মো:বদরুল আলম সুমন, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার করিমপুর গ্রামে সোমবার বিকালে নাইট্রেট ও নাইট্রাইট বিষক্রিয়ায় ৬ লাখ টাকা মুল্যের তিনটি গাভির গরুর মৃত্যু হয়েছে। গরু তিনটির মৃত্যুতে হতদরিদ্র ওই কৃষক পরিবার পথে বসেছেন।
এ ঘটনায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডাঃ মনোজিৎ কুমার মন্ডল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
গ্রামবাসি জানায়, কৃষক রুবেল মুন্সির তিনটি গরুই ছিল শেষ সম্বল। সোমবার বিকালে রুবেল গরু তিনটি মাঠে বেঁধে রেখে আসে। মাঠে নতুন গজানো ডাটা শাকের কচি পাতা খেয়ে গরু তিনটি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। গরু হারিয়ে রুবেলের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন পাগল প্রায়। রুবেল মুন্সি জানান, তিনি করিমপুর গ্রামের জনৈক মতিয়ার রহমানের বাড়ির দেখাশোনা করেন। ওই বাড়িতেই তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। রুবেল মুন্সীর ভাষ্যমতে, মাঠ থেকে ডাটার শাক খাওয়ানোর ফলে গরু তিনটি মারা গেছে বলে মনে করেন। গ্রামবাসি লিটন জানান, রুবেল মুন্সি খবুই দরদ্রি মানুষ। তিল তিল করে গরু তিনটি পালন করছিলেন। একসঙ্গে তিনটি গাভীর মৃত্যুতে তিনি পথে বসেছেন।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার ডা. মনোজিৎ কুমার মন্ডল জানান, মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। গরু তিনটির দাম প্রায় ছয় লাখ টাকা। প্রত্যেকটি গরুর পেটে ৬ থেকে ৯ মাসের বাচ্চা রয়েছে। বৃষ্টির পানি পেয়ে ডাটা শাকের যে কচি পাতা হয়েছে তা খাওয়ানোর ফলে নাইট্রেট ও নাইট্রাইট বিষক্রিয়ার গরু মারা গেছে। তিনি আরো জানান, নাইট্রেট ও নাইট্রাইট যুক্ত খাবারে যখন নাইট্রোজেনের পরিমাণ বেশি থাকে তখন তা পশুর শরীরে এক ধরণের বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। এ বিষক্রিয়াকে নাইট্রেট ও নাইট্রাইট বিষক্রিয়া বলে থাকি। এই বিষক্রিয়া টি সাধারণত নাইট্রেট যুক্ত খাবার খেয়ে বেশি হয়ে থাকে। সাধারণত বৃষ্টির পরে গজানো কচি ঘাসের মধ্যে নাইট্রোজেনের পরিমান বেশি থাকে। তখন বৃষ্টির পানিতে মিশ্রিত এসিডের সাথে কচি ঘাসের নাইট্রোজেন রাসায়নিক ভাবে নাইট্রেট ও নাইট্রাইট বিষক্রিয়া উৎপাদন করে এবং গরু সবুজ কচি ঘাসের সাথে এ বিষ গ্রহণ করে।