খাগড়াছড়ির মহালছড়ি থানায় একজন অভিযোগকারী এসে অভিযোগ করেন যে গত ১৫ বছর পূর্বে তাহারা বিয়ে করেছে, কিন্তু বিয়ের পর এখনো কোন সন্তান না হওয়ায় বাদী ও বাদীর স্ত্রী উভয় স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কবিরাজি চিকিৎসা এবং আধুনিক চিকিৎসা করেন। এই বিষয়টি বাদীর এলাকার অনেক লোকজন জানে। গত ০৯/০৩/২০২৪ইং তারিখ সকাল অনুমান ০৮.০০ ঘটিকার সময় একজন অজ্ঞাতনামা লোক বাদীর বাড়ীতে এসে বাদীকে ডেকে জিজ্ঞাসা করে যে, তোমাদের নাকি সন্তানাদি হয় না, আমি এই বিষয়ে চিকিৎসা করতে পারি। একথা শুনে বাদী আবেগে এবং সরল বিশ্বাসে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তির কথায় বিশ্বাস করে। এর চিকিৎসার জন্য কি কি করিতে হবে বলিলে উক্তব্যাক্তি বাদীকে সহ মহালছড়ি বাজারে আসে। বাজার থেকে চিনি, পাউডার দুধ, আধা বিড়া পান ও ছোট এক বোতল সরিষার তৈল কিনে বাদীর বাড়ীতে চলে যান। অতঃপর গত ০৯/০৩/২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ১০.০০ ঘটিকায় উক্ত অজ্ঞাতনামা বাদীর বসত ঘরের ভিতর মেলামাইন এর দুটি গ্লাসের ভিতরে পানির সাথে দুধ, চিনি, মিশ্রণ করে বিবাদীর বুক পকেট থেকে ০১টি শিশির মধ্যে হতে দুটি গ্লাসের মধ্যে কি যেন ঔষধ মিশিয়ে বাদীকে ও বাদীর স্ত্রীকে পান করায়। পরবর্তীতে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিটি বাদী ও বাদীর স্ত্রী দুই জনকে খাটের উপর চিত হয়ে শুইতে বলে এবং হাতে পান ও সাদা সুতা দিয়ে নাভির উপর ঘষতে বলে। অজ্ঞাতনামা বলে আমি মেঝেতে বসে তোদের উপর মন্ত্র পড়িব এবং একটার পর একটা পান পরিবর্তন করে তোরা ঘষতে থাকবি। দুটি পান ঘষার পরে অনুমান ১০/১৫ মিনিট পর বাদী ও বাদীর স্ত্রী অচেতন হয়ে পড়ে। পরের দিন অর্থাৎ ১০/০৩/২০২৪ইং তারিখ সকাল ০৭.০০ ঘটিকার সময় পাশের ঘর থেকে বাদীর মা বাবা বাদীকে ডাকাডাকি করিয়া না পাইয়া ঘরের ভিতরে বাদী ও বাদীর স্ত্রী অচেতন অবস্থায় পেয়ে চিল্লাচিল্লি করে। আশপাশ হইতে লোকজন আসিয়া বাদীদ্বয়কে সিএনজি যোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মহালছড়ি, খাগড়াছড়িতে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। পরবর্তী তে ১১/০৩/২০২৪ইং তারিখ বিকাল অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় লোকজনের মাধ্যমে চিকিৎসা শেষে বাড়ীতে পৌছিয়া দেখে বাদীর ঘরে কাঠের আলমারিতে রক্ষিত ২,৫০,০০০/-(দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ও বাদীর স্ত্রীর কানের থাকা দুটি স্বর্ণের দুল ও একটি মোবাইল ফোন নাই। উক্ত অভিযোগের বিষয়টি মহালছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) কে জানাইলে, পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে খাগড়াছাড়ি জেলার সকল থানায় উক্ত প্রতারকে ধরার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা ও নজরদারিসহ সু-কৌশলি অভিযান পরিচালনা শুরু হয় এবং আশেপাশে বিভিন্ন জেলা থেকে খোঁজ নিয়ে, অনলাইনে এমন কোন ঘটনা সমসাময়িক সময়ে ঘটেছে কিনা মনিটরিং করে সকল তথ্য উৎপাত্ত বিশ্লেষন করা কালে গোয়েন্দা সুত্রে জানা যায় যে এমন একটি প্রতারক চক্র প্রতারনা করার জন্য মাটিরাঙ্গা থানায় অবস্থান করছে। অতঃপর উক্ত তথ্য পর্যালোচনা পুর্বক খাগড়াছড়ি জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) বিচক্ষন দিক-নির্দেশনায় খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের একটি চৌকস দল উক্ত প্রতারককে এমন প্রতারনার প্রস্তুতিকালে মাটিরাঙ্গা থানাধীন ব্যাঙমারা এলাকা থেকে আসামী সাধু চৌধুরী (৩৬), পিতা-মহি উদ্দিন চৌধুরী, মাতা-মৃত রানী বেগম, সাং-হাড়িখোলা থানগাঁও, থানা-চাঁন্দিনা, জেলা-কুমিল্লাকে গ্রেফতার করা করে এবং বিধি মোতাবেক মামলা রজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।