জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকালে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে সারা দেশের ন্যায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২৪’। এ উপলক্ষে খাগড়াছড়ি জেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এসব কর্মসূচির মধ্যে ছিল পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গকে সম্মাননা স্মারক প্রদান ইত্যাদি। কেন্দ্রীয়ভাবে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পুলিশ লাইনস্-এ দিবসটি পালন করা হয়।
শনিবার (০৯ মার্চ) সকালে খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন্সে পুলিশ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার)। পরে একটি চৌকস পুলিশ দল সশস্ত্র সালাম প্রদান করেন। এ সময় বিউগল করুণ সুর বাজানো হয়। পরবর্তীতে খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইনস ড্রিলসেড এ আলোচনা সভা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের গ্রেফতারসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান ও জনগণের জানমাল রক্ষাকালে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী ০৯ পুলিশ সদস্যের পরিবারের হাতে সম্মাননা ও ফুল দিয়ে বরণ করেন। এবং খাগড়াছড়ি জেলার আত্মোৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গের নিকট উপহার সামগ্রী হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার।
পুলিশ লাইন্স ড্রিলসেড এ আলোচনা সভার শুরুতে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী শহীদ পুলিশ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এসময় পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার) বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ শতবর্ষের পুরানো একটা প্রতিষ্ঠান। দেশের সেবায়, মানুষের সেবায়, সরকারের নির্দেশনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সবসময় পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। এদেশের মানুষকে নিরাপদে রাখার জন্য প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের প্রতিটি সদস্য তাদের নিজে দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠা ও পেশাদারীত্বের সাথে পালন করছে। আর এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের অসংখ্য পুলিশ সদস্যকে আমরা হারিয়েছি।
জেলার পুলিশ সুপার বলেন, অন্য সংস্থার সদস্যরা কাজে যান, আবার সন্ধ্যায় ফিরে আসেন। কিন্তু পুলিশের কোন কর্ম ঘন্টা নেই, তারা ফিরে আসবে কিনা সে নিশ্চয়তা নেই। তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের উজ্জীবিত করে। পেশাগত দায়িত্ব পালনে আরো শানিত করে। এ সময় তিনি জীবন উৎসর্গকারী এসব পুলিশ সদস্যের পরিবারে যেকোন প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বস্থ করেন। পরবর্তীতে তিনি এসব পরিবারের স্ত্রী, সন্তান ও পিতা-মাতার খোঁজ খবর নেন।
এ সময় উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত আত্মোৎসর্গকারী ০৯ পুলিশ পরিবারের সদস্যরা তাদের অভিব্যাক্তি প্রকাশকালে আবেগে আব্লুত হয়ে মাননীয় আইজিপি মহোদয়কে আর্থিক অনুদান, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেটর জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন এবং খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার জনাব মুক্তা ধর পিপিএম (বার) মহোদয় কে অসংখ্য ধন্যবাদ জানান তাদেরকে সম্মানিত করার জন্য এবং সবসময় পাশে থেকে তাদের সুযোগ সুবিধা দেখার জন্য।
উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জনাব পরিতোষ ঘোষ (এনডিসি), কমান্ড্যান্ট (ডিআইজি), এপিবিএন এবং বিশেষায়িত ট্রেনিং সেন্টার, খাগড়াছড়ি। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার জনাব মুক্তা ধর পিপিএম (বার) মহোদয় । উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জনাব খন্দকার ফরিদুল ইসলাম, অধিনায়ক (এডিশনাল ডিআইজি), ৭ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, অস্থায়ী হেডকোয়ার্টার, জনাব মোঃ সাজিদ হোসেন, অধিনায়ক (এডিশনাল ডিআইজি), ৬ এপিবিএন, মহালছড়ি, এবং খাগড়াছড়ি, জনাব মিলু মিয়া বিশ্বাস, কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার, ৬ এপিবিএন, মহালছড়ি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড আপস) জনাব মোঃ জসীম উদ্দিন পিপিএম, খাগড়াছড়ি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ তফিকুল আলম, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ তানভীর হোসেন সহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যগণদের পরিবারবর্গ।