ে আত্মীয়স্বজনের নামে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন রশিদ। ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স অ্যাপার্টমেন্ট, রাজশাহী ও ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, সিরাজগঞ্জে জমি এবং অন্যান্য সম্পত্তি তার দুর্নীতির অন্যতম প্রমাণ।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রশিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করলেও তার সহযোগিতা পাওয়ায় চরম অভাব দেখা দিয়েছে। তাকে চারবার তলব করা হলেও তিনি দুদকে হাজির হননি। এমনকি, গোপন অনুসন্ধানের প্রমাণ থাকার পরও দুদককে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন এবং পদোন্নতির পথ পরিষ্কার করেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা প্রধান প্রকৌশলীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে গেলে পুরো দপ্তরের কার্যক্রমে অস্থিরতা দেখা দেবে। এলজিইডির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপর আস্থা কমে যাবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কেউ যদি পদোন্নতি পেয়ে প্রধান প্রকৌশলী হন, তবে সেটা দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করার শামিল হবে।"
এলজিইডি সূত্র জানায়, আবদুর রশিদের প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার প্রচেষ্টা শুধু প্রতিষ্ঠানের সুনামই ধ্বংস করবে না, বরং সরকারি প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নেও বাধা সৃষ্টি করবে।
রশিদের এমন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।